চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকার ভিত্তিতে শুক্রবার সন্ধে থেকেই রাজ্যজুড়ে আংশিক লকডাউনের কড়াকড়ি নির্দেশ দিল নবান্ন (Nabanna)। আর সেই প্রেক্ষিতেই মীর আফসার আলির (Mir Afsar Ali) বিদ্রুপ! "ভোট শেষ এখন তো সব বন্ধ করবেই", মন্তব্য মীরের। অতিমারী প্রেক্ষাপটের বাস্তবচিত্র নিয়ে কৌতুকশিল্পীর এমন কৌতুকরস দেখে মশগুল নেটজনতাও। তাই ফেসবুকে মীরের অমন কটাক্ষবাণ ছোড়ার মুহূর্তের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
তবে অভিনেতা যে একেবারে ন্যায্য কথাই বলেছেন, তা নিয়ে কিন্তু কোনও দ্বিধা নেই নেটজনতাদের। অতিমারীর চরম প্রকোপেও ভোটের রঙ্গমঞ্চে নিত্যদিন বক্তৃতা দিয়ে গিয়েছেন নেতা-মন্ত্রীরা। জনসভায় সামাজিক দূরত্ব তো শিঁকেয় উঠেইছে, উপরন্তু যোগ দিতে আসা কর্মী-সমর্থকদের মুখে মাস্কটুকু দেখা যায়নি! ফলাফলের সাক্ষী রাজ্যবাসী। বাংলায় হু-হু করে বেড়েছে সংক্রমণ। মানুষের জন্য ভোট, না ভোটের জন্য মানুষ, গত ১ মাসে তা ঠাহর করা একেবারে দায় হয়ে উঠেছিল। অনেকের মতে, এই করোনা পরিস্থিতিতে ভোট-রাজনীতি একটা গণতান্ত্রিক প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়! যেখানে দিন দিন মারণ ভাইরাসের মাত্রাতিরিক্ত তাণ্ডব বেড়েছে, সেখানে দাঁড়িয়েও বন্ধ হয়নি রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিশ্রুতি উপচে পড়া জনসভা। রাজ্যের শাসক দল কিংবা বাম শিবির যদিও আমজনতার কথা ভেবে শেষবেলায় প্রচার কর্মসূচী বাতিল করেছে, পদ্ম শিবিরের তরফে সেই সৌজন্যতাবোধটুকুও দেখা যায়নি!
বাংলায় করোনা পরিস্থিতির এমন বাড়বাড়ন্তের জন্য ৮ দফা নির্বাচনই (West Bengal Assembly Election 2021) যে দায়ী, সেই মর্মে এযাবৎকাল অনেকেই কমিশনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তবে বৃহস্পতিবার ভোটের পালা সাঙ্গ হয়েছে। আর তারপরের দিনই শুক্রবার সন্ধে থেকে আংশিক লকডাউনের কড়াকড়ি নিয়ম লাঘু হল। সেই প্রেক্ষিতেই মীরের মন্তব্য, "ভোট শেষ, এখন তো সব বন্ধ করা হবেই।"
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে রাজ্যে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সমস্ত সিনেমা হল, শপিং মল, বিউটি পার্লার, রেস্তরাঁ, বার, ক্রীড়াঙ্গন, জিম, স্পা এবং সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দিনে ৫ ঘণ্টা বাজার খোলা থাকবে। ছাড় দেওয়া হয়েছে অত্যাবশকীয় জিনিসপত্র, মুদিখানা ও ওষুধের দোকানকে। ভোট মিটতেই কেন এই পদক্ষেপ? মীরের ফেসবুক পোস্ট কিন্তু সেই প্রশ্নও রাখে।