পয়গম্বরকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জের। জ্বলছে গোটা দেশ। উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, ঝাড়খণ্ড থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন রাজ্য প্রতিবাদে উত্তাল। বাংলাও বাদ যায়নি সেই আঁচ থেকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে রাস্তা অবরোধ, টায়ার জ্বালানো থেকে শুরু করে বোমাবাজি বাদ যাচ্ছে না কিছুই! একই চিত্র দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলোতেও। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত অঞ্চলগুলিতে। এবার সেই পয়গম্বর-বিরোধী মন্তব্য বিতর্কের মাঝেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এহেন প্রতিবাদী আচরণ নিয়ে মুখ খুললেন কৌশিক সেন।
নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিকের কথায়, নাগরিক হিসেবে শহরে বসে মনে হচ্ছে, এই ঘটনা অত্যন্ত পরিকল্পনামাফিক। কারণ আমরা জানি, আমাদের বাংলায় অনেক সমস্যা থাকলেও চিরকাল পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি, সে রাজনৈতিক হোক কিংবা সামাজিক, আমরা সংখ্যালঘুদের অনেক বেশি ছাড় দিয়েছি এবং দিই-ও। এটা শুধুমাত্র মমতা সরকারের আমলে নয়, চিরকাল-ই এটা হয়ে আসছে। গণ্ডগোল কম-বেশি, ভুল-ঠিক সব আমলেই ছিল, এখনও আছে। তবে আমাদের রাজ্যে সংখ্যালঘুরা যতটা সুরক্ষিত, সেটা অন্য রাজ্যের তুলনায় অনেক বেশি। ফলে, নুপূর শর্মা এবং আরেক ভদ্রলোকের ধ্বংসাত্মক কথার প্রেক্ষিতে এই যে অশান্তি তৈরি হয়েছে, তার দায়টা তো নিশ্চয় যে রাজনৈতিক দল আমাদের দেশটা চালায় তাদের নিতে হবে। তবে এমন স্পর্শকাতর একটা মুহূর্তে কারও ওপর দোষ-দায় না চাপিয়ে, যেটা আমরা করতে পারি, সেটা হল পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনকে অনুরোধ করতে আপনারা শুক্রবার যেরকম শক্তহাতে মোকাবিলা করেছেন, সেরকমভাবেই পরিস্থিতির সামাল দিন। এক সংবাদমাধ্যম চ্যানেলে কথোপকথন প্রসঙ্গেই কৌশিক একথা বলেন।
<আরও পড়ুন: ‘মুসলিমরা গোটা দেশ মাথায় তুলে নিয়েছে’, পয়গম্বর-বিতর্কে ফের সাম্প্রদায়িক মন্তব্য কঙ্গনার>
পাশাপাশি তিনি এও যোগ করেন যে, "প্রথমদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধুমাত্রই করজোরে অনুরোধ করেছিলেন, যে আপনারা এভাবে অবরোধ করে প্রতিবাদ করবেন না, শুক্রবার পুলিশ প্রশাসন কিন্তু বেশ নিপুণতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামলেছেন। ওদের আক্রমণ হলেও। গরীব মানুষেরা এসব দাঙ্গা, অশান্তি চান না। হিন্দু-মুসলিম বিভাজন চান না। এটা একেবারেই একটা শ্রেণির মানুষের ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য তৈরি করা পরিস্থিতি। তাদেরকে কোনওভাবে আটকাতেই হবে। সাধারণ মানুষের প্রয়োজন পুলিশ প্রশাসনকে। পুলিশ শক্তহাতে মোকাবিলা করুক। যারা হাঙ্গামা করছে তারা মূলত কোনও ধর্মের নয়, এরা আদতে সমাজবিরোধী। এরা অপরাধী। এদেরকে যেভাবে হোক আটকাতে হবে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন