বয়স নেহাত কম হলেও, এই ইন্ডাস্ট্রির কাছে তিনি রানী রাসমণি। সেই ছোট্টবেলা থেকে তাঁর অভিনয় মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। শুধু যে অভিনয়, তাও কিন্তু নয়! বরং বলাই উচিত, দিতিপ্রিয়া রায় মানুষটিও কিন্তু সকলের খুব প্রিয়। একদিকে যেমন অভিনয় দক্ষতা, তেমনই মানুষের উপকার, এবং মহানুভবতা তাঁকে অন্য পরিচয় দিয়েছে। ব্যস্ততার শেষ নেই, ডাবিং নতুন প্রজেক্টের প্রিপারেশন, কিন্তু নববর্ষের দিন সেই দিতিপ্রয়াই আর পাঁচজনের মত পাড়ার মেয়ে।
প্রচুর ব্যস্ততা, তবে নববর্ষের প্ল্যানিং কিন্তু এখন থেকেই সেরে ফেলেছেন তিনি। ফোন ধরতেই হাসিমুখ! কাজের চাপে নাজেহাল অবস্থা। কিন্তু বাংলার নতুন বছরের শুরু, বিশেষ কিছু তো থাকবেই। আদ্যোপান্ত কলকাতায় বেড়ে ওঠা, টালিগঞ্জের বাসিন্দা তিনি। ছোটবেলার হালখাতা, বাবা মায়ের হাত ধরে দোকানে দোকানে ঘুরে বেড়ানো... স্মৃতি ঘেঁটে অভিনেত্রী বললেন, "আমার যেটা সবথেকে বেশি মনে পড়ে জানো তো, আগে পায়ে হেঁটে সব দোকানে ঘুরে ঘুরে হালখাতা করতাম। একটা ক্যালেন্ডার, আরেকটা মিষ্টির প্যাকেট - এটা যে আমার কি ভাল লাগত, বলে বোঝানো যাবে না। তবে, এখনও যেতে হয়। না গেলে খুব মুশকিল। কিন্তু আমরা নববর্ষের দিনও কাজ করি"।
ছোট থেকে একই জায়গায় বড় হয়েছেন অভিনেত্রী। সেই এলাকায় তিনি শুধু দিতিপ্রিয়া নন, বরং এক্কেবারে পাড়ার মেয়ের মতন। ছোটবেলা থেকে যে জায়গায় গিয়েছেন সেখানে অল্প সময়ের জন্য হলেও মুখ দেখাতে হয় দিতিপ্রিয়াকে। ছোটবেলা থেকে এভাবেই কাটত তাঁর। নতুন জামা, খাবার দাবার সবকিছু মিলিয়ে একরকম দারুণ আড়ম্বরে কাটত। তবে, এখন দায়িত্ব বেড়েছে, পরিচিতি বেড়েছে।
কিন্তু এবারের প্ল্যানিং ঠিক কেমন? দীর্ঘশ্বাস ফেলে অভিনেত্রী বললেন, "যতটা মনে পড়ছে আমি সকাল থেকে সেদিন ডাবিং করব। তারপর সুদীপ্তা চক্রবর্তীর একাডেমীতে যেতেই হবে। ওরা বেশ সুন্দর করে সবকিছুর আয়োজন করছে। এইভাবেই ঘুরে বেড়ানো সবাই মিলে"। সকাল থেকেই ব্যস্ততা। তারই মাঝে নানান নববর্ষের অনুষ্ঠান। কিন্তু বাঙালির নববর্ষে খানাপিনা হবে না, সেটা তো একেবারেই সম্ভব নয়। দিন পাল্টেছে, বাঙালি বাংলার কোন সাল, সেটি বলতেও পাঁচবার ভেবে নিচ্ছে, আবার কেউ কেউ বেশ থতমত খেয়েছেন উত্তর দেওয়ার আগে। কিন্তু দিতিপ্রিয়ার বাড়িতে নববর্ষ স্পেশ্যাল মেনুর কী কোনও বদল এসেছে?
সেই কোন ছোটবেলা থেকেই ইন্ডাস্ট্রিতে। অভিনেত্রীর কথায়, "এটা আমাদের বাড়িতে কী বলতো, জানতাম যে মা রান্নাবান্না করবেন। বিশেষ কিছু আয়োজন থাকবে। কিন্তু আমি তো অনেক ছোট থেকেই কাজ করছি। টুকটুক করে মাঝেমধ্যেই ব্যস্ততা থাকত। আমার খুব একটা মনে পড়ে না যে কোনওদিন খুব বিরাট গ্যপে বাড়িতে বসে থেকেছি। মা রান্না করেন বেশ, ঝোলে ঝালে অম্বলে, এটুকুই। এবার তো যা ব্যস্ততা, মায়ের হাতের খাবার মিস যাবে মনে হচ্ছে"।