বুধবার দুপুরে এসভিএফ-এর অফিসের হইচই। জোড়া সিনেমার মুহুরৎ। তার থেকেও বড় বিষয় অরিন্দম শীল ও ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়- দুই পরিচালকের ছবির মুহরত একই দিনে। আর নায়কও এক- আবীর চট্টোপাধ্যায়। বছর চারেক বাদে আবারও অরিন্দমের হাত ধরে পর্দায় রহস্য উন্মোচন করতে আসছেন সত্যান্বেষী। আর অরিন্দমের ব্যোমকেশ যখন, তখন আবির চট্টোপাধ্যায়-ই মূল চরিত্রে শেষ কথা! এবারও তার অন্যথা হয়নি। ওদিকে ধ্রুবর গোয়েন্দা গল্পের বাজিও আবির-ই।
শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'বিশুপাল বধ' এবারের ব্যোমকেশ-এর প্রেক্ষাপট। নাম যদিও এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে কাস্টিং এক রেখে বুধবার এসভিএফ-এর অফিসে শুভ মুহুরৎ-টা সেরে ফেললেন অরিন্দম। ব্যোমকেশ-এর ভূমিকায় আবির চট্টোপাধ্যায়। স্ত্রী সত্যবতীর চরিত্রে সোহিনী সরকার। তবে অজিতের চরিত্রে এবার চমক রেখেছেন পরিচালক। ব্যোমকেশের ছায়াসঙ্গীর ভূমিকায় দেখা যাবে সুহত্র মুখোপাধ্যায়কে। যিনি এর আগে গোরার মতো একাধিক সিরিজে অভিনয় দক্ষতায় নজর কেড়েছেন। এইপ্রথম শুধুমাত্র কলকাতা-জুড়ে হবে ব্যোমকেশের শুটিং।
জোড়া মুহুরৎ নিয়ে উচ্ছ্বসিত ধ্রুব-অরিন্দম ইন্ডাস্ট্রির দুই পরিচালকই। অরিন্দম জানালেন, আজ পর্যন্ত যতগুলো সিনেমা করেছি ব্যোমকেশ আমার সবথেকে কাছের। এসভিএফ ছাড়া ব্যোমকেশ কাহিনীগুলোকে পর্দায় এত বড়মাপে তুলে ধরা সহজ হত না। অতঃপর এসভিএফ-এর যে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে আমার প্রতিটা ব্যোমকেশ ছবির নেপথ্যে, তা অনস্বীকার্য। তবে এবারের ব্যোমকেশ নিয়ে আরও উচ্ছ্বসিত, কারণ এসভিএফ-এর সঙ্গে ক্যামেলিয়া প্রযোজনা সংস্থা গাঁটছড়া বেঁধেছে এই সিনেমাকে আরও সার্থক করে তোলার জন্য।
অরিন্দম আরও জানালেন, "আমার চতুর্থ ব্যোমকেশ সিনেমা যেহেতু শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা অসমাপ্ত গল্প নিয়ে। তাই এটার ক্লাইম্যাক্স সাজানোটা আমার আর পদ্মনাভর (দাশগুপ্ত) জন্য বেজায় চ্যাালেঞ্জিং ছিল। আশা করি, আগের ছবিগুলোর মতোই দর্শকদের এই গল্পটাও পছন্দ হবে। তবে হ্যাঁ, আমি এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ করব, ক্যামেলিয়া ও এসভিএফ এই দুই প্রযোজনা সংস্থার গাঁটছড়া বাঁধার বিষয়টা কিন্তু বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভাল।"
তবে এদিনের শো-স্টপার আবির। কারণ জোড়া সিনেমার দায়িত্বে তিনি। এদিকে আবির যখন অরিন্দম শীলের 'ব্যোমকেশ', তখন ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'সোনাদা'ও তিনিই। এদিন 'কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন' ছবির মুহুরৎ-ও হল। এবারও সোনাদা আবির চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গী 'ঝিনুক' ইশা সাহা আর ভাইপো 'আবির' অর্জুন চক্রবর্তী। 'কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন' ছবিতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন সৌরভ দাস। বাংলার ইতিহাস নিয়ে বরাবরই কৌতূহল পরিচালকের। 'গুপ্তধনের সন্ধানে' কিংবা 'দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন'-এও বাংলার ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে রহস্য-রোমাঞ্চের জাল বুনেছিলেন ধ্রুব। ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’-এও যে তার অন্যথা হবে না, হলফ করে বলাই যায়। এবার আরও বড় পরিসরে রহস্যের সমাধান করবেন পরিচালক।
এবারের প্রেক্ষাপট কর্ণসুবর্ণের গৌরবময় অধ্যায়। বাংলার প্রথম স্বাধীন শাসক শশাঙ্কের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। হিউয়েন সাঙের লেখায় যার উল্লেখ পাওয়া যায়। ভৌগোলিক অবস্থানের নীরিখে সেই কর্ণসুবর্ণ আজকের মুর্শিদাবাদ। সেখানেই এবার অ্যাডভেঞ্চারে যাচ্ছেন সোনাদা। বুধবার তার শুভ মুহরত হয়ে গেল। ২৭ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে শুটিং।
পরিচালক ধ্রুব জানালেন,"গুপ্তধন সিরিজ সবসময়েই আমার কাছে ভীষণ স্পেশ্যাল। এসভিএফ ও মূলধারার বাংলা সিনেমার সঙ্গে গুপ্তধনের সন্ধানে ছবিটা দিয়েই আমার যাত্রাপথের শুরুয়াৎ। গোয়েন্দা সোনাদার আগের দুটো অ্যাডভেঞ্চার যেমন দর্শকরা বড়পর্দায় উপভোগ করেছেন, এবারও আশা করি তাঁদের ভাল লাগবে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন