Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

'৮৩' অ্যান্ড নট আউট! পর্দায় বিশ্বজয়ের স্মৃতি উস্কে ক্যাপ্টেন-ইনিংস রণবীরের

83 Film Review: প্রেক্ষাগৃহে যাওয়ার আগে চোখ বুলিয়ে নিন।

author-image
Sandipta Bhanja
New Update
83 Film review, 83 Film, Kapil Dev, Ranveer Singh, Kabir Khan, Deepika Padukone, ৮৩ ফিল্ম রিভিউ, কপিল দেব, রণবীর সিং, কপিলের ভূমিকায় রণবীর, দীপিকা পাড়ুকোন, bollywood film review, bengali news today

৮৩, রণবীর সিং

সালটা ৮৩। লর্ডসের মাঠে ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ। গোটা দেশে টিভির পর্দা থেকে সীমান্তপ্রান্তের বেতারে নজরে টিম ইন্ডিয়া। প্রথমবার বিশ্বকাপ হাতে ভারত। সেই ইতিহাস গড়ার নেপথ্যের কাহিনিই এবার পরিচালক কবীর খানের ফ্রেমে পর্দায়। কপিল-ভূমিকায় রণবীর সিং। কেমন হল '৮৩' (83 Film review)? লিখছেন সন্দীপ্তা ভঞ্জ

Advertisment

আজ যে দেশে ময়দানের বাইশ গজ মন্দির আর ব্যাট-বলধারীরা পূজারী, সেই দেশে আশির দশকের আগে কিন্তু এমনটা ছিল না। শূন্য থেকে উত্তরণের লড়াইটা লড়েছিলেন কপিল দেব। ভারতীয় ক্রিকেট দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের মন্ত্র পুঁতে দিয়েছিলেন হরিয়ানার 'কুক্কু'। না পেরে ওঠার গল্পকে সম্ভব করেছিলেন পেরে উঠতে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে ভারতকে নিচু করে লেখা প্রত্যেকটা প্রতিবেদনের বদলা নিয়েছিলেন ব্যাটের মারপ্যাঁচে। লর্ডসের মাঠে যেখানে টিম ইন্ডিয়ার প্রবেশাধিকারই ছিল না সেখানে জয়ের নিশান উড়িয়েছিলেন। টিম মেম্বারদের ভগ্ন আত্মবিশ্বাস, ভয়কে পুঁজি করেই হুংকার ছুঁড়েছিলেন দু'বার বিশ্বকাপ জেতা টিম ওয়েস্ট-ইন্ডিজকে। বিফলে যাননি কপিল পা'জি। কীভাবে? ক্রিকেটের ময়দানে দাঁতে দাঁত চেপে সেই লড়াইয়ের কাহিনি বলে '৮৩'।

সিনেমার প্রথমার্ধ খানিক ধীর লয়ে চললেও বেজায় স্মার্টনেসের সঙ্গে প্রত্যেকটা চরিত্রকে পরিচয় করিয়েছেন কবীর খান (Kabir Khan)। প্রথমবার বিদেশের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে পাসপোর্টে স্ট্যাম্প পড়ার দৃশ্য সেই প্রেক্ষিতেই বিশেষভাবে উল্লেখ্য। বেশ কিছু সংলাপেই পরিচালক বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, বাইশ গজে সফল হওয়ার পাশাপাশি এই লড়াই ছিল প্রেস্টিজের। বিদেশের মাটিতে যেখানে প্রতি পদে-পদে ভারতকে হেয় করা হত, সেই সবকটা অপমানের জবাব দেওয়ার লড়াই। রেফারেন্স হিসেবে সিনেম্যাটিক দৃশ্যায়ণের পাশাপাশি ৮৩'র ম্যাচের সাদাকালো ছবিও ব্যবহার করেছেন পরিচালক। সীমান্তে দাঁড়িয়ে থাকা উর্দিধারীদের সঙ্গে দেশের জার্সি পরে ময়দানে নেমে যুদ্ধের যে কোনও তফাৎ নেই, কবীর খুব নিপুণভাবে সেই দৃশ্য বুনেছেন। আবেগ, সংলাপের মধ্য দিয়ে।

