কঙ্গনা বনাম শিবসেনা সরকারের দ্বৈরথ এখনও থামেনি। সেপ্টেম্বর মাসের কথা। কঙ্গনা রানাউতের মুম্বইয়ের ফ্ল্যাট ও অফিস অবৈধভাবে নির্মাণের অভিযোগে ভেঙে দেওয়ার উপক্রম করেছিল বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যালিটি। যার জেরে অভিনেত্রী তড়িঘড়ি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের শিবসেনা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। সেইসময়ে মুম্বই হাইকোর্টের রায়ে কঙ্গনা খানিকটা স্বস্তি পেলেও, এবার কিন্তু সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতের রায় গিয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছে যে, কঙ্গনার মুম্বইয়ের ফ্ল্যাট বেআইনিভাবে তৈরি হয়েছে। এবার প্রশ্ন উঠছে, সরকারি নিয়ম ভঙ্গ করার জন্য কি তাহলে ভেঙে ফেলা হবে তাঁর বাড়ি ও অফিস? অভিনেত্রী যে আপাতত বেজায় বিপাকে পড়েছেন, তা বলাই বাহুল্য। বিপাকে পড়ে গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন তিনিও।
আদালত জানাল বিএমসি কর্তৃক অনুমোদিত প্ল্যানিংয়ে হেরফের করে বড়সড় নিয়ম ভেঙেছেন কঙ্গনা। তিনটি পৃথক ফ্ল্যাটকে একত্রিত করে ফ্লোর স্পেশ ইন্ডেক্স (FSI)-এ বদল এনেছেন, যা কোনওদিনই গ্রাহ্য নয়। বিচারক এল এস চাভানের মন্তব্য,
"খার এলাকায় একটি বিল্ডিংয়ের ১৬ তলায় তিনটি ফ্ল্যাট একসঙ্গে জুড়তে গিয়ে নিয়ম ভেঙেছেন কঙ্গনা রানাউত। ফ্ল্যাটের যে নকশা দেখানো হয়েছিল প্রশাসনকে। সেই অনুযায়ী, কাজ হয়নি। প্রশাসনের তরফে আগের নকশা দেখেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তবে, পরে সেটা পরিবর্তন করে নতুন প্ল্যান তৈরি হয়, যার জন্য প্রসাশনের তরফে অনুমতি নেয়নি কঙ্গনা। আর বাড়ি তৈরির সময় মারাত্মকভাবে নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন অভিনেত্রী।"
প্রসঙ্গত, আদালতে এই মামলা বিএমসির বিরুদ্ধে দায়ের করেছিলেন কঙ্গনা খোদ। আর নিজের দায়ের করা মামলাতেই এবার আইনি বিপাকে পড়লেন তিনি। পাশাপাশি এও জানানো হয় যে, এই মামলায় আদালতের হস্তক্ষেপের আর দরকার নেই। সেই প্রেক্ষিতে কঙ্গনার বাংলো ভাঙার জন্য বিএমসির যে আর কোনও বাঁধা রইল না, তা বলাই যায়।
আদালতের এই রায়দানের পর চুপ থাকেননি কঙ্গনা। পালটা মহারাষ্ট্র সরকারকে মহাবিনাশকারী সরকার বলে তোপ দাগেন। টুইটে লেখেন, "আমি কোনও ফ্ল্যাট একসঙ্গে জুড়িনি। গোটা বিল্ডিংটাই একভাবে তৈরি। প্রত্যেকটা ফ্লোরেই একটা করে অ্যাপার্টমেন্ট। আর সেভাবেই আমি এটাকে কিনেছি। মুম্বই পুরসভা আমাকে হেনস্তা করছে আসলে। উচ্চ আদালতে দেখা হবে।"
ঘটনার সূত্রপাত হয় কঙ্গনার একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। মুম্বই পুলিশের (Mumbai Police) বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে মায়নগরীকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা করেন অভিনেত্রী। এতেই রুষ্ট হয় শাসকদল শিব সেনা (Shiv Sena)। শিবসেনার পক্ষ থেকে সঞ্জয় রাউত ও কঙ্গনার মধ্যে বাকযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। পরিস্থিতি এমন পর্যায় পৌঁছায় বান্দ্রার পালি হিলে ৫ নম্বর বাংলোতে কঙ্গনার ‘মণিকর্ণিকা ফিল্মস’-এর অফিস অবৈধভাবে তৈরি করার অভিযোগ তুলে ৭ সেপ্টেম্বর অভিনেত্রীকে নোটিস ধরায় বিএমসি। নোটিসে বলা হয়েছিল যে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য-প্রমাণস্বরূপ কাগজপত্র দেখাতে না পারলে ভেঙে দেওয়া হবে কঙ্গনার অফিস। করাও হল তাই। অভিনেত্রী মুম্বইতে পা রাখার আগেই বাংলো ভাঙার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। যার জেরে বিতর্কও কম হয়নি। বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি থেকে রাজনৈতিক মহল উত্তাল হয়ে উঠেছিল।