বেলা পৌনে একটা। পবনহংস শ্মশানে প্রস্তুত চিতা। ভারাক্রান্ত মনে বাবা বাপ্পি লাহিড়ীর শেষকৃত্য করছেন বাপ্পা। মুখাগ্নি করার সময়ে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না। অঝোরে কেঁদে ফেললেন। মন্ত্রোচ্চারণ করতে করতেই বাপ্পাকে সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে এলেন পুরোহিত। ঘনিষ্ঠরা আগলে রেখেছেন বাপ্পাকে। পাশেই দাঁড়িয়ে বোন রিমা। তিনিও ভেঙে পড়েছেন বাবার শেষকৃত্যে। বেলা একটা নাগাদ মুখাগ্নি হল। পঞ্চভূতে বিলীন হলেন প্রবাদপ্রতীম সঙ্গীতশিল্পী। শেষকৃত্যে যোগ দিতে শ্মশানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যা বালন, মিকা সিং, ভূষণ কুমার, অলকা ইয়াগনিক, ইলা অরুণ থেকে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রির আরও অনেকে।
Advertisment
ঘড়ির কাঁটায় সকাল ১০টা। জুহুর লাহিড়ি হাউসের সামনে থিক থিক করছে অসংখ্য অনুরাগীদের ভীড়। ইন্ডাস্ট্রির বন্ধু-সহকর্মীরাও জড়ো হয়েছেন প্রিয় বাপ্পিদাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। ফুলের মালায় সেজে উঠেছে শববাহী গাড়ি। স্বজন হারানোর আর্তি চারপাশে। কত স্মৃতিরোমন্থন, কত আড্ডা, আজ সবকিছুকে চিরবিদায় জানিয়ে পরপারের কনসার্টের জন্য রওনা হচ্ছেন 'ডিস্কো কিং'। চোখের জলে বিদায় দিলেন প্রিয় 'বাপ্পিদা'কে। দৃশ্যের বর্ণনা করতে গেলে বাপ্পি লাহিড়ী গানের লাইনই ধার নিয়ে বলতে হয়- "ইয়াদ আ রহা হ্যায়…"।
শুরু হল শেষযাত্রা। বাবাকে শেষযাত্রায় কাঁধ দিলেন বাপ্পা। ইতিমধ্যেই স্ত্রীকে নিয়ে আমেরিকা থেকে মুম্বইতে পৌঁছেছেন তিনি। ফুলের চাদরে সাজানো প্রবাদপ্রতীম শিল্পীর দেহ নিয়ে ভিলে পার্লের পবনহংস শ্মশানের উদ্দেশে রওনা হল শববাহী গাড়ি। বাপ্পিদার শেষযাত্রায় পা মেলালেন বন্ধু-অনুরাগীরা। সেখানেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
দাদুর শেষকৃত্যের আগে ভেঙে পড়ল নাতি। মেয়ের রিমার ছেলে সম্প্রতি দাদু বাপ্পির কাছে গান শেখা শুরু করেছিলেন। দাদু যে চিরকালের জন্য ছেড়ে চলে গেলেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না বছর দশেকের নাতি।
প্রসঙ্গত, রিমা লাহিড়ীর স্বামী গোবিন্দ বনসল জানিয়েছেন মঙ্গলবার রাতে নৈশভোজ সারার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন বাপ্পি লাহিড়ী। এরপরই হৃদরোগে আক্রান্ত হন। গোবিন্দের কথায়, "শাশুড়ি মা নিজে হাতে খাইয়ে দিয়েছিলেন। তারপর কী যে হল… সব শেষ।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন