দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়ানোর স্বপ্ন তাঁর। মাঝেমধ্যেই বেরিয়ে পড়েন অচেনা কিছু জানতে। শুটিং তো রয়েছেই কিন্তু নিজের মত করে বাঁচার একটা কারণ থাকবে না? টলিপাড়ার অন্যতম লিডিং হিরোইন হয়েও নিজের জন্য সময় দেওয়ায় বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেন না মনামী। ব্যাগ গুছিয়ে, দে দৌড়! ভিনদেশেও নিজের মত করেই সংসার গুছিয়ে নিয়েছেন তিনি। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্য কি শুধুই ঘুরে বেড়ানো নাকি অন্যান্য? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে আড্ডায় মনামী ঘোষ।
কোরিয়া যাওয়ার কারণ শুধুই কি love for travelling নাকি অন্য কিছু?
অবশ্যই লাভ ফর ট্রাভেলিং। ঘুরে বেড়ানো তো আমার দারুণ পছন্দের। তবে আরেকটা কারণ বলতে পারো যে BTS। ওদেরকে আমি যবে থেকে চিনতে শুরু করেছি তবে থেকে আরও বেশি করে দক্ষিণ কোরিয়াকে চিনে ফেলেছি। আমার বাকেট লিস্টে ছিল, কিন্তু এত তাড়াতাড়ি আসার প্ল্যানিং ছিল না। অনেককিছু জেনে গিয়েছিলাম এই দেশটাকে নিয়ে, সেই আগ্রহ থেকেই তাড়াতাড়ি আসা।
মনামীর মধ্যে নাকি ইন্দো k-pop তারকা হওয়ার সব বৈশিষ্ট্য রয়েছে?
হাহা ... হ্যাঁ তা আছে বৈকি! আমার নিজেও মনামিকে দেখলে মনে হয় যে হ্যাঁ কিছুটা বৈশিষ্ট্য তো রয়েছেই।
Busan k-pop কনসার্ট দেখলে, কেমন লাগল?
দারুণ লাগল। যে স্টেডিয়ামটিতে দেখলাম সেখানে কয়েকমাস আগে BTS একসঙ্গে শেষ পারফর্ম করেছিল। ২০২৫ এ হয়তো আবার করবে। বুসানের এর স্টেডিয়ামটি এত সুন্দর। যারা k-pop বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে, তারা এসে অনুষ্ঠান করছে। মানুষজনকে নাচ গান শেখাচ্ছে। এমনকি মেলা বসে গেছে ওখানে। তাঁর থেকেও বড় কথা, ওখানে সুন্দর ব্যবস্থা। রেনকোট দিয়েছিল ওরা। ওখানে এখন বৃষ্টি হচ্ছে। তাঁর মধ্যে কনসার্ট দেখছি, এটা একটা দারুন ব্যাপার।
কোরিয়ার সঙ্গে কলকাতার কিছু তফাৎ?
শুধু K টাই এক, বাকি সব আলাদা। কলকাতা তাঁর মত করে সুন্দর, আর কোরিয়া তাঁর মত করে। ভাষা, খাবার, পোশাক সবকিছু ভীষণ ভিন্ন। মনে হবে একটা অন্য পৃথিবীতে আছি।
ভাষার অসুবিধা হচ্ছে?
অবশ্যই, ভাষার অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু চলতে চলতে অনেক কিছুই বুঝতে নিতে হচ্ছে। আসলে ইংরেজির প্রচলন এদেশে খুব একটা নেই। হাতে গোনা দু তিনটে দোকানের লোকজন অল্প স্বল্প বুঝতে পারেন। আর বাকি ধর, রাস্তা ঘাটে, রেস্তোরাঁ কোথাও তুমি বোঝাতে পারবে না। সাইন ল্যাঙ্গুয়েজে বোঝাতে হয়। সবকিছুই হাঙ্গুলে লেখা। অসুবিধা হচ্ছে তবে মানিয়ে নিতে হবে। ওরাও জানে আমাদের সঙ্গে কী করে কথা বলতে হবে।
পছন্দের k-pop গ্রুপ?
যার জন্য এখানে এসেছি, BTS! আবার কিই...
