রাজ্যের দ্বিতীয় দফা ভোটে উত্তপ্ত হাইভোল্টেজ সেন্টার নন্দীগ্রাম। একদিকে 'জয় বাংলা স্লোগান', অন্যদিকে গগনভেদী চিৎকার 'জয় শ্রীরাম'। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। হয় মমতা-সরকারে হ্যাট্রিক, নয়তো ইতিহাস গড়ার অপেক্ষায় বিজেপি। তৃণমূল-বিজেপির (TMC-BJP) দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে সংযুক্ত মোর্চার বাজি মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। দিন দুয়েক আগেই বিরোধী শিবিরের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন তিনি। বুধবার নির্বাচনের দিন নন্দীগ্রামে যখন তৃণমূল-বিজেপির ধুন্ধুমার, সেই প্রেক্ষিতেই সংয়ুক্ত মোর্চা প্রার্থীর পালে হাওয়া লাগাতে বাম শিবিরের তরুণ তুর্কীর হয়ে হাল ধরলেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় (Kamaleswar Mukherjee)। বললেন, "ভাড়াটে সেনাদের চাই না! চাই লড়াকু মেয়েকে। মিনাক্ষীরা পালান না।"
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ‘এপিসেন্টার’ নন্দীগ্রাম। আজ রাজ্যের দ্বিতীয় দফা ভোটে সবুজ-গেরুয়া দুই প্রতিপক্ষ শিবিরের চোখ রাঙানিতে উত্তাল বঙ্গভোটের হাইভোল্টেজ কেন্দ্র। ‘এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়’। বিজেপি (BJP)-তৃণমূল (TMC) কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ! সকাল থেকেই সবুজ-গেরুয়া দুই শিবিরের খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম। প্রশ্ন উঠছে নন্দীগ্রামে ভোট হচ্ছে না যুদ্ধ হচ্ছে? ২০১১ সালে এই নন্দীগ্রামেই তৎকালীন বাম সরকারের কবর খুঁড়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেই নন্দীগ্রামের (Nandigram) মাটি নিয়েই এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে বাংলার মসনদ দখলের লড়াইয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ফেলেছেন পদ্ম-প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। যে নন্দীগ্রামকে কেন্দ্র করে ৩৪ বছরের বাম-শাসনের যবনিকা পতন ঘটেছিল, সেই এলাকাতেই এবার ফের একবার স্লোগান উঠেছে ‘হাল ফেরাও, লাল ফেরাও’। ড্রামাটিক আবার রোমাঞ্চকরও বটে! নেপথ্য নেতৃত্বে মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায় (Minakshi Mukherjee)। যিনি কিনা নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চার ভরসার প্রার্থী। বাম শিবিরের সেই তরুণ তুর্কীর হয়েই এবার সুর চড়ালেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়।
একুশের ভোটের মুখে বামপন্থী মনোভাবাপন্ন পরিচালককে এযাবৎকাল লাল শিবিরের বিভিন্ন মিটিং-মিছিলে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। তিনি যেমন আওয়াজ তুলেছেন কেন্দ্রের স্বৈরাচারী সরকার-তন্ত্রের বিরুদ্ধে, আবার তেমনই সময় বুঝে বিঁধতে ছাড়েননি বাংলার মমতা সরকারকেও। এবার নন্দীগ্রামে বাম শিবিরের তরুণ তুর্কী মিনাক্ষীর সমর্থনে সুর চড়ালেন কমলেশ্বর।
বামপন্থী মনোভাবাপন্ন পরিচালকের কথায়, "কমরেড পুলিশের নির্মম মার খাচ্ছে দেখে মীনাক্ষী পালালো না । আর তৃণমূলের ফৌজ বখরা পাচ্ছে না দেখে বিজেপিতে পালালেন । জনগণ বিপদে পড়লে এঁরা মানুষের পাশে থাকবেন! কিছুতেই না। লাল ফৌজ আর ভাড়াটে সেনার কলজের তফাৎ এটুকুই। তাই নন্দীগ্রামে লড়াকু মেয়ে মীনাক্ষীকেই চাই- ভাড়াটে সেনা নয়।"