Mamta Kulkarni-Lalu Prasad yadav: অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নি সদ্য নিজের মহামান্ডলেশ্বর পদ খুইয়েছেন। তাঁর সন্ন্যাসিনী জীবন শুরু হতেই নানা বিতর্ক জন্ম নেয়। কী করে একজন মহিলা তিনি কিন্নর আখড়ার পদে যোগ দিয়েছিলেন সেই নিয়েই নানা প্রশ্ন উঠেছিল। কেউ কেউ তো এমন দাবিও করেছিলেন যে একজন বলিউড গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড এর নায়িকা যারা সাধু সঙ্গ নিয়ে কোনও জ্ঞান নেই তাঁকে কী করে কিন্নর আখড়ার লক্ষী নারায়ণ এমন একটি পদ দিতে পারেন। যদিও সেই বিতর্ক বেশিদিন স্থায়ী হয়নি, বরং পদ খুইয়েছেন তিনি।
এবং তারপরই তাঁকে একটি শোয়ে উপস্থিত হতে দেখা যায়। মমতা জানিয়েছিলেন, তিনি নাকি নিজেই নিজের পিণ্ডদান করেছিলেন সঙ্গমে। তারপর, বেশ কিছু নিয়মাবলীর মধ্যে দিয়ে গিয়েই পা রেখেছিলেন সন্ন্যাস জীবনে। নতুন নামও হয়েছিল তাঁর। শ্রী ইয়ামই নন্দগিরি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। কিন্তু এবার তিনি নিজের আগের জীবন থেকে নানা তথ্য জানাতে শুরু করেছেন। এমনকি বিহারের লালু প্রসাদের নামেও তিনি যে এমন কিছু বলবেন..
অভিনেত্রীকে একবার যাত্রা করতে হয়েছিল বিহারে, এবং সেখানে গিয়ে যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি, সেকথাও প্রকাশ্যে জানিয়েছেন। অভিনেত্রী বলেন, "আমি গোয়ায় ছিলাম। আমার সেক্রেটারি তখন আমায় ফোন করে বলল যে তোমায় এক্ষুনি বিহার যেতে হবে, একটি অনুষ্ঠানের জন্য।" কিন্তু আগামাথা কিছু না ভেবেই তিনি দশ জনের একটা টিম নিয়ে সেখানে রওনা দেন। ভাবতেও পারেননি তাঁর জন্য ঠিক কী অপেক্ষা করছে। এবং পরিস্থিতি কতটা সঙ্গীন সেটাও বুঝতে পারেন, যখন সেখানে গিয়ে পৌঁছান। অভিনেত্রী সেখানে গিয়ে যা যা দেখেছিলেন, আজও সেইসব ভয়ঙ্কর স্মৃতি।
তিনি সাফ জানান, লালু প্রসাদ কে তিনি জানতেন না। কিন্তু বিহারে পৌঁছে দেখলেন, সবকিছুই কেমন যেন থমকে গিয়েছে সেখানে। অভিনেত্রী বললেন, একটা অদ্ভুত জায়গার মধ্যে দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে তখন, আমি ড্রাইভারকে বললাম একটু থামাও, ঘুরে দেখি। উনি বললেন, না, এখানে ম্যাডাম গাড়ি থামানো যাবে না। কারণ, এটা নকশাল এরিয়া। আমি তো হয়ে কাঁপছি, আমার বুক ধড়ফড় করছে।" এখানেই থামলেন না তিনি। আরও বলেন, যে হোটেলে পৌঁছে কী দেখেছিলেন তিনি?
তাঁর কথায়, হোটেলে পৌঁছে দেখলাম প্রায় ১০০ জন বন্দুকধারী পুলিশ পুরো ব্যবস্থা ঘিরে রেখেছে। তারপর, দেখলাম যে ঘরে আমি তৈরি হব, ওখানে কাতারে কাতারে লোক! আমি দাঁড়ানোর জায়গা পাচ্ছিলাম না। যদিও এসব দেখে নিজের সেক্রেটারিকে প্রশ্ন করে বসেছিলেন তিনি, কেন বিহারে অনুষ্ঠান রাখা হল সেই নিয়েই। কিন্তু, যখন জানতে পারলেন যে দেরি হয়ে যাচ্ছে এবং তিনি ফ্লাইট মিস করতে পারেন। ভয়ে আরও আত্মারাম খাঁচা তাঁর। একবার প্লেন মিস হলে ৭ দিনের জন্য সেখানে আটকে যেতে হবে, ভেবেই তাঁর বুক দুরুদুরু করছিল। অভিনেত্রী বলেন...
আমি সারাক্ষন মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করছিলাম।।যখন প্লেন টেক অফ করল, সকলে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। সবাই হাততালি দিতে শুরু করেছিল। এখানেই শেষ নয়। লালুপ্রসাদ যাদব আসলে কে, এই নিয়ে কোনও ধারণাই তাঁর ছিল না। কিন্তু, বিখ্যাত এই রাজনীতিবিদ মমতাকে এক বিশেষ জিনিস অফার করেছিলেন জানা আছে? এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন... "আমি চিনতাম না লালু প্রসাদকে। যতদিন না পর্যন্ত আমায় তিনি রাজ্য সভার এক বিশেষ সদস্যপদ এবং সিট অফার করেছিলেন। যদিও আমি তাঁকে বহুদিন আগে না করেছিলাম যে রাজনীতিতে আমার কোনও ইচ্ছে নেই। এবং এখনও নেই।"
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ২০ বছর পর বিদেশ থেকে ফিরেই তিনি যে প্রয়াগ রাজে গিয়ে নিজের পিন্ডদান করে সন্ন্যাস নিয়ে নেবেন এমনটা যেন কেউ ভাবতে পারেননি। বরং বেশিরভাগ ভেবেছিলেন যে হয়তো বা তিনি ফের একবার ইন্ডাস্ট্রিতে জুড়তে চলেছেন। তবে, সারা দেশের সাধু সমাজের তরফে যে ধরনের বিতর্ক শুরু হয়েছিল তাতেই তিনি নিজের সদস্য পদ হারিয়েছেন।