ফ্ল্যাট নম্বর ৬০৯
পরিচালক: অরিন্দম ভট্টাচার্য
অভিনয়: আবির চট্টোপাধ্যায়, তনুশ্রী চক্রবর্তী, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, মমতাশঙ্কর, পূজারিনি ঘোষ, খরাজ মুখোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ
রেটিং: ৩.৫/৫
বাংলায় হরর ফিল্ম মানেই দর্শক হাসবেন, মোটেই ভয় পাবেননা। ভয় পাওয়ানো হরর ছবি দেখতে গেলেই বিদেশি ভাষার, অন্তত হিন্দির আশ্রয়। এই ধারনাকে পাল্টে দিয়ে এগিয়ে এলেন পরিচালক অরিন্দম ভট্টাচার্য। রীতিমতো ভয় পাওয়ালেন তিনি। হ্যাঁ! কথা হচ্ছে 'ফ্ল্যাট নম্বর ৬০৯ নিয়ে'।
সদ্য বিবাহিত অর্ক আর সায়ন্তনী, নতুন বাসার খোঁজে হাজির হয় রাজারহাটের দক্ষিণ খোলা সবুজের মাঝের দাঁড়িয়ে থাকা একটি ফ্ল্যাটে। শহরের কোলাকল, ঝঞ্ঝাট পেরিয়ে শান্ত, কম বাজেটের এই 'ফ্ল্যাট নম্বর ৬০৯'। কিন্তু গল্পের জমাট বাঁধে অর্ক-সায়ন্তনী, সেই ফ্ল্যাটে এসে থাকতে শুরু করার পর। প্রথম দৃশ্যেই লিফট থেমে গিয়ে লাল আলো জ্বলে ওঠা থেকে ভয়ের সূত্রপাত। এরপর তো দেওয়ালের ফোটো ফ্রেম খসে পড়া, ড্রয়ার খুলে যাওয়া, সিঁড়ি দিয়ে বল পড়া এবং সবথেকে গা ছমছমে দোতলার ওই ঘরটা। ঘরটা কি কোনও রহস্যের ইঙ্গিত দিতে চায় সায়ন্তনীকে (তনুশ্রী)! এই সবকিছুর সঙ্গেই অদ্ভুত রহস্যের গন্ধ থাকে পাশের ফ্ল্যাটের বয়স্ক মাসিমা-মেসোমশাইয়ের ব্যবহারে। তাঁরা বেশি কথা বলেন না। আর আছে বাচ্চাটা। এই রহস্যের সমাধানটা আপনাদের ছবিটা দেখে করতে হবে।
আবির আগেই বলেছিলেন এই গল্পে তিনি রহস্যের সামাধান করবেন না। এখানে দেখা গেল অর্কর (আবির) পেছেনই গোয়েন্দা পড়ে রয়েছে। এই ছবির প্লটে যেমন ভয়ের গন্ধ তেমনই দুর্দান্ত প্রেমের চিত্রায়ণ। নো মেকআপ লুক, অভিব্যক্তি সব মিলিয়ে জমিয়ে খেলেছেন তনুশ্রী চক্রবর্তী। আর আবির দেখিয়ে দিলেন ব্যোমকেশের বাইরেও তিনি অভিনয়ে ছাপ ফেলতে পারেন। অল্প স্ক্রিন টাইমে ভাল মমতাশঙ্কর ও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। খরাজ এবং রুদ্রনীলও সুযোগ হাতছাড়া করেনি। তবে জমাতে পারলেন না পূজারিনি।
নতুন আইডিয়া, কাজ ও গল্পের বুননে অ্যাপ্ট ছবির কাণ্ডারী অরিন্দম ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন, Movie Review: ক্রিসক্রসের কানেকশনটা ঠিক জমল না
হরর ছবিতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ক্যামেরা, সাউন্ড। ক্যামেরার কারসাজি এই ছবিতে ছাপ ফেলতে পেরেছে। আর নিজের কাজ দিয়ে ছবির প্লট আরও জোরালো করেছে রাতুল শঙ্করের ব্যাক গ্রাউন্ড মিউজিক ও গান। আর ছবির সঙ্গে মানানসই আর্ট ডেকর। তবে ফ্ল্যাট নম্বর ৬০৯ কেবল হরর ছবি নয়, এতে বর্তমান সমাজের মানসিকতার কথা বলা হয়েছে, আমরাও যে দিন দিন মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছি এই সত্যিটা গোদা অক্ষরে ছবির গল্পে ফুটে উঠেছে।