নতুন রিলিজ না নতুন সম্পর্ক কোনটা বেশি ভাবায়? আসলে অভিনেত্রী মধুমিতা সরকারের কাছে যেকোনও ক্ষেত্রে মন থাকলে সেটাই বেশি ভাবাবে। ব্যক্তিগত সম্পর্ক হোক কিংবা নতুন ছবি, কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা কটূক্তি, তিনি ভীষণ পজেটিভ। জীবনে অনেক কিছু চলছে তাঁর। তাই তো ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন সহজভাবেই।
ফেলুবক্সীতে তো রেডিও জকি হিসেবে অভিনয় করছ, মধুমিতাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, অভিনেত্রী না হলে RJ হতে?
খুব ছোটবেলায় একবার রেডিও জকি হওয়ার ইচ্ছে জেগেছিল। কিন্তু, তারপর অভিনয় জীবনটাও এত ছোট বয়সে শুরু করেছিলাম, যে সেটা নিয়ে আর ভাবা হয়নি। তখন ছোটও ছিলাম। অভিনেত্রী হবো, এটাও ভাবি নি। প্রথমে দেখলাম একটু কঠিন, মাঝে মাঝে মনে হত, এত খারাপ অভিনয় করছি, তারপর ধীরে ধীরে বিষয়টা ভাল লাগতে শুরু করল।
এমন কিছু সিমিলারিটি, যেটা একজন অভিনেত্রী এবং রেডিও জকি দুজনের মধ্যেই আছে?
আমার মনে হয় কনটিনিউটি এবং স্ক্রীপ্ট। কারণ, দুটি বিষয়েই আদ্যোপান্ত বিনোদন জড়িয়ে আছে। অভিনয় যেমন একটা শিল্প, এটাও তাই। কথা বলার ধরন বা বাচনভঙ্গি, দুটিতেই এগুলো খুব মানে রাখে।
তোমার সঙ্গে পরীমণি কাজ করেছেন, যিনি বাংলাদেশের সুপারস্টার, একজন অভিনেত্রী হয়ে আরেকজন অভিনেত্রীর স্ক্রিন প্রেজেন্স নিয়ে ভাব?
আমি সত্যিই আসলে ভাবি না। আমার কাছে আমার ক্যারেক্টার ম্যাটার করে। কারণ, একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, ছবি ভাল হতে গেলে একজনের অভিনয় ভাল হল, বাকিরা খাজা অভিনয় করল সেটা চলে না। সকলকে সমান ভাল অভিনয় করতে হবে। এটা টিম ওয়ার্ক। এটা আমি চাইতে পারি না, যে আমি একা ভাল অভিনয় করব, তাহলে তো গেল।
এই ছবিতে তুমি তো একজন গোয়েন্দাকে সাহায্য করতে চলেছে, কী মনে হয় মেয়েদের মধ্যে 'গোয়েন্দাগিরি' থাকে?
এটা তো থাকেই। সত্যি থাকে। মেয়েদের মধ্যে এই নাকটা থাকে। তাঁরা রহস্যটা বুঝতে পারে। সত্যি বলতে গেলে শুধু গায়ের জোরে না, কিন্তু বুদ্ধি দিয়েও যে কত কী করা যায় সেটা মেয়েরা জানে।
রেডিও এবং অভিনয়, দুটি পেশাই সমাজকে শিক্ষণীয় দিকগুলো তুলে ধরার জন্য, বা কোনও সোশ্যাল মেসেজ দেওয়ার জন্য অনন্য, কিন্তু কোথাও কি মনে হয়, এখন এই দুটো পেশার কন্ঠ রোধ করে দেওয়া হচ্ছে?
প্রথম কথা হচ্ছে অভিনয় বিষয়টা অর্থাৎ অভিনেতা বা অভিনেত্রী, একটা গোটা সিনেমায় বা ফ্লোরে সবথেকে হাত পা বাঁধা থাকে এদেরই। সবার সঙ্গে সবার কথা এবং মতামত মিলে গেলে তারপর আমাদের অভিনয় করা। আমরা কী করতে পারি বলোতো? একটা ভাল চরিত্র পেয়েছি আমরা সেটা একটু কাজে করে দেখাতে পারি। কিন্তু, এই যে সোশ্যাল মেসেজ বা বার্তা এগুলো কিন্তু আমরা করি না। এটা আমাদের হাতেই নেই। পরিচালক কী বলতে চেয়েছে সেটা দেখতে হয়। সব মিলিয়ে এটা পুরো ক্রিয়েটিভ দলের হাতে থাকে।
নতুন সম্পর্ক না নতুন রিলিজ, কোনটা বেশি ভাবায়?
