/indian-express-bangla/media/media_files/2025/06/10/Yr05V7FkgeiBg4mWUt8R.jpg)
তাঁর পাঁচটি ছবি- যা দেখলে আজও
আজ সেই দিন, যেদিন গোটা দেশ হারিয়েছিল তাঁদের কিশোরকে। মৃত্যুর কিছু সময় আগেও তিনি এটাই মজা করেছিলেন তাঁর হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। আর সেটাই হল। অমিত তখন বিদেশে। কিশোর মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন। শেষ রক্ষা হল না আর। তাঁর মৃত্যুদিনটা শ্রী অশোক কুমারের জন্মদিনের সঙ্গে মিশে গেল। তখন চারপাশে শুধু কিশোরের চলে যাওয়ার যন্ত্রণা।
কিশোর শুধু গায়ক নন, তিনি যেন একজন পারফর্মার। এমন এক পারফর্মার, যে সবেতেই সেরা। তিনি পরিচালনা করতেন, তিনি অভিনয় তো করেছেন-ই। শুধু কিংবদন্তি গায়ক হিসেবে না, বরং তিনি ভীষণ জনপ্রিয় ছিলেন, অভিনেতা হিসেবে। যদিও তাঁর সঙ্গে অভিনয় করতে ভয় পেতেন শ্রী অমিতাভ বচ্চন। কিন্তু, তাঁর এমন ৫টি সিনেমা আছে, যা দেখলে তারিফ করতে বাধ্য হবেন দর্শক।
কী কী সেই সিনেমাগুলি? তাঁর জীবনে রুমা গুহঠাকুরতা হোক, বা মধুবালা, কিংবা লীনা- চার স্ত্রীয়ের মধ্যে তিনজন-ই ছিলেন অভিনেত্রী। আর কিশোর, তাঁর পাঁচটি ছবি- যা দেখলে আজও কিংবা এই প্রজন্ম-ও চমকে যাবে, সেগুলো এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাকঃ
চলতি কা নাম গাড়ি (১৯৫৮)
‘চলতি কা নাম গাড়ি’, ১৯৫৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এক জনপ্রিয় হিন্দি হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র। পরিচালক ছিলেন বাঙালি নির্মাতা সত্যেন বসু। এতে অভিনয় করেন তিন বাঙালি—অশোক কুমার, কিশোর কুমার ও অনুপ কুমার। নায়িকা ছিলেন পঞ্চাশের দশকের খ্যাতনামা অভিনেত্রী মধুবালা। চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালনা করেন শচীন দেব বর্মণ, যিনি কিশোর কুমার ও মান্না দে-কে দিয়ে অসাধারণ গান গাইয়েছিলেন।
পড়োসন (১৯৬৮)
‘পড়োসন’ ১৯৬৮ সালের একটি হিন্দি সঙ্গীতনির্ভর কৌতুক সিনেমা। পরিচালনা করেন জ্যোতি স্বরূপ এবং প্রযোজনা করেন এন.সি. সিপ্পি। রাজেন্দ্র কৃষ্ণের রচিত এই ছবিটি ছিল ১৯৫২ সালের বাংলা চলচ্চিত্র পাশের বাড়ি (অরুণ চৌধুরীর গল্প অবলম্বনে)–এর পুনর্নির্মাণ। মূল গল্পটি আবার এডমন্ড রোস্ট্যান্ডের বিখ্যাত ফরাসি নাটক সাইরানো দ্য বার্জেরাক (১৮৯৭)-এর রূপান্তর বলে মনে করা হয়। ছবিতে অভিনয় করেন সুনীল দত্ত, সায়রা বানু, কিশোর কুমার, মুকরি, রাজ কিশোর ও কেষ্টো মুখার্জি। এই চলচ্চিত্রটি আজও বলিউডের অন্যতম সেরা কমেডি হিসেবে বিবেচিত।
নিউ দিল্লি (১৯৫৬)
'নিউ দিল্লি', ১৯৫৬ সালের একটি সাদা-কালো রোমান্টিক কমেডি, যা পরিচালনা করেন ইন্দ্র রাজ আনন্দ এবং চিত্রনাট্য লেখেন রাধাকিষেন। চলচ্চিত্রে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেন কিশোর কুমার ও বৈজয়ন্তীমালা। সহ-অভিনয়ে ছিলেন জাবিন জলিল, নানা পালসিকর, নাজির হুসেন, ধুমাল, প্রভু দয়াল ও অন্যরা। ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেন শঙ্কর-জয়কিষেন, গানের কথা লেখেন হাসরত জয়পুরী ও শৈলেন্দ্র। গল্পটি এক পাঞ্জাবি যুবক আনন্দ ও তামিল মেয়ে জানকীর প্রেমকাহিনি, যাদের ভালোবাসা সামাজিক বিভেদের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়।
নউকরি (১৯৫৪)
নউকরি (অর্থ: চাকরি) হল বিমল রায় পরিচালিত একটি সামাজিক হিন্দি ছবি। যেখানে অভিনয় করেন কিশোর কুমার ও শিলা রামানি। স্বাধীনতার পর শহুরে বেকারত্ব ও তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নভঙ্গের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই সিনেমাটি ভারতের সমাজবাস্তবতার প্রতিচ্ছবি হিসেবে বিবেচিত।
হাফ টিকিট (১৯৬২)
‘হাফ টিকিট’ ১৯৬২ সালের একটি হিন্দি কমেডি, পরিচালনা করেন কালিদাস এবং প্রযোজনা করে বোম্বে টকিজ। ছবিতে অভিনয় করেন কিশোর কুমার, মধুবালা ও প্রাণ। গল্পটি বিজয় নামে এক অকর্মণ্য যুবককে কেন্দ্র করে, যিনি পিতার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে না করতে চেয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। এটি মধুবালার শেষদিকের অভিনীত ছবিগুলোর একটি এবং কিশোর কুমারের সঙ্গে তার শেষ যৌথ কাজ। মুক্তির পর ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে সফল হয় এবং ধীরে ধীরে একটি কাল্ট ক্লাসিক–এ পরিণত হয়।