মনোজ বাজপেয়ীর পরিবার পাঁচ বছর অপেক্ষা করেছে কবে অভিনেতা তাঁর নিজের যোগ্যতায় এই সম্মানে সম্মানিত হবেন। শেষ পর্যন্ত সেই দিন এল। ২৫ বছরের দীর্ঘ কেরিয়ারের পর পদ্মশ্রী সম্মানের জন্য নির্বাচিত হলেন মনোজ বাজপেয়ী। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ডট কমের সঙ্গে নিজের অনুভূতি ভাগ করে নিলেন অভিনেতা। বললেন, "অন্য সব পুরস্কার দেওয়া হয় নির্দিষ্ট একটি ছবিতে ভাল কাজ করার জন্য। কিন্তু পদ্মশ্রী আপনার সারাজীবনের যাত্রাকে সম্মানিত করতে দেওয়া হয়। এটা কোনো একটি ছবির প্রতি আপনার অবদানের স্বীকৃতি নয়, এটা শিল্পক্ষেত্রে আপনার আবদানের মূল্যায়ণ। আমার মতো একজন শিল্পীর জন্য এটা বিরাট পাওয়া।"
তিনি আরও বলেন, "যে মানুষগুলোর যাত্রাপথ দীর্ঘ ও কঠিন ছিল, সেই মানুষগুলোর থেকে নিজেকে কোথাও আলাদা করে দেখছি না। তাই যখন আমি এরকম একটি রাষ্ট্রীয় সম্মান পাই তখন আনন্দ তো হয়ই। মনে হয়, কোথাও কোনো ভাল কাজ করেছি, যে কারণে কারও ঘনিষ্ঠ না হওয়া সত্ত্বেও এই প্রাপ্তি।"
শুরুটা হয়েছিল ১৯৯৪ সালে একটি বিশেষ চরিত্রের জন্য জাতীয় পুরস্কার পাওয়া থেকে। তারপরে শেখর কাপুরের ছবি ব্যান্ডিট কুইনে মনোজ বাজপেয়ীর অভিনয়ের ক্ষিদে প্রকাশ্যে আসে।
তারপরে কিছু বছরের অপেক্ষা, রাম গোপাল ভর্মার 'সত্য' মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বলিউড এক নতুন অভিনেতা পেল। ভিকু মাত্রে হিসাবে আলোড়ন তুললেন মনোজ। এরপর থেকে পদে পদে নিজেকে প্রমাণ করেছেন তিনি। যখন মানুষ মনোজের স্টারডাম থেকে ব্যবসা করার ছুঁতো খুঁজছেন, ঠিক সেসময়ই স্বাধীন শিল্পী হিসাবে নিজের পছন্দের কথা স্পষ্ট বুঝিয়েছেন তিনি। যার প্রমাণ 'শূল', 'জুবেইদা', 'পিঞ্জরের' মতো ছবি।
আরও পড়ুন, অস্কার দৌড়ে ‘পিরিয়ড. এন্ড অফ সেনটেনস’
শুক্রবার সন্ধ্যেয় পদ্মশ্রী প্রাপকদের তালিকা বেরোনোর পর থেকেই বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীদের অভিনন্দন জানানো বন্ধ হয়নি। যেন মনে হচ্ছে তাঁর চারপাশের মানুষগুলো পুরস্কার পেয়েছেন, এবং এই অনুভূতিটাই সবথেকে বড় পাওয়া তাঁর কাছে। মনোজ বলেন, ''কাল রাত থেকে বন্ধু, সহকর্মী এবং ফ্যানদের কাছ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পাচ্ছি...বুঝতে পারছি খবরটা পেয়ে মানুষ ভীষণ খুশি। তাঁদের মনে হচ্ছে, সম্মানটা তাঁরাই পেয়েছেন। সুতরাং, যাঁরা আমার সঙ্গে জড়িত, এমন প্রত্যেকটা মানুষ যাঁরা মনে করছেন পুরস্কারটা তাঁরা জিতেছেন, এই ভাবনাটাই আমার কাছে সর্বোচ্চ সম্মান।"
আর পরিবার ও বন্ধুদের মধ্যে যাঁরা মনে করছেন সম্মানটা একটু দেরীতে পেলেন অভিনেতা, তাঁরা নাকি বলছেন, ''দের আয়ে দুরস্ত আয়ে''। তবে এটা কোনো অভিযোগ নয়। ''শেষমেষ সম্মানটা পাচ্ছি, আমি দ্বিগুণ খুশি''।
Read the full story in English