Ke Apon Ke Por, Bengali Television: সম্প্রতি ১০০০ এপিসোড পূর্ণ করল স্টার জলসা-র ধারাবাহিক 'কে আপন কে পর'। প্রায় তিন বছরের যাত্রা এই ধারাবাহিকের। জবা-পরম নিঃসন্দেহে বাংলা টেলিভিশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং হিট জুটি। বার্ক রেটিংয়ে টানা দু'বছর প্রায় বাংলা টেলিভিশনের সেরা পাঁচের মধ্যে থেকেছে এই ধারাবাহিক। অল বেঙ্গল টিআরপি তালিকায় একটা সময় ১৪ রেটিংও দিয়েছে এই ধারাবাহিক। শুধু তাই নয়, সীমিত বা কম বাজেটে অত্য়ন্ত সফল ধারাবাহিক প্রযোজনার ক্ষেত্রে 'কে আপন কে পর' একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
ধারাবাহিক প্রযোজনার এই মডেল সম্পর্কে প্রযোজক সুশান্ত দাস জানালেন, ''গল্পটা মধ্য়বিত্ত পরিবারকে নিয়ে এবং তাই সেটের জন্য খুব বেশি কিছু খরচ করতে হয়নি। তাছাড়া যেভাবে চিত্রনাট্য়টা সাজানো হয়েছিল, সেখানে আউটডোরেও বেশি খরচ করিনি আমরা, একেবারে গোড়ায় অমিয়ভূষণের ফেয়ারওয়েল পার্টি ছাড়া। অনেক সময়েই শুরুর দিকে অতিরিক্ত খরচ করতে হয়। সিরিয়াল হিট হলে, সেই অতিরিক্ত খরচ তুলে নেওয়া সম্ভব হয় প্রযোজকের পক্ষে। সেদিক দিয়ে বলতে পারো যে কে আপন কে পর অত্য়ন্ত সফল।''
আরও পড়ুন: বউকে কী নামে ডাকেন জিতু? রইল বিয়ের কিছু ছবি
প্রযোজক সুশান্ত দাসের এই স্ট্র্য়াটেজি কিন্তু এর আগেও সফল হয়েছে। 'সাত পাকে বাঁধা' এবং 'জয়ী' ঠিক ওইভাবেই সাফল্য এনে দিয়েছে প্রযোজককে। কিন্তু শুধু প্রোডাকশন স্ট্র্য়াটেজিই নয়, 'কে আপন কে পর' সফল কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজিতেও-- বাড়ির কাজের মেয়ে থেকে বাড়ির বউ হয়ে ওঠার গল্পটাই তীব্রভাবে আকর্ষণ করেছে দর্শককে। যত সময় এগিয়েছে, জবার ব্য়ক্তিত্বের বিবর্তন, তার পড়াশোনা শেখা, বিউটি কনটেস্টে অংশ নেওয়া, সর্বোপরি পরিবারের জন্য নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দেওয়া-- দর্শককে এই চরিত্রের প্রতি বিশ্বস্ত করে তুলেছে। তাই তিন বছর পরেও এই ধারাবাহিকই স্টার জলসা-র সর্বোচ্চ টিআরপি শো।
''একটা মধ্য়বিত্ত বাড়ির গল্প বলা হবে, সেভাবেই আলোচনা শুরু হয়েছিল চ্য়ানেলের সঙ্গে। তার পরে মধুজাদি, কৌস্তুভীদির সঙ্গে কথা বলতে বলতে গল্পটা শেপ পায়। দর্শক খুবই রিলেট করতে পেরেছেন ওই পরিবারের সঙ্গে, সেটাই ধারাবাহিকের ইউএসপি। জবার চরিত্রে পল্লবীকে কাস্টিং অনেকটা শেষ মুহূর্তে হয়েছিল। কিন্তু পল্লবী খুব দ্রুত জবা হয়ে উঠতে পেরেছে। আমার মনে হয় লাস্ট তিন বছরে জবা-র থেকে হিট চরিত্র আর আসেনি বাংলা টেলিভিশনে। প্রথম সপ্তাহেই আমাদের টিআরপি ছিল ৭.৩। আর পাঁচ সপ্তাহের মধ্য়ে অল বেঙ্গল-এ ১০ রেটিংয়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম আমরা। অনেকেই জানেন না, প্রথমে এই ধারাবাহিকটি সম্প্রচার হওয়ার কথা ছিল বিকেল পাঁচটায়। সেই মতো প্রোমোও চলে গিয়েছিল। ততদিনে প্রথম কয়েকটি এপিসোড জমা পড়ে গিয়েছে। প্রথম এপিসোডটি দেখে এতটাই ইম্প্রেসড হয়েছিলেন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত পালটে সাড়ে সাতটার স্লট দেওয়া হয়'', জানালেন সুশান্ত দাস।
আরও পড়ুন: রাজ কাপুরকে ফিরিয়ে দেন সত্য়জিৎ, রবি-তপেনকে নিয়েই হয় ছবি
স্টার জলসা-র এই শো-এর সঙ্গে স্টার প্লাস-এর 'ইয়ে রিশতা কেয়া কহলতা হ্য়ায়'-র অনেকটা তুলনা করা যায়। ওই ধারাবাহিকের মতোই এখানেও বেশ কিছু টাইম লিপ হয়েছে এবং নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য়ে দিয়ে গিয়েছে জবা-পরম জুটি, কিন্তু দর্শক এই জুটির গল্প শুনতে এখনও উন্মুখ। হয়তো আরও হাজার এপিসোড অতিক্রম করবে এই ধারাবাহিক, বলা কি যায়? কারণ প্রযোজকের মতে, 'কে আপন কে পর' এখন দর্শকের অভ্যাস।