Mahanayak Uttam Kumar: অভিনেতাদের জীবন কতটা আন প্রেডিক্টেবল সেটাই বোধহয় বুঝিয়েছিলেন উত্তম কুমার। তিনি যেভাবে জীবনের নানা রং এবং অভিনেতা হিসেবে যা যা দেখেছিলেন, সেটাই তাঁকে অনেক পাল্টে দিয়েছিল। এমনকি মহানায়ক হয়েও তিনি তাঁর সন্তানকে এক বহু মুল্যবান পাঠ পড়িয়েছিলেন। গৌতম, বাবার দেখানো পথেই চলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু...
সন্তান গৌতমকে নিয়ে তিনি মাঝেমধ্যেই বেড়াতে যেতেন। এবং তাঁর সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনা করতেন উত্তম। তাঁর আমতলার জমিতে পর্যন্ত ছেলেকে নিয়ে গিয়েই নানা গল্প বলেছিলেন। মহানায়ক ছেলেকে এক মোক্ষম কাজ করতে না পর্যন্ত করেছিলেন। বলা উচিত এই ইন্ডাস্ট্রিতে আসতে না করেছিলেন। কিন্তু কেন? গল্প জানা যায়, অভিনেতা আমতলায় হাসিমনগরে এক বিরাট জমি কিনে রেখেছিলেন। তিনি নাকি সেখানে একটা বাংলো পর্যন্ত বানাতে চেয়েছিলেন। নাম রাখতে চেয়েছিলেন ছায়ানট।
Satyajit Ray: মহাভারতের কোন বিষয়ে নজর ছিল সত্যজিৎ রায়ের? ভারতবাসীর …
কিন্তু এই নাম রাখার কারণ? সেই কথাই ছেলে গৌতমকে বলেছিলেন তিনি? এই নামকরণের অর্থ বোঝাতে গিয়ে মহানায়ক তাঁর ছেলেকে বলেছিলেন জানো গৌতম, সঙ্গীতপ্রেমীরা এই বাড়ির নাম দেখে ভাববে এটা কোন সঙ্গীতশিল্পীর বাড়ি। কারণ, 'ছায়ানট' একটা রাগের নাম। অন্যদিকে সিনেপ্রেমীরা, মনে করবে কোনও অভিনেতার বাড়ি। কারণ, ছায়ানট -এর আরেক অর্থ, ছায়ার যে নট অর্থাৎ অভিনেতা। কিন্তু, এই অভিনয় জগত থেকেই তাঁর ছেলেকে দূরে রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। গৌতম অভিনয় দুনিয়ায় পা রাখতে চেয়েও বাবার কথামতই নাট্যমঞ্চের রোশনাই থেকে দূরে ছিলেন।
ছেলেকে কেন দূরে থাকতে বলেছিলেন? গৌতমের অন্ধ অতীত ছবিতে অভিনয় করার কথা ছিল। কিন্তু বাধা দেন মহানায়ক খোদ। নিজে এই রংচঙে জীবন দেখেছিলেন। তাই ছেলের জীবন নষ্ট হোক, সেটা চাননি তিনি। গৌতমকে উত্তম বলেন, "শোনো গৌতম, অভিনেতার জীবনটা অনেকটা আতশবাজির মতো। যখন জ্বলে, তখন চারদিক আলো করে রাখে। আর তখন অভিনেতার ভক্তরা, বন্ধু-বান্ধব আর আত্মীয়-স্বজনরা তাকে ভালবেসে ঘিরে রাখে। কিন্তু পরে সেই অভিনেতার সব যখন নিভে যায়, তখন তাকে কেউ মনে রাখে না। পা দিয়ে সরিয়ে দেয়। তাই আমি চাইনা তোমার ওই দশা হোক।"