মুক্তি আসন্ন 'মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি' ছবির। তবে টেনশন নেই পরিচালকের। পুজোয় ছবি মুক্তির পরই পাড়ি দিচ্ছেন বিদেশে। তবে এদিন চন্দ্রবিন্দুর গায়ক জানালেন, কেন ছবি বানানোর জন্য শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের এই বইকেই বেছে নিয়েছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে এই নিয়েই জমে উঠল আড্ডা।
মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি করার কারণ?
কেন মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি করলাম! তার একটা বড় কারণ হল শীর্ষেন্দু দার লেখাগুলোর সঙ্গে তো আমাদের বেড়ে ওঠাটা জড়িয়ে আছে। আর শীর্ষেন্দু দাই আমার মনে হয় এই প্রজন্মের শেষ প্রতিনিধি, যিনি এরকম একটা আধুনিক রূপকথা তৈরি করতে পেরেছেন। এই ছবিটা করার ইচ্ছে অনেকদিনের।
কিন্তু পুজোর এত ভিড়ের মধ্যেই রিলিজের সিন্ধান্ত নিলেন?
পুজোর সময় লোকে পারিবারিক ছবি দেখতে পছন্দ করেন। আমার আগের দুটো ছবি ইউ/এ সার্টিফিকেট পাওয়া ছবি, যার মধ্যে প্রথম ছবিতে বাচ্চারা থাকলেও অ্যাডাল্ট কনটেন্ট ছিল। দ্বিতীয়টাতে তো ছিলই। সেক্ষেত্রে এই ছবিটা নির্মল আনন্দ দেবে। শিবুদাও বোধহয় পারিবারিক ছবি দেখানোর ইচ্ছেতেই পুজোর সময়টা বেছে নিয়েছে।
মনোজকে খুঁজে পাওয়ার জার্নিটা কেমন ছিল?
আমি ভাবছিলামই, কে হতে পারে মনোজ। আর 'চ্যাপলিন' ছবিতে সোহমকে দেখেছিলাম, তখন ও ছোট ছিল। তারপরে ওকে দেখেছিলাম ঋদ্ধির সঙ্গে একটা হিন্দি ছবিতে, খুব ভাল লেগেছিল ওর অভিনয়। বলে রেখেছিলাম, "আমি ছবি করব, তুই দুম করে অন্য কোন ছবিতে সাইন করিস না"। ও সিরিয়ালসি নেয়নি, ভেবেছিল অনেকেই তো বলে। পরে ছবিটা করার সময় যথারীতি সোহমেরই ডাক পড়েছিল। আর...
বলুন...
মনোজের দাদা সরোজকে খুঁজে পাওয়াও আরেক গল্প। দোলনাতে (দোলনা ডে স্কুল) আমার ছেলে জুজুও পড়ে। সেখানে 'লায়ন কিং' বলে একটা নাটকে পূরব (শ্রীকান্ত আচার্যর ছেলে) অভিনয় করেছিল। তারপরে অর্ণাদি (শীল) কে বলি ওকে নিয়ে আমি ছবি করব।
ডাকাতের ভূমিকায় শিলাজিতের কথা মনে হল কী করে আপনার?
কারণ কলকাতায় শিলাদার থেকে ভাল ডাকাত আর কেউ নেই। ও তো কাস্টমাইসড ডাকাত। 'ওপেন টি বায়োস্কোপে' ভেবেও শিলাদা কে কাস্ট করতে পারিনি। দুঃখ ছিল শিলাদা'র, অনিন্দ্য কথা দিয়েও রাখে নি। সেই খামতি পুরণ করে দিয়েছি। আসলে সব দিক থেকেই ডাকাতের চরিত্রে ওকেই মানিয়েছে।
কিন্তু আবিরের চরিত্রটায় রহস্য ধরে রাখার কারণ...
'মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি' সবার পড়া উপন্যাস। ফলে প্রত্যেকে জানেন কে কোন চরিত্রটায় রয়েছে। আবিরের চরিত্রটাও বোঝাই যাচ্ছে, কিন্তু ছবির স্বার্থে এটা করেছি। আর আমারও একটা ঝকঝকে মুখ দরকার ছিল। বাংলা বাজারে সেটা আবির ছাড়া কে হতে পারে? আবিরকে কিছুটা মোল্ড করতে চেষ্টা করেছি।
এ ছবির লোকেশন?
লোকেশন তো সবথেকে বড় চরিত্র। আর এটা কাস্ট করতে আমার ভালই লেগেছে। শীর্ষেন্দু দার লেখার আশ্চর্য যে ইউটোপিয়ান একটা জগৎ, সেটা কোথায়? লেখকেও এ প্রশ্ন করেছি আমি। বুঝতে পেরেছিলাম বাবার বদলির চাকরির সূত্রে অনেক জায়গায় গিয়েছেন তিনি। সেইগুলোই লেখায় এসেছে। আর পশ্চিম মেদিনীপুরে এখনও শুটিং কম হয়। কারণটা ইনফ্রাস্ট্রাকচারের অভাব। গনগনি বলেই কিন্তু ডাকাতের ডেরা এত সত্যি হয়েছে।
এত হেভিওয়েট পরিচালকরা পুজোতে একসঙ্গে...
প্রত্যেকটা ছবি চলে পরিচালকের আগের ছবির নিরিখে। আমারও আগের ছবি দুটো হিট। আর এটা বাঙালির শেষ রূপকথা। ফলে আমার দর্শক ছবিটা দেখতে আসবেন। আর ভয়-টয় পাই না আমি। বাকি ছবিগুলোও অবশ্যই সবাই দেখুন। আসলে পুজোর সময়টা অঘোষিত ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। তাই ছবিটা দেখা নিয়ে দুশ্চিন্তা নেই। আসলে সারাক্ষণ তো ঘুরতে পারবেন না, পা ব্যথা করবে, তাই হলে বসতেই হবে।