/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/06/Soumitrisha-Kundu.jpg)
এবার ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দায় উত্তরণ সৌমিতৃষা কুণ্ডুর। গ্রাফিক্স- প্রত্যুষ রায়
বছর তিনেক আগে আর বাকি সব ধারাবাহিকের মতোই শুরু হয়েছিল মিঠাইয়ের জার্নি। এক ঝলকেই যেন মন কেড়ে নিয়েছিল ধারাবাহিকের একেকটা চরিত্র। তখন হয়তো কেউ আশাও করেননি যে বছর তিন পর, এতটা ভালবাসা এবং উন্মাদনা সবকিছুর মধ্যে দিয়েই সমাপ্ত হবে মিঠাই? একসময়ের বেঙ্গল টপার থেকে মানুষের মণিকোঠায়, 'মিঠাই'য়ের সঙ্গে যিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছেন তিনি সৌমতৃষা কুণ্ডু। মিঠাই শেষ হওয়ার পর কেমন আছেন তিনি? স্মৃতি রোমন্থন করলেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে।
ব্যস্ততা কি একটু কম? সৌমিতৃষার এখন সময় কাটছে কীভাবে?
এখন না, সকাল থেকে পরিবেশটা অনেক শান্ত হয়ে গিয়েছে। আমায় স্কুলে পাঠানোর মত বাবা মাকে শুটিংয়ে পাঠাতে হত। তাড়াতাড়ি খাইয়ে, ফলের রস করে.. ব্যাগ গুছিয়ে, সেই তৎপরতা এখন নেই। বলতে পারো একটা রিল্যাক্স সকাল! অন্যরকম রুটিনে ঢুকে গিয়েছি। তিনবেলা মায়ের হাতে খাচ্ছি। খুব আরাম।
মিঠাইয়ের সঙ্গে সৌমির কোনও মিল?
হ্যাঁ, বেশিরভাগটাই মিল ছিল। কারণ, বলি.. আমাদের যে রাইটার ম্যাম উনি আমায় বলতেন যে মিঠাই এবং মিঠি এই দুটোই ছিল আমার মত। প্রচুর কথা বলে, দুরন্ত, হাঁটতে চলতে জিনিসপত্র ফেলে দিচ্ছে। আমার মত করেই একটা চরিত্র বানিয়েছিলেন তিনি। মিঠাই আর মিঠি দুটোর সঙ্গেই আমার মিল ছিল। বেশ বদমেজাজি, তারকাটা এগুলো তো ছিলই।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/06/Snapinsta.app_331544842_478519474367822_5147365063280018863_n_1024.jpg)
চরিত্রটা শুরু করার সময় কোনও ছক বানিয়েছিলে?
আমি যখন প্রথম শুনলাম চরিত্রটা তখন তো পরিচালক থেকে সকলেই খুব সাহায্য করেছিলেন। ওর স্বভাব কেমন, মেয়েটি কী করে, এগুলো বুঝতে হয়েছিল। তবে, আমায় যখন বলা হয় যে ভুলভাল ইংরেজি বলে ওই শব্দগুলো আমি নিজে সাজিয়ে নিয়েছিলাম, যেমন ধরো সাইড পিলিজ! হেলেপ... ( হাসি )।
শুধুই কি মিঠাই, নাকি ধারাবাহিকের সফলতার জন্য সকলের সমান জায়গা রয়েছে?
সকলের সমান জায়গা রয়েছে। আচ্ছা, এখানে একটা কথা রয়েছে। অনেকেই শুধু অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কথা বলে, আমার কাছে কিন্তু মনে হয়, লাইটম্যান থেকে সকলেই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমার এখনও মনে আছে একটি দৃশ্যে এত সুন্দর লাইট সৃষ্টি করা হয়েছিল যে বলার মত না। এগুলো সব সিরিয়ালে হয় না। আর বাকি সহ-অভিনেতারা তো রয়েছেন। তাঁরা তো একেকটা পিলার, নইলে তো এতটা সফলতা পেতও না।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/06/Snapinsta.app_335944738_767228684995987_5503325567690508008_n_1024.jpg)
TRP যখন কমছিল, তখন আশা হারিয়েছিলে?
আমি জানো খুব পজিটিভ একটা মানুষ। সোজা পথে জীবন না গেলেও মনে হয় ভালর জন্যই হচ্ছে। কিন্তু হ্যাঁ, এটুকু বলতে হয়! যখন আমরা শুরু করেছিলাম, অনেকে বলেছিল ৬ মাস চলবে না। তারপর আস্তে ধীরে মানুষের ভাল লাগল। আমরা একসময় বেঙ্গল টপার হলাম। কিন্তু, একটা সমস্যাও রয়েছে। সেটা হল, যদি আজকে মিঠাই ছাড়া অন্য কোনও ধরনের গল্প মানুষের পছন্দ না হয় তবে বেশ মুশকিল। আমাদের তো গল্প নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে হয়। এখন মানুষের যদি এই ধরনের সিরিয়ালই পছন্দ হয় তবে বেশ গন্ডগোল। নতুন কিছু তো ভাবতেই হবে। মানুষের ভালবাসা শেষদিন অবধি আমরা পেয়েছি, এটাই অনেক। আমি জানতাম এটা থাকবে শেষদিন পর্যন্ত।
অভিনেত্রী হিসেবে আজ নিজেকে কতটা সফল মনে হয়?
