বছর কুড়ি পর বাংলার নির্বাচনী ময়দানে মুকুল রায় (Mukul Roy)। এর আগে একবার ভোটে দাঁড়িয়েও জয়ের মুখ দেখতে পারেননি। ২০০১ সাল, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একনিষ্ঠ সৈনিক তিনি। জগদ্দল থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু জয়ের মুখ দেখতে পারেননি। তবে মোদী-শিবিরে গিয়ে গত দুবারের নির্বাচনে রাজ্যে গেরুয়াবাহিনী সংগঠনের কাজ করে গিয়েছেন মুকুল। তবে একুশের বিধানসভা ভোটে (West Bengal Assembly Election 2021) কিছুটা ব্রাত্য থাকলেও ভারতীয় জনতা পার্টি কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র বাগাতে কামান রেখেছিল তাঁর ঘাড়েই। প্রতিপক্ষ রাজনীতির ময়দানে নবাগতা কৌশানী মুখোপাধ্যায়। ভোটপ্রচারের ময়দানে সবুজ-বাহিনি ঝড় তুললেও শেষ হাসি হাসলেন মুকুল রায়-ই। আজ্ঞে 'বিশ সাল বাদ'! রাজনৈতিক কেরিয়ারে প্রথমবারের জন্য নির্বাচনী জিতের স্বাদ পেলেন মুকুল রায়।
তৃণমূলপ্রার্থী (TMC) কৌশানী মুখোপাধ্যায়ের (Koushani Mukherjee) রাজনীতির ময়দানে অভিষেক ঘটেছে একিশের বিধানসভা ভোটের আগেই। তারপরেই সরাসরি নির্বাচনী ময়দানে। কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভার মতো গেরুয়া ঘাঁটিতে (২০১৯ লোকসভা ভোটের নিরীখে) দলনেত্রী ভরসা রেখেছেন টলিপাড়ার অভিনেত্রীর উপর। প্রতিপক্ষ আবার মুকুল রায়ের মতো দুঁদে রাজনীতিক। বাংলার পদ্মবনের পালে হাওয়া লাগাতে তৃণমূল-ত্যাগী নেতার কাঁধেই ভরসা রেখেছিল গেরুয়া-বাহিনী। অতঃপর এমন ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীর বিরুদ্ধে রাজনীতির ময়দানে নবাগতা কৌশানী মুখোপাধ্যায়ের লড়াইটা যে সহজ হবে না, তা রাজনৈতিক ময়দানের একাংশ আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করে ফেলেছিল। কিন্তু লড়ডাই কঠিন হলেও দমে যাননি কৌশানী।
সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের আসন জিতে 'দিদি'কে উপহার দেওয়ার জন্য বেজায় কসরতও করতে হয়েছে তাঁকে। প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পরদিন থেকেই কৃষ্ণনগরের মাটি কামড়ে পড়েছিলেন। বাড়িভাড়া করে সেখানেই থাকছিলেন। সকাল সন্ধে এলাকার বিভিন্ন মানুষদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে অভাব-অভিযোগ শুনেছেন। কৌশানীর ভাইরাল ভিডিও ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠলেও নির্বাচনের দিন প্রত্যকটি বুথে বুথে গিয়ে তাঁকে তদারকি করতে দেখা গিয়েছিল যে, ভোটাররা কোভিড সুরক্ষাবিধি মেনে ভোট দিচ্ছেন কিনা! এককথায় প্রচারের ময়দানে ঝড় তোলার পর শেষ পরীক্ষার দিনেও ময়দানে দেখা গিয়েছে তৃণমূলপ্রার্থী কৌশানীকে। অন্যদিকে নির্বাচনী ময়দানে অপেক্ষাকৃত মুকুল রায়কে কম দেখা গেলেও কৃষ্ণনগরবাসীর (Krishnanagar) রায় গিয়েছে বিজেপিপ্রার্থীর দিকেই।