publive-image

কপিলের ভূমিকায় রণবীর সিংয়ের (Ranveer Singh) লুক প্রশংসার দাবীদার। রণবীর আগাগোড়াই Director's Actor, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তুখড় অভিনয় দক্ষতায় এর আগেও দর্শকের মন জয় করেছেন তিনি। তবে, ৮৩ ছবিতে অভিনেতার সংলাপ বলার ধরণে খানিক বাধো বাধো ঠেকলো। সম্ভবত, লুক সেটের জন্য অতিরিক্ত দাঁতের জন্যই এই সমস্যা। তবে যতটা সম্ভব, 'হরিয়ানা হ্যারিকেন'-এর তেজ ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন রণবীর সিং। তবে স্ক্রিনে দীপিকা পাড়ুকোনকে (Deepika Padukone) রোমি ভাটিয়া হিসেবে পরিচয় করানোর ক্ষেত্রে পরিচালক আরেকটু জোর দিতেই পারতেন।

দেশ স্বাধীন হওয়ার তিন দশক পরও ইউরোপীয় দেশগুলিতে ব্রিটিশ মালিকদের অধীনে কাজ করা ভারতীয় কর্মীরা হাড়ে হাড়ে অপমান টেন পেতেন, তাঁদের কাছে কপিলের অধীনে বাইশ গজের রণে জিতের স্বাদ মুক্তির আস্বাদের থেকে কিছু কম ছিল না, কবীর-রণবীর জুটি আবেগের সাথেই সেই দৃশ্য তুলে ধরেছেন পর্দায়।

publive-image

উল্লেখ্য, কবীর কিন্তু ৮৩ ছবির মধ্য দিয়ে হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের বার্তাও দিয়েছেন। এক গঞ্জে দাঙ্গার প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করে গল্পে পরক্ষণেই সেখানে দুই ধর্মের মানুষদের এক খাটিয়ায় বসে ক্রিকেট ম্যাচ উপভোগ করার দৃশ্য তুলে ধরেছেন। ইন্ডিয়া-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই ভারতে বাস করা মুসলিমদের প্রতি অনেকের বাঁকা নজর থাকে, কবীর কোথাও গিয়ে সেই ধারণাকেই মুছে দিতে চেয়েছেন তাঁর ছবির মধ্য দিয়ে। পরিচালক দেখিয়েছেন, জাত-পাত-ধর্ম-পেশা ভুলে সব ভাষাভাষীর মানুষ কীভাবে একসঙ্গে বসে দেশের ক্রিকেট টিমের হয়ে গলা ফাটাচ্ছেন। আবার পাকিস্তানের গোলাগুলির চোটে ভারতীয় জওয়ানদের যেখানে শান্তিতে ম্যাচের স্কোর শোনার জো ছিল না, ভারতীয় দল সেখানে বিশ্বকাপ ফাইনালে যাওয়ায় সীমান্তের ওপ্রান্ত থেকে একটা 'বন্ধুত্বসুলভ' দূরভাষই মুহূর্তের মধ্যে সব বিভেদ দূর করে দিল। এমন দৃশ্যায়ণের জন্য পরিচালককে বাহবা দিতেই হয়।

বেশ কিছু দৃশ্যে দর্শকদের জন্য চমকও রেখেছেন কবীর খান। যেমন- দর্শকাসনে বসে কিংবদন্তী কপিল দেবের ক্যাচ ধরা, ৮৩'র ম্যাচ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছোট্ট শচীনের ক্রিকেটার হওয়ার শখ হওয়া, রূদ্ধশ্বাস ম্যাচের দিন কলকাতার স্টেশনে ট্রেন দাঁড় করিয়ে ম্যাচ উপভোগ করা… এহেন একাধিক চমক রয়েছে। তবে ম্যাচের সিকোয়েন্সগুলো আরেকটু উত্তেজক হতে পারত। আর যে মানুষটির কথা না বললেই নয়, তিনি পিআর মান সিং। তৎকালীন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিমের ম্যানেজার, যে ভূমিকায় দুর্ধর্ষ পঙ্কজ ত্রিপাঠী। রণবীর যদি ৮৩'র 'যোদ্ধা অর্জুন' হন, তাহলে মান সিং ওরফে পঙ্কজ ত্রিপাঠিকে (Pankaj Tripathi) 'সারথী কৃষ্ণ'র তকমা দেওয়া বিন্দুমাত্র অত্যুক্তি হবে না।

bollywood deepika padukone Ranveer Singh Kapil Dev Entertainment News Kabir Khan 83
Advertisment