একুশের নির্বাচনে পাখির চোখ বাংলার দিকে। কিন্তু তার আগেই কিনা বিজেপি সাংসদ দাবি তুললেন, বাঙালির গৌরব রবীন্দ্রনাথের লেখা জাতীয় সংগীত বদলে ফেলার! গেরুয়া শিবিরের সাংসদ স্বামী সুব্যহ্মণ্যম (Subramanian Swamy) সম্প্রতি দাবি তুলেছেন যে, আগামী ২৩ জানুয়ারির আগেই দেশের জাতীয় সংগীত 'জন গণ মন' বদলে ফেলা হবে! স্বাভাবিকবশতই স্বামীর এই 'আজব' দাবির তীব্র বিরোধিতা করেছে রাজ্যের শাসকদল তথা নেটিজেনদের একাংশ। এবার সেই প্রেক্ষিতেই মুখ খুললেন টলিউড পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় (Kamaleswar Mukherjee)।
কোনওরকম রেয়াত না করেই স্বামীর মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে পরিচালকের বক্তব্য, "জাতীয় সঙ্গীত না বদলে, জাতীয় সরকার বদলে ফেলা হোক।" "রাজনৈতিক সংস্কৃতিটা যদি ঠিক হয়, তবে সংস্কৃতির রাজনীতিটাও ঠিক হয়ে যাবে", মত পরিচালকের। এই অবশ্য প্রথম নয়! প্রসঙ্গত, এর আগেও বিজেপি সরকারের একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আওয়াজ তুলেছেন কমলেশ্বর। তা সে মেরুকরণের রাজনীতি হোক, সংশোধিত নাগরকিত্ব আইন, CAA, NRC কিংবা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বিদ্বেষমূলক মনোভাব ছড়ানোর মতো ইস্যুই হোক কিংবা কৃষিবিল। বামপন্থী মনোভাবাপন্ন কমলেশ্বর আগোগোড়াই আম-জনতার হয়ে প্রতিবাদী সুর তুলেছেন। এবারও অবশ্য তার অন্যথা হল না! বিজেপি সাংসদ স্বামী সুব্যহ্মণ্যম জাতীয় সঙ্গীত বদলে ফেলার দাবি তুলতেই, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, জাতীয় সঙ্গীত বদলের দাবিতে ডিসেম্বরের ১ তারিখ প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ২ পাতার একটি চিঠি লিখেছিলেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর দাবি ছিল, সিন্ধু প্রদেশ যেহেতু বর্তমানে আর ভারতের অংশ নয়, তাই জাতীয় সঙ্গীতে ব্যবহৃত ‘সিন্ধু’ শব্দটি ছেটে ফেলতে হবে। স্বামীর মতে, জাতীয় সঙ্গীত 'জন গণ মন'র একাধিক শব্দ অনাবশ্যক, যা কিনা সংশয় তৈরি করছে। কাকে বা কোন জায়গাকে উদ্দেশ্য করে তা লেখা স্বাধীনতা পরবর্তী প্রেক্ষিতে তা অস্পষ্ট। রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘আসল’ ‘জন গণ মন’র পরিবর্তে বিজেপি সাংসদ ১৯৪৩-এ নেতাজির আজাদ হিন্দ ফৌজের গাওয়া ‘শুভ সুখ চ্যান’ গানটি জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে ঘোষণা করার আরজি করেছেন। এই গানটি কবিগুরুর লেখা আসল গানটির আদলে তৈরি হলেও, অনেকটাই আলাদা। এবং এটি গাইতে সময় লাগে ৫৫ সেকেন্ড। স্বামীর পাঠানো চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন মোদীও। টুইটারে ফলাও করে তার প্রমাণও দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে। তীব্র বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে এবার প্রতিবাদী আওয়াজ তুললেন টলিউড পরিচালক কমলেশ্বর।