ভোটপ্রচারের ময়দানে স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে মমতা সরকারকে তুলোধোনা করছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। কিন্তু মমতা-সরকারের সেই কার্ডের টাকাতেই কিনা বিনামূল্যে চিকিৎসা করালেন খোদ মহাগুরুর-ই ছায়াসঙ্গী! অতঃপর সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বেজায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলের অন্দরে। মোদির তারকা সেনাপতি মিঠুনকে পাল্টা আক্রমণ করতেও ছাড়েননি তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের কথায়, "এবার মিঠুনদা নাচবেন নাকি কাঁদবেন?" অতঃপর স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে বিনামূল্যে মহাগুরুর ছায়াসঙ্গীর চিকিৎসা করানোয় যে পদ্ম-বাহিনীর 'স্টার ক্যাম্পেনার' তথা বিজেপিকে বিপাকে ফেলে দিয়েছে, তা বলাই বাহুল্য!
স্বাস্থ্যসাথী নাকি ভাঁওতা! মমতা-সরকারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই বেহাল! রাজ্যজুড়ে এমন প্রচার-ই চালাচ্ছেন গেরুয়া শিবিরের নেতা-মন্ত্রীরা। আর পদ্ম-বাহিনীর এই একুশে বাংলার মসনদ দখলের লড়াইয়ে শামিল হয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী। বিজেপির (BJP) প্রচারের ময়দানে অন্যতম প্রধান মুখ। আর গেরুয়া শিবিরের নেতা-মন্ত্রীরা কিনা যখন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ভাঁওতাবাজির আখ্যা দিয়েছেন, সেখানে মিঠুনের ছায়াসঙ্গী প্রদ্যুৎ হালদারই কিনা সল্টলেকের এক নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে নিখরচায় হৃদরোগের চিকিৎসা করালেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে! এই খবর স্বাভাবিকভাবেই বিপাকে ফেলেছে বিজেপিকে। এই নিয়ে পাল্টা আক্রমণ হেনে জোরদার প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল (TMC)।
অন্যদিকে, ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে গেরুয়া শিবিরের তরফে ময়দানে নেমেছেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তাঁর মন্তব্য, "মিঠুন চক্রবর্তীর ছায়াসঙ্গী বলেই প্রদ্যুৎবাবু এত সহজে স্বাস্থ্যসাথীর টাকা পেয়েছেন। অন্তত দশজনের নাম বলতে পারি, যাঁরা স্বাস্থ্যসাথীর পরিষেবা পাননি।"
দমদম বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে পোস্টারে পোস্টারে প্রায় ছয়লাপ করে দিয়েছে। তাঁদের কথায়, "এবার মিঠুনদা কী বলবেন?" সূত্রের খবর, প্রদ্যুৎ হালদারও এখন ভালই রয়েছেন। গত ৩১ মার্চ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তাঁর ধমনীতে ব্লক ধরা পড়ে। দরকার ছিল জরুরিভিত্তিক অস্ত্রোপচার। সেইমতো বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ রঞ্জন শর্মা অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টি করে স্টেন্টও বসান। চিকিৎসার জন্য ৬৬ হাজার টাকা এবং স্টেন্টের দাম বাবদ ৩১,৬৮৯ টাকা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৯৭,৬৮৯ টাকার পুরোটাই মিলেছে প্রদ্যুৎবাবুর স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে। নিজের পকেট থেকে একটা টাকাও তাঁকে খরচ করতে হয়নি! আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিপাকে পড়েছে বিজেপি।