'পালান' দেখলে মৃণালদা ফোন করে বলতেন, হ্যালো, আমি মৃণাল সেন বলছি..: কৌশিক

'পালান'-এ মৃণাল সেনের 'খারিজ'কে ফিরে দেখবেন কৌশিক, রয়েছেন মমতাশঙ্কর-অঞ্জনরা।

'পালান'-এ মৃণাল সেনের 'খারিজ'কে ফিরে দেখবেন কৌশিক, রয়েছেন মমতাশঙ্কর-অঞ্জনরা।

author-image
Sandipta Bhanja
New Update
Kaushik Ganguly, Palan, মৃণাল সেনের জন্মশতবর্ষ, পালান, খারিজ, পাওলি দাম, শ্রীলা মজুমদার, মমতাশঙ্কর, অঞ্জন দত্ত, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, bengali news today

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, মৃণাল সেন

জন্মশতবর্ষে মৃণাল সেনকে অভিনব শ্রদ্ধার্ঘ্য কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের। তাঁর তৈরি ছবি 'খারিজ'-এর বিষয়বস্তুকেই নয়া মোড়কে নিয়ে আসতে চলেছেন সিনেপর্দায়। সিনেমার নাম 'পালান'। কাস্টিও বেছে নিয়েছেন সেভাবেই। তালিকায় মমতাশঙ্কর, অঞ্জন দত্ত, শ্রীলা মজুমদারের মতো মৃণাল-ঘনিষ্ঠরা অভিনেতারা। 'পালান'-এ অবশ্য বিশেষ ভূমিকায় দেখা যাবে যিশু সেনগুপ্ত, পাওলি দামকেও।

Advertisment

'পালান' প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রিয় 'মৃণালদা'কে নিয়ে আবেগঘন হয়ে পড়লেন কৌশিক। স্মৃতির পাতা ঘেঁটে জানালেন, "আমার অত্যন্ত সৌভাগ্য যে, আমি ওঁর হাত ধরতে পেরেছি। তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। শুধু আমি নই আমার পরিবারও। আমার জীবন কৃতার্থ যে, মৃণাল সেন আমার সিনেমা দেখেছেন। আমি যখন টেলিফিল্ম বানাতাম, ওঁর মতামত নিতাম। উনি আপনি-আজ্ঞে কিংবা 'বাবু' সম্বোধন খুব একটা পছন্দ করতেন না। তাই মৃণালদা বলেই ডাকতাম। আমি চিরকাল ওকে বাংলার পরিচালকদের প্রথম দু-একজনের মধ্যে রেখেছি। আন্তর্জাতিক স্তরের পরিচালক একজন। মৃণালদার 'খারিজ' দেখেই 'পালান' তৈরির অনুপ্রেরণা পাই। খারিজ দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।"

publive-image
Advertisment

উল্লেখ্য, বিশ্ববরেণ্য পরিচালক মৃণাল সেনের জন্মশতবর্ষে 'পালান'-এর ঘোষণা করলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। ১৯৮২ সালে মুক্তি পাওয়া মৃণাল পরিচালিত 'খারিজ'-এর গল্পের বিবর্তন ধরা পড়বে 'পালান'-এ। তবে এবারের প্রেক্ষাপট ২০২২ সাল। এককথায়, 'খারিজ'-এর গল্পের পরিবার ও সেই চরিত্রগুলোর সেকাল-একাল। তবে চরিত্র ও তাঁদের নাম এক থাকলেও কালের নিয়মে বিবর্তনের জন্য গল্প বদলাচ্ছে। মিউজিকের দায়িত্বে নীল দত্ত। সিনেম্যাটোগ্রাফি করবেন আপ্পু প্রভাকর।

<আরও পড়ুন: মেয়ের বাবা হলেন আদিত্য নারায়ণ, খুশিতে ভেসে বললেন, ‘সঙ্গীত ওঁর রক্তে’>

সিনেমার ঘোষণা করার পাশাপাশি মানুষ মৃণাল সেন কেমন ছিলেন, সেকথাও ধরা পড়ল কৌশিক মন্তব্যে। বললেন, "সেইসময়ে যেসমস্ত ছবি দেখেছিলাম, তার থেকে 'খারিজ' একেবারে আলাদা। এই ছবিটা আমার জীবনের একটা জানলা খুলে দিয়েছিল। সিনেমাটার কাছে আমি খুব ঋণী। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাইনি। তবে মৃণালদা এত সাদামাটা মানুষ ছিলেন যে, ওঁর পাশে বসে আড্ডা মেরে চা-ও খেয়েছি। এই সান্নিধ্য পাওয়াটাই আমার কাছে মৃণালদার আত্মীয়তা। আশা করি, 'পালান'-এর মাধ্যমে যথাযথ সম্মান দিতে পারব মৃণালদাকে।"

কাস্টিং প্রসঙ্গে পরিচালকের মন্তব্য, "মমতাশঙ্কর, অঞ্জন দত্ত, শ্রীলা মজুমদার এতা প্রত্যেকেই মৃণলাদার পরিবারের মতো। বিশেষ করে অঞ্জন তো সন্তানসুল্য। এঁরা যতটা মৃণাল সেনকে জানেন, আমি তার সিকিভাগও জানি না। তবে এটুকু বলতে পারি, ওঁর সৃষ্টি-ভাবনা আমাকে যতটা অনুপ্রেরিত করেছে, সেইটুকু নৈবদ্য দেওয়ার ক্ষমতা আমার রয়েছে। তাই ওঁর বাছা শিল্পীদের নিয়েই কাজ করতে চলেছি। যে সিনেমাটা দেখলে হয়তো মৃণালদা সকালবেলা ফোন করে বলতেন, হ্যালো, আমি মৃণাল সেন বলছি। হয়তো খুশিও হতেন।" অন্যদিকে মৃণালকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে কৌশিকের এই ছবিতে শামিল হতে পেরে খুশি অঞ্জন, মমতাশঙ্কর, শ্রীলা মজুমদাররাও।

publive-image

ততোধিক উচ্ছ্বসিত পাওলি দামও। বললেন, "২০০৯ সাল। কালবেলা ছবিটা রিলিজের পর প্রথম যে ফোনটা এসেছিল, সেটা ছিল মৃণাল সেনের। হঠাৎ অচেনা নম্বরের ফোন দেখে তুললাম। ওপ্রান্ত থেকে কণ্ঠ এল- নমস্কার, আমার নাম মৃণাল সেন। আমার তো ভাবতেই পারিনি। ফোন হাত থেকে পড়ে যাওয়ার জোগাড়। তারপরই আবদার, তোমার অভিনয় খুব ভাল লেগেছে। তুমি একবার আমার সঙ্গে দেখা করতে আসতে পারবে? কথা বলব। আমি দেখাও করে এসেছিলাম। সেদিন আমি ছিলাম নীরব শ্রোতা। তাঁর সামনে কথা বলার ধৃষ্টতা দেখাতে পারিনি। তখনই প্রস্তাব দিলেন, জানি না আর কোনওদিন ছবি করব কিনা, তবে করলে তুমি তাতে অভিনয় করবে? 'পালান' প্রসঙ্গে সেসব কথা খুব মনে পড়ে যাচ্ছে। ওঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ তো হল না, তবে কৌশিকদার এই সিনেমার মাধ্যমে হয়তো সেই আশার কিছুটা হলেও পূরণ হবে।"

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tollywood Anjan Dutt paoli dam jisshu sengupta Mrinal Sen Entertainment News Kaushik Ganguly Mamata Shankar Palan