Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

'উত্তম কুমার ক্যামেরার পেছনে কেমন ছিলেন, বেশি কেউ জানেন না'

অনেক কিছু আমার শাশুড়ির কাছ থেকে জেনেছি। কারণ সাবু পিসি (সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়), বেণু আন্টি (সুপ্রিয়া দেবী) আমার শাশুড়ি, উত্তম কুমার - ওঁদের একটা আড্ডার দল ছিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
jisshu sengupta

টলিউডে এখন প্রথম সারির অভিনেতাদের মধ্যে ধরা হয় তাঁকে। সাগরপার থেকে কলকাতা, এমনকী দক্ষিণেও কাজ করছেন তিনি। শিগগিরই মুক্তি পাচ্ছে তাঁর পরবর্তী ছবি 'মহালয়া'। সে প্রসঙ্গেই উৎসবে যিশু সেনগুপ্তর মুখোমুখি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা।

Advertisment

কতটা ব্যস্ত এখন?

একটু ব্যস্ত। বম্বে-কলকাতা করছি। একটা কাজের কথা চলছে ওখানে। বাংলা ছবিরও দুটো কথা চলছে, তো দেখা যাক।

এতদিন উত্তমকুমারের অভিনীত চরিত্রে অভিনয় করেছেন, এবার তো সোজাসুজি উত্তম কুমার...

(হেসে) চিত্রনাট্যটা অনেকদিন আগে আসে। প্রথমে অন্য প্রযোজনা সংস্থার ছবিটা করার কথা ছিল। বুম্বাদা গল্পটা সম্পর্কে জানত, পরে এনআইডিয়াজ প্রযোজনা করল। 'মহালয়া' আসলে ব্যবসা করার জন্য তৈরি করা হয়নি, যদিও ব্যবসা তো একটা অংশ, নিঃসন্দেহে। এটা ইতিহাস, সেটাকেই ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। আমার কাছে ছবিটা ডকু-ফিচার।

শোনা যায়, পরিচালক প্রথম থেকেই উত্তম কুমারের ভূমিকায় আপনাকেই ভেবেছিলেন।

কেন ভেবেছেন? জানি না, তবে ভেবে ফেলেইছেন যখন, করেই ফেললাম (হাসি)। আর তখন চুলটা আমার বড় ছিল, ১৯৭৬ এর গল্প 'মহালয়া', তখন ওঁর চুলটাও এরকমই ছিল খানিকটা। তার বছর চারেক পরে উনি মারা যান।

jisshu sengupta 'মহালয়া' ছবিতে উত্তম কুমারের ভূমিকায় যিশু। ছবি: এনআইডিয়াজ

আপনার কাছে মহালয়া কী?

আমার কাছে তো মা-বাবার স্মৃতি। ঘুম থেকে তুলে দিত। প্রত্যেক বাঙালির জীবনের অঙ্গ। এই ছবিটা সত্যি কোনও কাহিনি নয়। এই ঘটনাটা আশি শতাংশ বাঙালি জানেন না। ওই সময়ের মানুষ ছাড়া। আর 'মহালয়া' তৈরি না হলে গল্পটা তাঁদের সঙ্গেই চলে যেত।

আপনি তো পিরিয়ড ছবির মধ্যেই রয়েছেন?

ব্যোমকেশ তো আর করি না গত দুবছর ধরে। মাঝখানে মহেশ মাঞ্জরেকরের ছবি করলাম, অপর্ণা সেন ও মৈনাকের ছবি করলাম। সুজয় ঘোষের সঙ্গে একটা ওয়েব সিরিজ হল। সবগুলোই তো সমসাময়িক। আসলে পরপর 'এক যে ছিল রাজা', 'মর্ণিকর্নিকা', এনটিআরের বায়োপিক মুক্তি পেয়ে গেছে। তার মাঝেও কিন্তু 'মুখোমুখি' করেছি।

'এক যে ছিল রাজা' আর 'মর্ণিকর্নিকা' তো একসঙ্গেই শুটিং করেছেন...

আরে! ওই আড়াই মাস তো আমি পাগল হয়ে গিয়েছিলাম প্রায়। দুজন রাজা - একজন তো ১৮ কিলো জামাকাপড় পরেন, আর একজন কিছুই পরেন না। পিরিয়ড ছবি করলেও নানা ধরনের চরিত্র করেছি।

প্রথম তেলুগু ছবির অভিজ্ঞতা কেমন?