সফলতা ধাপে ধাপে হয়। আজকে যদি আমার ১০০ হয়ে যায়, কালকে আবার শূন্য থেকে শুরু হবে। সুতরাং এটা একটা রিভার্স প্রসেস। বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধাপে গিয়ে এর বদল ঘটে। জীবনের অনেক বছর পরে গিয়ে হয়তো এর উত্তর দিতে পারব।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/06/Snapinsta.app_344383922_268691325505710_3755402688800158008_n_1024.jpg)
ধারাবাহিকের পর সোজা দেবের নায়িকা, ভয় লাগছে?
ভয় আমি পাই না গো! কিন্তু হ্যাঁ একটা ব্যাপার রয়েছে আমার। যে মিঠাই একটা এত হিট সিরিয়াল। সেখানে দাঁড়িয়ে যদি ভাল কাজ করতে না পারি, মানুষ আমার থেকে অনেক বেশি কিছু চায়। সেটায় যদি দাঁড়িয়ে উঠতে না পারি। আর দেবদার ছবি বলে কথা। একদিন যার ছবি দেখে বড় হয়েছি, এটা একটা বিষয় বলতে পারো.. ( হাসি )।
কতটা আলাদা মনে হচ্ছে ডেইলি সোপের হিরোইনের থেকে সিনেমার পর্দা?
কাজের ধরনটা আলাদা বলতে পারো। শিডিউল বেশ অন্যরকম। এছাড়া ধর, গল্প বলার ধরনটা ভিন্ন। সিনেমাটা দুই থেকে তিন ঘণ্টায় একটা ইমপ্যাক্ট। সেখানে সিরিয়াল টানা অনেকদিন চলে। তো, এটা একটা পরিবর্তন আছে।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/06/Snapinsta.app_349271546_1975415059479633_6992140455443825217_n_1024.jpg)
টেলিভিশন থেকে বড়পর্দায় অভিষেক হলে নাকি তারা আর সহজে এদিকে ফিরে চায় না! কিংবা ওয়েব সিরিজ করে? তোমার প্ল্যানিং?
এহহ! মোটেই না, আমি এমন অনেককেই চিনি যারা আঁর ফিরে এসেছে সিরিয়ালে। হ্যাঁ, ওয়েব সিরিজের কনটেন্ট অনেক রিচ। ভিন্ন ধরনের কাজ হচ্ছে। তবে, আমার সিরিয়ালের পর সিনেমার প্ল্যানিংই ছিল। ওয়েব সিরিজের প্ল্যানিং না। হয়তো ভবিষ্যতে হবে। দেখা যাক।
ধারাবাহিক থেকে নাকি ধৈর্য আর সহনশীলতা শেখা যায়? সত্যিই!
অনেক শিখেছি। আমি তো বলব ধারাবাহিক থেকে মানুষ আরও বেশি পরিশ্রমী হয়ে ওঠে। আমিও ঠিক একইরকম। শেষ কিছুমাস ধরে আমি ছুটি পেতাম রবিবার গুলো। তার আগে তো একেবারেই পেতাম না ছুটি। তারপর ধরো, একেকটা এপিসোড, ধৈর্য নিয়ে মানুষ দেখছে, অনেকদিন সময় লাগে দর্শকদের কাছের হয়ে যেতে।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/06/Snapinsta.app_352829956_630195152129418_319727854901158446_n_1024.jpg)
বিতর্ককে কীভাবে কানমুলে দেয় সৌমি?
এটা অনেক দেখেছি গো। আমি তো জাস্ট হাওয়ায় উড়িয়ে দিই। আর কিছু না। শুনেও না শোনার ভান করি। ওটাই ভাল থাকার উপায়। কিছু কিছু জিনিস একদম সহ্য হয় না। অদ্ভুত কিছু তথ্য, কিছু ছবি এমনভাবে এডিট করে, আমি তো অমুক মরে গিয়েছে এমন জায়গায় নিজের ছবি দেখেছিলাম। টাকা রোজগারের জন্য এসব কী করে? আমার এত্ত বিরক্ত লাগে উফ!
ফের আবার যদি আদৃতের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাও... মশলাদার হলে করবে?
নিশ্চয়ই করব, কেন করব না। যদি একটা সুন্দর হিট স্ক্রিপ্ট পাই যেটা আমাদের মনে হবে যে মানুষের কাছে পৌঁছাবে, তাহলে অবশ্যই করব। অন্যধরনের গল্প হোক, তাহলে আরও ভাল হয়।