‘তৃণমূলী ঝড়’ রুখতে অবশেষে ভোটপ্রচারের ময়দানে অবতরণ মিঠুন চক্রবর্তীর (Mithun Chakraborty)। জঙ্গলমহল উত্তাল সবুজ-গেরুয়া দুই প্রতিপক্ষ শিবিরের চোখ রাঙানিতে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রও বটে! কিন্তু তাতে কী? বাঁকুড়ায় (Bankura) 'বাঙালিবাবু'র চপার নামতেই পড়ল জনসুনামির ঢল! পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, মিনিট ১৫ কপ্টারেই বসে থাকতে হল 'মহাগুরু'কে। চারিদিকে উচ্ছ্বাস আর আবেগ বঙ্গসন্তানকে ঘিরে।
বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ায় মোট ২ কিমির কাছাকাছি পথে রোড শো করার কথা মিঠুনের। কিন্তু প্রথমটায় এই উত্তাল জনগণকে দেখে তা কিছুটা চ্য়ালেঞ্জিং বলেই মনে হয়েছিল। তবে পরে পরিস্থিতি খানিক ঠান্ডা হলে হুড খোলা উঠে পড়েন সুপারস্টার। একেবারে স্বমহিমায় ধরা দেন বাঁকুড়াবাসীর কাছে। পরনে সাদা শার্ট। মাথায় টুপি। গলায় গেরুয়া উত্তরীয়। ফুলের মালা। চোখে রোদচশমা। কখনও হাত নেড়ে পদ্ম শিবিরের হয়ে ভোটপ্রার্থনা করতে দেখা গেল তাঁকে। আবার কখনও বা উচ্ছ্বসিত জনতার সঙ্গে করমর্দনরত মিঠুনকে চোখে পড়ল। এই ছবি বঙ্গবাসীর চেনা। অতীতের পুনরাবৃত্তিও বলা যেতে পারে। মাঝে ঠিক পাঁচ বছরের ব্যবধান। ২০১৬ সালে তৃণমূল (TMC) থেকে ইস্তফা দিয়ে রাজনৈতিক সন্ন্যাসে যাওয়ার পর একুশে (West Bengal Assembly Election 2021) বাংলার মসনদ দখলের লড়াইয়ে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির শরীক হয়েছেন। ভোটপুজো বোধনের তাই দিন দুয়েক আগেই ময়দানে নেমে পড়লেন গেরুয়া শিবিরের হয়ে।
বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা দিয়ে শুরু মহাগুরুর প্রচার অভিযান। এই মুহূর্তে মানবাজারে পৌঁছেছে রোড শো। তার আগে বাঁকুড়ার শালতোড়ার বিজেপি (BJP) প্রার্থী চন্দনা বাউড়ির রোড শো করলেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। এখান থেকেই মহাগুরুর আজকের 'প্রচার-শো'য়ের শুরু। যে বিধানসভা কেন্দ্রে তিনি প্রচার সারবেন আজ, সেখানে ভোট আগামী শনিবার। পরের দিন রবিবারও তিনি প্রচারে নামছেন। সেদিন বাঁকুড়ার ইন্দাস ও পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে চলবে ভোটপ্রচার। তা 'ভোট-সিনেমা' সুপারহিট করতে মিঠুন চক্রবর্তীর 'স্টার-কাস্ট' বিজেপির পালে কতটা হাওয়া জোগাতে পারে? সেটা দেখার অপেক্ষাতেই রয়েছেন রাজ্যবাসীরা।
ছাতনা, ঝাড়গ্রাম, সালতোরা, রায়পুর, কেশপুরের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রকে বেছে নেওয়া হয়েছে মিঠুনের প্রচারের জন্য। যেগুলি কিনা গত বিধানসভা নির্বাচের নিরীখে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলেই পরিচিত ছিল। তবে উনিশের লোকসভা ভোটের পর সেই চিত্র পাল্টেছে। সেসব এলাকায় মিঠুন-আবেগ বিজেপির ভোটবাক্স ভারী করতে পারে, বলেই মনে করছে দল।