এল ভি প্রসাদের চরিত্র, ভীষণ ছোট একটা পার্ট ছিল। কিন্তু যেভাবে তাঁরা আমার যত্ন নিয়েছেন, সেটা অনবদ্য। তখন সদ্য দুটো অপারেশন করে বাড়ি ফেরার দুদিন পরেই ওখানে গিয়েছি। তখনও সেলাই ছিল। সবার সঙ্গে কৃষ ('মর্ণিকর্নিকা' ও 'এনটিআর'-এর পরিচালক) আলাপ করিয়ে দিচ্ছেন, 'ও বাংলার সুপারস্টার। বালাকৃষ্ণ স্যারের ছবি এখানে রিমেক হয়।' এই সম্মানটা আমার প্রাপ্তি।

publive-image যিশু সেনগুপ্ত। ছবি: এনআইডিয়াজ

নেটফ্লিক্স পর্যন্ত পৌঁছে গেলে?

আগেই যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হয় নি (হাসি)।

উত্তম কুমারের চরিত্রে পর্দায় আসতে হবে, ভয় করেছিল?

চরিত্রটা নেওয়ার সময় ভয় লাগে নি। আসলে উনি ক্যামেরার পেছনে কেমন ছিলেন, গুটিকয়েক মানুষ ছাড়া কেউ জানেন না। তাঁদের মধ্যে আমার শাশুড়ি (অঞ্জনা ভৌমিক) একজন। অনেক কিছু শাশুড়ির কাছ থেকে জেনেছি। কারণ সাবু পিসি সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়), বেণু আন্টি (সুপ্রিয়া দেবী) আমার শাশুড়ি, উত্তম কুমার - ওঁদের একটা আড্ডার দল ছিল। ভীষণ খেতে ভালবাসতেন উত্তম কুমার।

কিন্তু দর্শক তো উত্তম কুমারের সঙ্গে তুলনা টানবেনই...

আমার কিছু করার নেই তাতে। কী করব? ওঁর কিছু ম্যানারিজম রপ্ত করার চেষ্টা করেছি। সেটা ছাড়া আর বেশি কিছু করি নি আমি। এবার মানুষ যদি বলেন, না উত্তমবাবু এরকম করে হাঁটতেন। তাহলে হাঁটতেন। ওঁর পর্দায় হাঁটা আর এমনি হাঁটা কিন্তু আলাদা ছিল। যতটুকু আমি শুনেছি। নিজের পুরোটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

publive-image 'মহালয়া' ছবিতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ভূমিকায় শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। ছবি: এনআইডিয়াজ

পর্দার বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সঙ্গে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা কেমন?

ওয়ান অফ দ্য ফাইনেস্ট অ্যাক্টরস! ওঁকে বাংলা সিনেমা ব্যবহারই করল না। কমেডিয়ান করে রেখে দেওয়া হয়েছে, সুযোগ পান নি। ৩০-৪০ বছরের কেরিয়ারে তিনটে-চারটে ছবি বলতে পারছি, এটা আমাদের ক্ষতি, ওঁর কিছু না।

মোটামুটি তো সবার সঙ্গে কাজ করে নিয়েছ?

না না, বাংলায় অরিন্দম শীল আর কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে।

'মর্ণিকর্নিকা'-র সাফল্যের পর কোনও অফার এল?

সেভাবে এখনও না। মানুষ চিনতে পারছেন। আর গিয়ে বলতে হচ্ছে না, আমি এটা করেছিলাম। এটা পজিটিভ।

'মর্ণিকর্নিকা' নিয়ে তো এত বিতর্ক হয়েছে...

এখনও চলছে। এই যে একটা সোশাল মিডিয়া আমাদের আছে সেখানে প্রত্যেকে আইনস্টাইন, গ্যালিলিও। সেই কারণে আমি সোশাল মিডিয়ায় নেই। দিনের শেষে এটা থেকে দূরে থাকলেই শান্তিতে থাকা যায়।

tollywood prosenjit chatterjee jisshu sengupta
Advertisment