কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে টুইট করে নিঃসন্দেহে গেরুয়া শিবিরের বিড়ম্বনা বাড়িয়েছেন পপস্টার রিহানা এবং পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। আন্তর্জাতিক ময়দানের এই আওয়াজ তোলাকে 'অনধিকার চর্চা' হিসেবেই দেখছেন মোদী সরকারের নেতা-মন্ত্রীরা। সেই প্রেক্ষিতেই দুই খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বের সমালোচনা করে সোচ্চার হয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar), করণ জোহর (Karan Johar), অক্ষয় কুমার (Akshay Kumar), অজয় দেবগন (Ajay Devgn), শচিন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar), বিরাট কোহলি (Virat Kohli) থেকে লাইনা নেহওয়ালদের মতো ব্যক্তিত্বরা। প্রত্যেকের মুখেই একসুর- “ভারত-বিরোধী মিথ্যা কোনও প্রোপাগান্ডার ফাঁদে পা দেওয়া উচিত নয়। একত্রিত হয়ে এই বিদেশি অপপ্রচার রুখতে হবে।” তারকাদের মুখে এমন ‘কেন্দ্র-তোষণনীতি’ শুনে ক্ষান্ত থাকেনি আমজনতা থেকে বিরোধী শিবিরগুলি। প্রশ্ন তুলেছেন যে, কীসের জন্য তাঁরা বিজেপিকে সমর্থন করছেন? এবার সেই প্রেক্ষিতেই বড় ঘোষণা মহারাষ্ট্র সরকারের।
মহা-সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ (Anil Deshmukh) সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, তারকাদের টুইট নিয়ে এবার তদন্তে নামা হবে। তাঁর কথায়, বিজেপি সরকারের চাপেই কি কৃষক আন্দোলনের বিরুদ্ধে টুইট করতে বাধ্য হয়েছেন তারকারা? তাঁদের উপর কি কোনওরকম চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল? সেই বিষয়গুলিই এবার খতিয়ে দেখবে মহারাষ্ট্র সরকার।
এর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি পয়েন্টও তুলে ধরেছেন অনিল দেশমুখ। তাঁর কথায়, "১) লতা মঙ্গেশকর ও বিরাট কোহলির টুইটে 'Amicable' শব্দটির উল্লেখ রয়েছে। ২) সুনিল শেট্টি তাঁর টুইটে বিজেপি নেতা হিতেশ জৈনকে ট্যাগ করেছেন। ৩) অক্ষয় ও সাইনা নেহওয়াল মোদী সরকারকে সমর্থনে হ্যাশট্যাগ দিয়েছেন। ৪) উপরন্তু প্রত্যেকের টুইটেই #IndiaAgainstPropaganda ব্যবহৃত হয়েছে। ৫) এছাড়া তারকাদের টুইটের যে সময় দেখাচ্ছে, তাতে পরিষ্কার যে মোদী সরকারের অঙ্গুলি হেলনেই তাঁরা এই টুইট করতে বাধ্য হয়েছেন।"
বেশ কয়েকটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে ওই খবর প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় জোর শোরগোল। লতা মঙ্গেশকর, অক্ষয় কুমার, অজয় দেবগন, সুনীল শেট্টি, বিরাট কোহলি এবং যাঁরা যাঁরা মোদি সরকারের হয়ে ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ার দাবি তুলেছেন, তাঁদের প্রত্যেকের সোশ্যাল অ্যাকাউন্টই এবার উদ্ধব ঠাকরে পরিচালিত শিব সেনা সরকারের আতস কাঁচের নিচে। অন্যদিকে মহারাষ্ট্র নবনির্মান সেনা প্রধান রাজ ঠাকরেও এই বিষয়ে আঙুল তুলেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে। তাঁর কথায়, কেন্দ্রের মোটেই উচিত ছিল না লতা মঙ্গেশকর কিংবা শচীন তেন্ডুলকরদের মতো কিংবদন্তী তারকাদের এই বিষয়ে জড়ানো।