দুটো সমানভাবে ভাবায়। কারণ, দুটো দিকেই আমার মন থাকবে। তাই, যেদিকে মন দেব সেটাই ভাবাবে।
ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস হঠাৎ করে নাকি বরাবর ছিল?
ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস জিনিসটা অবশ্যই কিছু কারণে তো এসেছেই। এরকম কিছু না যে বাবা মা অভ্যাস ধরিয়েছিলেন বা কিছু। আগে পূজা পার্বণে যোগ দিতাম, ভাল লাগত। কিন্তু এখন সম্পূর্ন নিজের মন থেকে। আসলে, আমি যেটা করি সেটা মন দিয়ে করি।
আক্ষেপ আছে মধুমিতার?
না, নেই! জীবনে হয়েছে অনেককিছু। কিছু ভুল করেছি। কিন্তু হ্যাঁ, যেটাই ঘটেছে সেটা থেকে অনেককিছু শিখেছি। ভাল খারাপ সবদিকটা এক্সপ্লোর করেছি। তাই, আক্ষেপ রাখি না।
একটা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে গিয়েছ প্রায় অনেক বছর, তাহলে নতুন সম্পর্কে জড়াতে এত সময় লাগল কেন?
হাসি .... হে ঈশ্বর! দেখো, সম্পর্ক থেকে বেড়িয়েছি তো ২০১৯ সালে। কিন্তু যখন শুরু করলাম আবারও জীবনটাকে নতুন করে গোছাতে, তখন অনেককিছু চলছিল। কিন্তু আমি না সত্যিই ভাবিনি যে কী একটা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে নতুন আরেকটা। আমি এটাও ভাবিনি যে আমার কোনও প্রেমিক থাকবে বা কিছু। এরকম কোনও ব্যাপার ছিল না। যেটা হয়েছে দেবমাল্যর সঙ্গে, আমি সেটাও প্ল্যান করিনি। জাস্ট গিয়ে গিয়েছে। ওর আসার ছিল, তাই এসে গিয়েছে। যদি ক্লিক না করত, এমন কোনও ভাবনা ছিল না যে করতে হবেই বা কিছু। এতবছর কেন সময় লাগল, সেটা কিন্তু না। মুভ অন আমি আগেই করে গিয়েছিলাম। কিন্তু, এই যে এতবছর পরে কিছু শুরু করার ব্যাপার, এটা আমি প্ল্যান করিনি।
বিয়ের কোনও প্ল্যানিং নেই? তারকাদের বিয়ে নিয়ে তো এখন খুব চর্চা....
বিয়ে তো অবশ্যই করব। কিন্তু, এখনও ভাবিনি। অবশ্যই হবে। কারণ, আমরা দুজনেই বিয়ে বিষয়টা নিয়ে খুব সিরিয়াস। তাড়াতাড়িই হয়তো হবে। লেখা নিশ্চই আছে বলেই হবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তারকারা সক্রিয় এবং খুব সহজে এক্সেসেবল, এটা কি স্টারডমের ওপর প্রভাব ফেলে?
যেকোনও কিছু মাথায় নিলেই সেটা এফেক্ট করবে। আমি কিছু না বললেও সোশ্যাল মিডিয়া থাকবে, না বললেও থাকবে। তাই, এটা নিয়ে আমি ভাবি না। সোশ্যাল মিডিয়াতে আমি সেলিব্রিটি এটা ম্যাটার করে না। যারা ফলো করে তাঁদের বিষয়টা ম্যাটার করে। কারণ, নেগেটিভিটি নিয়ে নেতিবাচক কিছু লিখলেও তাঁরা লিখছে। সেটা সোশ্যাল মিডিয়ায়। আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে না। তোমার আমায় নিয়ে কিছু মতামত থাকতেই পারে।
রাজনীতির মঞ্চে এখনও উপস্থিতি নেই কেন মধুমিতার?
করতে চাই না বলে। কারণ, আমি যে কাজটা করব খুব মন দিয়ে করব। তাই, যদি কোনোদিন আমায় রাজনীতির মঞ্চে দেখা যায় তাহলে সেটা আমি খুব মন দিয়ে করব। ভাল করে বুঝে, পড়াশোনা করে তারপরেই করব। নাহলে আমি করব না।