পুজোয় হালকা মেজাজে থাকতে ভালবাসেন আবালবৃদ্ধবনিতা। সেই মোডের দর্শকদের জন্যই পুজোতে দেবের উপহার 'হইচই আনলিমিটেড'। প্রচারের নতুন আইডিয়া থেকে ইন্ডাস্ট্রির টক্কর। দেব এন্টারটেনমেন্টের পুরোধাকে যখন সামনে পাওয়া গেল, তখন প্রশ্ন না করে উপায় নেই। উত্তর দিতেও কিন্তু কাপর্ণ্য করলেন না অভিনেতা।
প্রচারের চাপে দেব কি হইচই করতে পারছেন না?
বাপরে বাপ! সে কথা না বলাই ভাল। এখন তো প্রচার নয়, ডিস্ট্রিবিউশনের চাপ। কোন হলে শো পাব, কখন পাব, এইসব। কোনও কোনও হল তো শোই দিচ্ছে না, তাদের হাতে পায়ে ধরছি।
দেবকেও পায়ে পড়তে হচ্ছে ছবি দেখানোর জন্য?
কিছু বলার থাকে না। অনেকে বলছে একটা শো দেব। অবাক হচ্ছি, বড় বড় সিনেমা হল বলছে ১০টায় শো দিচ্ছি। অথচ যে ছবিগুলোর জন্য বলছে, সেই ছবি আশেপাশের প্রত্যেকটা হলে চলবে। তবু আমি একটা ঠিক সময়ে শো পাচ্ছি না, বাকিরা পাচ্ছে।
নিন্দুকেরা বলে, টলিউডে অঘোষিত নিয়ম ভাঙতে গিয়েই সমস্যায় দেব।
এটা ঠিক জানি না, জানো তো। তবে এইটুকু বলতে পারি, কনটেন্ট কথা বলছে। ভাল ছবি তোমাকে বানাতে হবে। শুক্রবার দিনের শেষ জানান দেবে কোন ছবিটা বক্স অফিস কাঁপাচ্ছে। আমার ছবির ক্ষেত্রেও সেটা ভাল, না আমি এমনিই ঢাক পেটাচ্ছি বোঝা যাবে।
ছবির প্রচারের ক্ষেত্রে দেব নাকি সাংসদ হওয়ার সুবিধে নিচ্ছেন?
যদি সত্যিই এমনটা হত, তাহলে খুব ভাল হত। কোন প্রচারটায় আমি সাংসদ হওয়ার সুবিধা নিয়েছি? দেব তো শক্তি ব্যবহারই করছে না। কলকাতা পুলিশের বৈঠকটার কথা যদি তুমি বলো, বিগত সাত বছর ধরে আমি ট্রাফিক পুলিশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। এমনকি প্রচারে ব্যানারগুলোতে যদি দেখ, নিজের মুখটাও দিই না। আমি আমার ক্রিয়েটিভিটি নিয়ে কাজ করছি। আর...
বলুন...
সেগুলো মানুষের ভাল লাগছে। রোড সেফটি নিয়ে প্রচার করছি। সোশাল সচেতনার জন্য যে ভিডিওটা বানালাম, সেখানে তো নিজের ইমেজকেও বাজি রেখেছি। এসবের জন্য তো পাওয়ার লাগছে না। মানুষ বলছেন এমপি হয়ে এরকম করছে। তিনদিন পরে প্রমাণ হল সত্যিটা। মানুষ সোশাল মিডিয়ার অপব্যবহারও করে। আসলে পাওয়ার দিয়ে কিছু হয় না, ভালবাসাটা খাঁটি হওয়া চাই।
কিন্তু দর্শক তো দেব বলতে অজ্ঞান।
(হাসি) আর বোলো না, আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ছি মাঝে মধ্যে। কিন্তু তাঁদের এনার্জি লেভেলই আলাদা। মল হোক, স্কুল-কলেজ হোক, কীভাবে যে মানুষ আসছেন! লোকে বলেছিল কর্মাশিয়াল ছবি শেষ হয়ে গেছে, মার্কেট নেই। কিন্তু যে কটা ছবি মুক্তি পাচ্ছে, তার মধ্যে হইচইকে তুমি হয়ত বেশি নম্বর দিতে পারবে না, তবে কমও দেওয়া যাচ্ছে না। আবার লাইমলাইটে তো কর্মাশিয়াল ছবি নিয়ে এলাম। দর্শক আলোচনা করছেন।
রুক্মিনি ছবির সহ প্রযোজক, তাই কী ছবিতে নেই? এটা কী প্রযোজক দেবের সিন্ধান্ত?
এই মানুষজনকে না, বুঝতে পারি না। যখন কাস্ট করতাম, তখন বলত সব ছবিতেই দেব কি রুক্মিনীর সঙ্গে কাজ করবে? এই ছবিতে নেই, তাতেও কথা হচ্ছে। কেউ তোমায় সাহায্য করছে, তাকে স্বীকৃতি দেওয়াটা আমার কতর্ব্য। যখন আমার দেওয়ার ক্ষমতা আছে, কেন নয়? আমার ছবি শুরু হয় মা আর বোনের নাম দিয়ে। তার মানে কি তারা শুটিংয়ে বসে থাকে? সেরকমই রুক্মিনী প্রথম থেকেই ছবিটার সঙ্গে স্ট্রংভাবে যুক্ত। প্রতিটা চড়াই উতরাইয়ে আমার পাশে ছিল। আমি বন্ধুকে ব্যবহার করছি, অথচ সেটা মানব না, স্বীকৃতি দেব না?
এত ছবি দেখেও কেন হইচই এখন করলে?
কবে করব বলো? বছরে যদি একটা ছবি না করি, তাহলে কি করে চলবে? এই প্রশ্নটা তুমি তাঁদের করতে পারো, যাঁদের তিনটে ছবি একসঙ্গে রিলিজ করছে। কোথায় দেখেছ যশরাজ একসঙ্গে তিনটে ছবি করে? আজ যদি দেবের প্রোডাকশন হাউস একসঙ্গে অনেকগুলো ছবি বানাত তাহলে বলতে। আবার যাঁরা করছেন, তাঁরা বলতেই পারেন, আমি তৈরি করছি আমার ব্যপার। তোমার কী?
হইচই আনলিমিটেড দর্শক দেখবেন?
নিশ্চয়ই! আমি ওয়ান অফ দ্য বিগেস্ট এন্টারটেইনারস অফ দিস ইন্ডাস্ট্রি। পুজোয় দর্শককে হাসিয়েছি, কাঁদিয়েছি। কিন্তু এবছরের ছবির তালিকায় দেখলাম সব সিরিয়াস ছবি। সবাই বলছেন কর্মাশিয়াল ছবি করা ঝুঁকির, এটাই চ্যালেঞ্জ ছিল যে মানুষকে হলে এনে হাসাব। সুস্থ থাকতে হাসতে হবে, আর হাসার জন্য হইচই আনলিমিটেড দেখতে হবে।
এবার কি তবে পরিচালক দেবের পালা?
যা চলছে, কখন যে কী করতে হয়। বলা যায় না, দেখতে পারো। তবে যাই করি না কেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করতে হবে। হেলদি কম্পিটিশন সবসময় ভাল। তাহলেই তো আবার আন্তর্জাতিক স্তরে ছবি নিয়ে যেতে পারব।