/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/28/yogesh-tripathi-2025-08-28-18-56-59.jpg)
চেনেন এঁকে?
মুম্বাইয়ের ঝলমলে দুনিয়া বরাবরই বহু উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিনেতাকে টানে। কেউ স্বপ্ন দেখে পরবর্তী অমিতাভ বচ্চন, কেউ গোবিন্দা, আবার কেউ বা শাহরুখ খান হওয়ার। কিন্তু প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মুম্বাইতে এলেও, তাদের মধ্যে খুব কমজনই সফল হতে পারেন। সেই স্বপ্ন নিয়েই উত্তরপ্রদেশ থেকে মুম্বাই এসেছিলেন এক অভিনেতা। নিজের জেদে একাই পথ চলা শুরু করেছিলেন তিনি। আজ প্রায় ২০ বছর পর তিনি এমন জায়গায় পৌঁছেছেন, যেখানে একজন অভিনেতা হিসেবে প্রতি মাসে প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা আয় করেন।
প্রসঙ্গে যোগেশ ত্রিপাঠি। যোগেশের পরিচিতি মূলত জনপ্রিয় ধারাবাহিক ভাবিজি ঘর পর হ্যায়-এর চরিত্রের জন্য। সেখান থেকেই তিনি পান নিজের আলাদা শো- 'হাপ্পু কি উলটান পল্টন'। সম্প্রতি তিনি ইউটিউবার সিদ্ধার্থ কান্নানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনসংগ্রামের কথা শেয়ার করেন।
তিনি জানান, শুরুতে থিয়েটার করেই অভিনয়ের প্রথম পাঠ নেন। তবে মুম্বাই আসার আগে, রেলওয়ের একটি পরীক্ষার কারণে, ১৮ ঘণ্টা সাধারণ কামরায় ওয়াশবেসিনের পাশে দাঁড়িয়ে কাটাতে হয়েছিল। অবশেষে ২০০৪ সালে স্থায়ীভাবে মুম্বাই আসেন। ২০০৭ সালে প্রথম জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনে সুযোগ পান তিনি।
সেই তিন বছরের লড়াই ছিল ভীষণ কঠিন। কখনও ১৫০ টাকায় কলম বিক্রি করেছেন, কখনও ব্যাকগ্রাউন্ড অভিনেতা হিসেবে কাজ করে ১৫০০ টাকা রোজগার করেছেন। প্রথম চাকরিতে পেয়েছিলেন মাত্র ৯৫ টাকা। থিয়েটারে প্রতিদিনের মজুরি ছিল ৭৫ টাকা। তবে ২০০৭ সালে একটি বিজ্ঞাপন হিট করার পর তাঁর হাতে আসে টিভি শো এফআইআর-এর ছোট ভূমিকা, যেখানে তিনি পান ২৮০০ টাকা।
কিন্তু তার পর থেকে জীবন একেবারেই বদলে যায়। ২০১৫ সালে তিনি ‘হাপ্পু সিং’-এর চরিত্রে ভাবিজি ঘর পর হ্যায়-তে যোগ দেন। প্রথমদিকে প্রতিদিন মাত্র ৮,০০০ টাকা পেতেন এবং মাসে ২-৩ দিনের কাজ থাকত। ফলে শুরুতে এক মাসে শো থেকে আয় ছিল প্রায় ২৪ হাজার টাকা। ধীরে ধীরে চরিত্রের জনপ্রিয়তা এতটাই বেড়ে যায় যে ২০১৯ সালে তাঁকে ঘিরেই বানানো হয় স্পিন-অফ হাপ্পু কি উলটান পল্টন।
এখন যোগেশ প্রতিদিন প্রায় ৬০,০০০ টাকা উপার্জন করেন। কখনও কখনও দুই শো-তেই একসঙ্গে কাজ করার কারণে মাসে গড়ে ৪০ দিনের বেতন পান তিনি (টিভি ইন্ডাস্ট্রিতে একদিনে একাধিক শিফটে কাজ করা যায়, এবং প্রতিটি শিফটকে একদিন হিসাবে ধরা হয়)। হিসেব কষে দেখা যায়, মাসে তাঁর আয় দাঁড়ায় প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা। কিন্তু, একসময় নিজের অর্থের স্বার্থে তিনি পেন পর্যন্ত বিক্রি করেছেন।
এছাড়াও, তিনি জানান মুম্বাইয়ে তাঁর চারটি ফ্ল্যাট রয়েছে। কারণ প্রথমদিকে শহরে এসে তিনি ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাসে (সিএসটি) চার রাত কাটিয়েছিলেন। তখনই নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, একদিন অবশ্যই তিনি চারটি বাড়ি কিনবেন। সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন তিনি। যোগেশের দাবি, এই সব বাড়ি কিনতে তিনি কখনও ঋণ নেননি বা ধারও করেননি।