কোথাও কি মনে হয়, কলকাতার k-pop ফ্যান ফলোয়িং অনেকটা বেড়েছে?
অনেক! শেষ দু তিনবছরে অনেক বেড়েছে। আমার মায়ের বয়সীরা আমায় বলেছে, ও তুই যাচ্ছিস মানে, অনেকেই জানো তো, BTS ছাড়া কোরিয়াকে চেনে না। আমার দাদার মেয়ে তো বলেছিল, কনসার্ট গুলোতে গেলে ওকে জানাতে। কলকাতায় এখন kpop ফ্যান মানে সাংঘাতিক।
যদি জিজ্ঞেস করি, কোরিয়ান অভিনেত্রীরা বেশি সাবলীল নাকি বাংলা সিনেমার অভিনেত্রী?
সেটা পরিস্থিতির ওপর ডিপেন্ড করে গো! আমাদের ওখানেও দারুণ অভিনেত্রীরা রয়েছেন, আবার এখানেও বেশ ভালমাপের অভিনেত্রীরা রয়েছেন।
সাউথ কোরিয়া থেকে কী কী পেলে?
একটা গল্প আছে জানো তো। আমি যখন থাইল্যান্ডে ঘুরতে গিয়েছিলাম, একসঙ্গে ঘুরতে ঘুরতে একটি ফ্যামিলির সঙ্গে আলাপ হয়, তো ওরা কোরিয়ান। জানতে পারি যে ওরা এইদেশে থাকে। যোগাযোগ ছিল। তারপর যখন ভাবলাম কোরিয়া আসছি। তারপর যখন এলাম এখানে ওদের বাড়িতে আমায় নিমন্ত্রণ জানায়। আমায় থাকতে বলে সেখানে। ওরা এত ভাল মানুষ, আমি না পারিনি না বলতে। আর সেখানে একটা দিন জেওঁজুতে ওরা থাকে সেখানে ছিলাম। আমার না একটা সময়ের জন্য মনে হয়েছিল যে আমি কোরিয়াতে নেই, আমি আমার বাড়িতে আছি। ওদের আতিথেয়তা, ভালবাসা আমায় মুগ্ধ করেছে। আমি আপ্লুত। ভাষার অসুবিধা থাকার পরেও দারুণ মজা করেছি। এটা আমাদের হাই পয়েন্ট। সেখানের লোকাল ফ্যামিলির সঙ্গে থাকাটা একটা আলাদা অভিজ্ঞতা।
তাহলে কি এবার কলকাতার আতিথেয়তা দেখানোর পালা?
আমি তো বলেই দিয়েছি, ভারতে এলে আমাদের সঙ্গে ঘুরবে, থাকবে, মজা করবে। আমি তো দারুণ খুশি হব যদি ওরা আসেন এখানে।
BTS army দের কাছে মনামী তো দারুন প্রভাব ফেলছে, তোমার বক্তব্য? Bias কে তাদের জিজ্ঞাস্য?
ওরা শুধু যে গান গাইছে বলে আমি ওদের পছন্দ করি সেটা নয়। বরং দেখা যায় গবেষণা করলে ওরা ভীষণ হার্ড ওয়ার্কিং। শুধু যে চাকচিক্য এটা নয়। আজ এতবছর পরে ওরা সাফল্য পেয়েছে। নিরন্তর কাজ করতে করতে ওরা আজ লাভের মুখ দেখেছে। তো, ওদের সাপোর্ট করাই উচিত।
Bias? আমার তো ওদের ৭ জনকেই ভাল লাগে। আমি ওদের খুব সম্মান করি, তবে একটু যদি বেশি কাউকে ভাল লাগে সেটা V ( Kim Taehyung )। ভি কে দিয়েই আমার BTS কে জানা শুরু।
মনামী কোরিয়ান গ্রুপের এর সঙ্গে কোলাব করার সুযোগ পেলে?
দারুণ লাগবে। আমি তো ওদের নাচের ভক্ত, আমি তো রাজি করতে। কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
শুটিং শেষ পদাতিকের?
শুটিং শেষ, ডাবিং শেষ! ৮০% শেষ। এবার পোস্ট প্রোডাকশন। বাকিটা হলেই সবার সামনে আসার পালা।