Mithun Chakraborty-Dadasaheb Phalke: সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় শেষ পেয়েছিলেন দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার। বাংলা থেকে এরপর আর কেউ পাননি। এবার, সেই প্রতীক্ষার অবসান হল। বাংলা এবং বাঙালির তরফে অনেকেই পেয়েছেন এই পুরস্কার। আর এবার সকলের প্রিয় মহাগুরুর মুকুটে পালক জুড়ল।
শুরু হয়েছিল, বীরেন্দ্রনাথ সরকারকে দিয়ে। তারপর একে একে পঙ্কজ মল্লিক, ধীরেন্দ্র নাথ গাঙ্গুলি, মান্না দে, মৃণাল সেন অনেকেই পেয়েছেন এই পুরস্কার। শেষ পেয়েছেন ২০১১ সালে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এবার মিঠুন চক্রবর্তীর পালা। অভিনেতাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, বাংলার অন্যান্য শিল্পীরা। প্রধানমন্ত্রী নিজেও তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
শুরু হয়েছিল ১৯৭৬ সালে...
বিশ্ববরেণ্য পরিচালক মৃণাল সেনের হাত ধরে কাজ শুরু। 'মৃগয়া' ছবিতে নিজের সবটা দিয়েছিলেন তিনি। সেই কারণেই পেয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার। তারপর, একই বছর দুলাল গুহর 'দো আঞ্জনে' ছবিতে একটি ছোট্ট চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তারপর, অনেক চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বাংলা থেকে হিন্দি এবং তামিল ছবিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
১৯৮২ থেকে উত্থান...
মিঠুন চক্রবর্তী একদিকে যেমন 'ডিস্কো ড্যান্সার' ছবির মত বিরাট হিট দিয়েছেন, তেমনই তাঁকে সবথেকে বেশি ফ্লপ ছবির হিরো পর্যন্ত বলা হয়ে থাকে। ১৯৮২ সালে জীবনের সবথেকে বড় হিট ছবি দিয়েছিলেন তিনি। বি সুভাষের ড্যান্স ড্রামা 'ডিস্কো ড্যান্সার' রিলিজ করতেই, ধামাকা হয়। ভারতীয় ছবি হিসেবে ১০০ কোটির ব্যবসা করে এটি। অন্যদিকে, বাংলায় 'ত্রয়ী' ছবি দিয়েই মাইলস্টোন সৃষ্টি করেন তিনি। ১৯৮৩ সালে তাঁকে দেখা গিয়েছিল টি রামা রাওয়ের ছবি 'মুঝে ইনসাফ চাহিয়ে' এবং 'হাম সে হ্যায় জামানা' ছবিতে।
১৯৮৬ সালে তাঁকে দেখা গিয়েছিল কে বাপায়ার ফ্যামেলি ড্রামা 'স্বর্গ সে সুন্দর' ছবিতে। প্রশংসা পেয়েছিলেন 'শিশা' ছবির জন্য। এটাই বলিউডে প্রথম যৌন হেনস্থা নিয়ে ছবি। এর পাশাপাশি তাঁকে দেখা যায় পার্শ্ব চরিত্রে। 'অগ্নিপথ' ছবিতে তাঁর অভিনয় দারুণ প্রশংসা পেয়েছিল।
বাংলা ছবিতে বেশ কিছু বছর পর, একশন সিনেমায় তাঁকে দেখা যায়। 'তুফান' হোক, কিংবা 'ফাটাকেষ্ট', অথবা 'মহাগুরু' হিসেবে বাংলা ছবিতে তিনি বেশি জনপ্রিয়। এছাড়াও নানা ছবিতে তিনি কাজ করেছেন। 'তুলকালাম' হোক কিংবা 'শুকনো লঙ্কা', কিংবা 'নোবেল চোর' - মিঠুন এই বাংলার বুকে বেশ জনপ্রিয়। তবে, শেষ কিছু বছরে তাঁর ছবির তালিকায় বদল এসেছে। 'প্রজাপতি' ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। সামনে রিলিজ 'শাস্ত্রী'র।
ফ্লপ ছিল আরও বেশি...
সূত্র বলছে, মিঠুন নাকি বিশ্ব রেকর্ড করেছিলেন ফ্লপ ছবি দেওয়ায়। ২৭৯ টি ছবির মধ্যে ১৮০টি ছবি মিঠুন ফ্লপ দিতে পারেন না। ৮০ এর দশকে কেরিয়ার শিখরে থাকলেও ৯০ এর দশকে ৩৩টি ফিল্ম ফ্লপ দিয়েছিলেন তিনি।
কী কী পুরস্কার পেয়েছেন তিনি?
জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে দুটি ছবি, ১৯৭৭ সালে 'মৃগয়া'র জন্য। ১৯৯৩ সালে পেয়েছেন 'তাহাদের কথা'র জন্য। অন্যদিকে, সেরা সহ অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন 'স্বামী বিবেকানন্দ' ছবির জন্য। যেখানে, তিনি অভিনয় করেছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ভূমিকায়।
ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, সেরা সহ অভিনেতা হিসেবে 'অগ্নিপথ' ছবির জন্য। 'জল্লাদ' ছবির জন্য পেয়েছিলেন সেরা নেগেটিভ রোলের পুরস্কার। এছাড়া, বাংলা ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছেন 'প্রজাপতি' এবং 'কাবুলিওয়ালা' ছবির জন্য।
২০২১ সালে পেয়েছেন রাজ কাপুর পুরস্কার। ২০২৪ সালে পেয়েছেন পদ্মভূষণ পুরস্কার।