"বিজেপিতে যোগ দিয়ে সাধু, আর দলত্যাগ করার পরই তাঁর দুয়ারে সিবিআই কড়া নাড়ল.. বাহ!", শোভন চট্টোপাধ্যায়ের (Sovan Chatterjee) গ্রেপ্তারি নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দাগলেন তৃণমূলের সাংসদ অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty)।
গত লোকসভা নির্বাচনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) হাত ছেড়ে দিল্লিতে গিয়ে 'স-বান্ধবে' গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেই সময়ে তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমোর প্রতি একাধিকবার ক্ষোভ উগড়ে দিতে দেখা গিয়েছিল শোভন-বৈশাখীকে। আসলে একুশে বাংলা দখলের লক্ষেই শোভনকে গেরুয়া শিবিরের তরফে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছিল, বলে তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ। তবে বিধানসভা ভোট আসতেই হিসেবে হল গড়মিল। বেহালা (Behala) থেকে টিকিট না পেয়ে অভিমানে 'পদ্ম-ত্যাগ' করলেন শোভন-বৈশাখী। সেই সময়ে বঙ্গ-বিজেপির (BJP) তরফেও রাজনৈতিক এই জুটির দল ছাড়াকে খুব একটা আমল দেওয়া হয়নি। তখনই কানাঘুষো তাঁদের তৃণমূলে যোগদানের খবর ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ভোটের সময় শোভন-বৈশাখীর ‘ঘর ওয়াপসি’র খবর চাউর হলেও, তা বাস্তবায়িত হয়নি। ভোট মিটতেই মাথা চাড়া দিল নারদ মামলা (Narada Scam)। আর সেই প্রেক্ষিতেই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের উপরও নারদের খাঁড়ার কোপ পড়ল। বিজেপি-ত্যাগের শাস্তিস্বরূপই কি এই গ্রেপ্তারি? প্রশ্ন তুলেছেন রাজনীতিকদের একাংশ। সেই প্রেক্ষিতেই সুর মেলালেন মিমি চক্রবর্তীও।
তৃণমূলের সাংসদ-অভিনেত্রী শোভনের নাম না নিয়েই তোপ দাগলেন কেন্দ্রকে (Central Government)। তাঁর কথায়, বিজেপিতে যোগ দিয়েই সাধু হয়েছিলেন। তবে এবার দল ছাড়তেই ঘরে সিবিআই পাঠানো হল? সেই প্রেক্ষিতে গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হওয়া মুকুল রায় (Mukul Roy) এবং শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikary) নাম না করেও মিমি যে তাঁদের গ্রেপ্তারি না হওয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন, তা বলাই বাহুল্য। গেরুয়া শিবিরের ছত্রছায়ায় থাকলেই কি সুরক্ষিত থাকা যাবে? পরোক্ষভাবে মিমি কি সেই প্রশ্নই ছুঁড়ে দিলেন!
প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে নয়া মোড় নেয় নারদ মামলা (Narada Scam)! বিনা নোটিসেই রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং বিধায়ক মদন মিত্র-সহ তৃণমূল-ত্যাগী কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে (Sovan Chatterjee) সিবিআইয়ের তরফে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় নিজাম প্যালেসে। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ৪ জনের গ্রেপ্তারি। ঘটনার জেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) খোদ ধর্ণা দিয়েছিলেন নিজাম প্যালেসের অন্দরে। এরপর চূড়ান্ত নাটকীয়তায় একবার জামিন দেওয়ার পরও জেল হেফাজতে পাঠানো হয় চারজনকে। বুধবার অবধি প্রেসিডেন্সিতেই ঠাঁই হওয়ার কথা ছিল মদন-কানন, ববি ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। কিন্তু সোমবার গভীর রাতে অসুস্থ হওয়ায় শোভন-মদনকে এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়। সকালে ভর্তি হন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও। ফিরহাদকেও শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। এসবের মাঝেই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা বারবার প্রশ্ন তুলেছেন, "এই চারজনকে যদি কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়, তাহলে শুভেন্দু কিংবা মুকুলকে নয় কেন?"