সপ্তাহ দুয়েক বাদেও প্রেক্ষাগৃহে রমরমিয়ে চলছে 'হাবজি গাবজি'। সিনে-সমালোচকরা তো বটেই এমনকী আম-দর্শকরাও হল থেকে বেরিয়ে রাজ চক্রবর্তীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাঁদের কথায়, 'হাবজি গাবজি' অত্যন্ত সময়োপযোগী সিনেমা। তবে এই ছবি দেখে একপক্ষ আবার বেজায় চটেছেন পরিচালকের ওপর। এমনকী, রাজকে সোজাসাপ্টা হুমকি দিতেও পিছপা হল না তাঁরা।
কাদের হুমকির মুখে পড়লেন 'হাবজি গাবজি' পরিচালক? বাচ্চাদের। কারণ এই সিনেমা দেখার পর থেকেই নাকি মা-বাবারা সন্তানদের মোবাইল থেকে গেম মুছে দিচ্ছেন। এমনকী পড়াশোনা বাদ দিয়ে বেশিক্ষণ সময় ধরে মোবাইলের সঙ্গে সময় কাটালেও নাকি বকা-ঝকা শুনতে হচ্ছে। আর তাতেই পরিচালকের ওপর বেজায় খেপেছে তারা।
আসলে মুঠোফোনে জীবনবন্দি হলে কী পরিণাম হতে পারে? সেই বাস্তব প্রেক্ষাপটকেই তুলে ধরেছেন রাজ চক্রবর্তী তাঁর 'হাবজি গাবজি' ছবিতে। বর্তমানে ডিজিটাইজেশনের যুগ। আট থেকে আশি, সমাজ ক্রমশই নেটকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে। বইয়ের পাতায় নয়, আজকাল বরং নবীন প্রজন্মের মুখ গোঁজা থাকে ট্যাব-মোবাইলের গেম, ভিডিওয়। মারণ গেমের ফাঁদে পড়ে, জীবনে সর্বনাশ হওয়ার উদাহরণ আকছার-ই শিরোনামে উঠে আসে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বহু শৈশবও।
<আরও পড়ুন: ৮৫ কোটি সিনেমায় ঢেলে আয় মোটে আড়াই কোটি! দেনায় ডুবেছেন কঙ্গনা>
এমনকী মনস্তত্ত্ববিদদের কথাতেও একাধিকবার বয়ঃসন্ধির সময়ে আচরণগত পরিবর্তনের কথা উঠে এসেছে। যার নেপথ্যে একমাত্র খলনায়ক মোবাইল কিবা কম্পিউটার গেম। সিনেমায় সেরকমই গল্প সাজিয়েছেন রাজ। যে ছবি দেখে এবার অভিভাবকেরা সন্তানদের সাবধানবাণী দেওয়া শুরু করেছেন।
পরিচালক রাজ নিজেই সেকথা জানিয়েছেন যে, 'হাবজি গাবজি' দেখে বাচ্চারা নাকি প্রকাশ্যেই পরিচালককে হুমকি দিয়ে বলেছে- "কী বাজে ছবি বানিয়েছো, দেখে ভয় করছে। আর গেম খেলতে পারছি না। মা-বাবারাও বলছেন, দেখেছিস, গেম খেললে কী মারাত্মক সর্বনাশ হতে পারে?" এই সিনেমা যেন অভিভাবকদের কাছে আশীর্বাদের মতোই হয়ে উঠেছে। তাদের কথায়, বাচ্চারা নাকি নিজেরাই 'হাবজি গাবজি' দেখে মোবাইল থেকে গেম ডিলিট করে দিচ্ছে। যা কিনা এতদিন তাঁরা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি। হাজারও বাধানিষেধ, বকা-ঝকা করা সত্ত্বেও গেমের ভূত ঘাড় থেকে নামানো যেত না তাঁদের। আর তারাই এখন নিজে থেকে গেম খেলতে চাইছে না।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন