পরনে সাদা পাঞ্জাবী। হাতে ধরা সিগারেট। চোখ রেখেছেন ক্যামেরায়। হুবহু যেন মাণিকবাবু! চুলের স্টাইলেও যেন একচুল হেরফের নেই। এক নজরে সত্যজিৎ-রূপী জিতু কমলকে (Jeetu Kamal) দেখে চেনা দায়। 'অপরাজিত' সিনেমার জন্যই জিতুর এমন লুক। যে কিনা বর্তমানে সাড়া ফেলে দিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিতে। নেপথ্যে পরিচালক অনীক দত্ত (Anik Dutta)।
সত্যজিৎ রায় পরিচালিত 'পথের পাঁচালী' ছবির প্রেক্ষাপটেই 'অপরাজিত' (Aparajita) তৈরি করছেন অনীক। সেই সিনেমার 'নায়কবদলের' খবর দিন কয়েক আগেই প্রকাশ্যে এসেছে। আগে অবশ্য সেই চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল আবীর চট্টোপাধ্যায়ের (Abir Chatterjee)। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত বদলায়। 'ব্যোমকেশ' অভিনেতার ডেট পেতে সমস্যা হচ্ছিল। তবে ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে অবশ্য কানাঘুষো অন্য কথাই শোনা গিয়েছে। শেষমেশ ছবিটা ছাড়তে বাধ্য হন আবীর। আর সেই মাণিকবাবুর জুতোতে পা গলানোর প্রস্তাব যায় টেলিপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিতু কমলের কাছে। জিতুর জন্য যে এটা নিঃসন্দেহে বড় ব্রেক, তা বোধহয় আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না।
ওদিকে, সত্যজিৎ রায়ের চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েই আদা-জল খেয়ে প্রস্তুতিতে নেমে পড়েন অভিনেতা। সত্যজিৎ রায়ের লেখা বই পড়েছেন, সিনেমা দেখেছেন। তাঁকে আরও কাছ থেকে চেনার চেষ্টা করেছেন। আগেও অবশ্য সেসব বই-সিনেমা সব ঘেঁটে ফেলেছেন, তবে এবার দৃষ্টিভঙ্গী খানিক আলাদা। আত্মস্থ করতে হত মাণিকবাবুর চলন-বলনের ধরণ। যে হোমওয়ার্ক রীতিমতো রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে জিতুর। তবে সেই পরিশ্রম বিফলে যায়নি। কারণ, পরিচালক অনীকই সেই মার্কশিটে একশোয় একশো বসিয়েছেন।
<আরও পড়ুন: ‘KBC-র শুটে ৪ ঘণ্টা দেরিতে এসেছো’, কপিলকে ভর্ৎসনা অমিতাভের!>
অনীক বলছেন, "জিতুর চোখের চাহনি, সিগারেট ধরার কায়দা, এমনকী সেটে মাণিকবাবুর কাঁধে রাখা যে রুমাল তিনি চিবোতেন, সেটাও দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন ও। অভিনেতা হিসেবে বড়পর্দায় দর্শকরা ওঁকে নতুন করে আবিষ্কার করবে।" আর জিতু কমলকে সত্যজিতের লুক দেওয়ার নেপথ্যে যে মানুষটি তিনি সোমনাথ কুণ্ডু। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মেকআপ আর্টিস্ট।
গত মাসেই শুট শুরু হয়েছে। লোকেশন বীরভূম, বোলপুর। পরের ভাগে নন্দন, শিশির মঞ্চ থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন অংশে শুট হবে। আসলে পুরো শহরটাকেই তো নিজের ফ্রেমে আলাদা মাত্রা দিয়েছিলেন মাণিকবাবু। অনীকের সুবাদে এবার সেই ফ্রেমও জীবন্ত হয়ে উঠবে আরও একবার। তবে সত্যজিৎ রায়ের ভূমিকায় জিতুকে বাজি রেখে যে অনীক ভুল করেননি, তেমনটা কিন্তু প্রথম ঝলকেই বলা যায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন