আনন্দের শহরে বিশ্ব সিনেমার সম্মোহনে এক হয়ে গেছেন বার্গম্যান, গোদার, জাফর পানাহি, কিম কি ডুক। ২৪ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলা ছবির উদযাপন চলছে। সত্যজিৎ রায়ের অপু ট্রিলজি দেখানো হয়েছে প্রথম দিন। ছবি দেখতে ভিড় জমিয়েছেন সিনেমাপ্রেমী দর্শকরা। সারাদিন ধরে ছবি দেখানো ছাড়াও চলছে কতরকমের কর্মকান্ড। সেখানের দর্শকও কিন্তু কম নয়। খাবারের দোকান, ঝিলপার, হরিদার চায়ের দোকান, অ্যাকাডেমীর পাশের গলি, ফেসবুকে লোকেশন ট্যাগ, ইনস্টায় হ্যাশট্যাগ, এগুলোর গুরুত্ব কি কম নাকি? খামোখা ছবি দেখার জন্যই নন্দন চত্বরে আসতে হবে, এহেন মাথার দিব্যি কে দিয়েছে?
শহরের এতবড় ফেস্টিভ্যালে মানুষ তো আসছেন, তবে অধিকাংশেরই ভ্রুক্ষেপ নেই সিনেমার তালিকার প্রতি। এমনকি ছবি দেখার লাইনে দাঁড়িয়েও বলতে পারছেন না, কী ছবি দেখতে ঢুকছেন। আর এই সংখ্যাটা যে নেহাত কম নয়, পথচলতি চারজনের দুজনকে ধরলেই বোঝা যাচ্ছে সেকথা।
কেউ কেউ তো আবার অবলীলায় বলে দিচ্ছেন হাউসফুল, তাই দেখতে পারছি না। কারও আবার কোনও ধারনাই নেই কী ছবি এসেছে। আবার অনেকেই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভুল বলছেন।
অনেকে আবার তালিকায় যে দেশের ছবি সেদিন নেই, সেটাই দেখবেন ঠিক করে ফেলেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই ভিড়ের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে কি? বিদ্বজনেদের একাংশের মতে, এই সমস্যা চিরকালই ছিল, তবে আজকাল সংখ্যাটা বেড়েছে। শুধু ছবি না দেখা নয়, বিদেশি ডেলিগেটসদের সঙ্গে ছবি তোলার ভিড়টা দেখতে হয় একবার। জানতে চাওয়া হল, জানেন ইনি কে? উত্তর এল, হ্যাঁ হ্যাঁ! অনেক ছবি দেখেছি ওঁর তৈরি। কিন্তু ইনি তো নতুন পরিচালক, যদ্দুর জানি। তাহলেই বুঝুন।
তবে যাই বলুন, ছবি না দেখলেও আড্ডা, খাওয়াদাওয়া, তারকাদের সঙ্গে সেলফি ও নন্দনে যাওয়ার কথা বলে বন্ধুমহলে ওজনটা তো বাড়ে। এই বা কম কী?