শেষ কিছু মাসে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে, এবং অভিনেত্রীদের সঙ্গে যৌন হেনস্থার নানা প্রমাণ মিলেছে। অভিনেত্রীরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন তাদের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদে। কিন্তু এবার এক রাজনৈতিক নেত্রী, সামান্থা এবং নাগা চৈতন্যর ডিভোর্স নিয়ে মন্তব্য করে বসেছেন, তারপরেই তোলপাড় দক্ষিণ ইন্ডাস্ট্রি জুড়ে।
নাগার্জুন পুত্র নাগা চৈতন্যর সঙ্গে সামান্থা দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। যদিও সেই বিয়ে বেশিদিন টেকেনি। দুজনের বিবাহ বিচ্ছেদের পর, অনেকদিন পর্যন্ত তারা মুখ খোলেননি। তাঁর থেকেও বড় কথা, নাগা চৈতন্য দ্বিতীয় বারের মতো শোবিতার সঙ্গে নতুন সম্পর্কে শুরু করেছেন।
নাগার্জুন বরাবরই জানিয়েছিলেন, সামান্থা সবসময় তার মেয়ের মতো। যে কোন বিপদে অভিনেত্রীর পাশে গিয়ে দাঁড়াবেন তিনি। কিন্তু তেলেঙ্গানা মিনিস্টার, কোন্ডা সুরেখার মন্তব্যের পর, যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে সেই পরিবারে, তাতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন গোটা দক্ষিণের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। সামান্থার সঙ্গে চৈতন্যের বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে, সেই মন্ত্রী উল্লেখ করেন আরেক রাজনৈতিক নেতার উপস্থিতিকে।
সুরেখা দাবি করেন, বিআরএস সভাপতি কেটি রামা রাও নাগার্জুন আক্কিনেনির এন-কনভেনশন সেন্টারকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর বিনিময়ে সামান্থাকে দাবি করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, "কেটিআর এন-কনভেনশন সেন্টার না ভাঙার বিনিময়ে সামান্থাকে পাঠাতে বলেছিলেন। নাগার্জুন সামান্থাকে কেটিআর-এর কাছে যেতে বাধ্য করতে শুরু করেন, কিন্তু সে যথারীতি সে না বলে। এর ফলে বিবাহবিচ্ছেদ হয়।"
আরও পড়ুন - Koel Mallick: পুজোর আগেই কোয়েল দিলেন সুখবর, দায়িত্ব বাড়ছে ছেলে কবীরের...
এহেন গুরুতর মন্তব্যের জেরেই, নাগার্জুনের গোটা পরিবার এবং সামান্থা নিজেও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। অভিনেত্রী দাবি করেছিলেন, রাজনীতির মধ্যে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ককে না টানলে তিনি খুশি হবেন। তিনি বলেছিলেন, "একজন মহিলা হওয়ার জন্য খুব সাহসের প্রয়োজন। একজন মহিলা যাকে বাইরে বেরিয়ে কাজ করতে হয়, এই ইন্ডাস্ট্রির বুকে টিকে থাকার জন্য লড়াই করতে হয়, সেখানে এহেন মন্তব্য? গ্ল্যামারাস শিল্পে টিকে থাকতে যেখানে মহিলাদের প্রায়শই প্রপস হিসাবে বিবেচনা করা হয় না... এর জন্য অনেক সাহস এবং শক্তি লাগে।"
কিন্তু এবার এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন, নাগা চৈতন্য। আজ পর্যন্ত কোনোদিন নিজের বিবাহিত সম্পর্ক নিয়ে, বা তার বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি। ঘটনা ঘটার পর তিনি বেশ চুপ হয়ে গিয়েছেন এবং শান্ত হয়ে গিয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন কাছের মানুষরা। তবে এবার যেন আর তার, চুপ থাকার উপায় নেই।
অভিনেতা সমাজ মাধ্যমে লিখছেন...
"বিবাহ বিচ্ছেদের চিন্তাভাবনা, যেকোনো মানুষের জীবনে খুব কষ্টদায়ক এবং হতাশার। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া মোটেই সহজ নয়। অনেক ভাবনা চিন্তা অনেক নিজস্ব সিদ্ধান্তের পরেই, আমি এবং আমার প্রাক্তন স্ত্রী আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল খুব শান্তিভাবে। আমাদের দুজনের জীবনের আলাদা আলাদা উদ্দেশ্য এবং আগ্রহকে মাথায় রেখে আমরা এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমরা দুজনেই সাবালক এবং সাবালিকা, দুজনের প্রতি সম্মান এবং সততা বজায় রেখেই এই কাজ আমরা করেছিলাম। কিন্তু যাই হোক না কেন এই ধরনের মিথ্যে অপবাদ, এবং গুজব মেনে নেওয়ার মতো নয়। আমি আমার প্রাক্তন স্ত্রীর কারণে চুপ ছিলাম। তার সম্মানে কোন আঘাত লাগুক আমি চাইনি।"
চৈতন্য আরো বললেন, "আজ সুরেখা দেবী যে মন্তব্য করেছেন সেটি শুধু মিথ্যে না, সেটি অত্যন্ত অপমানজনক এবং সেটি গ্রহণ করার মত নয়। যেকোনো মহিলা, সম্মান এবং সাপোর্টের দাবি রাখে। একজন তারকার, ব্যক্তিগত জীবনকে হাতিয়ার করে এবং সেটিকে এক্সপ্লোইড করার কোন মানেই হয় না।"
নাগা চৈতন্য একা নয়। বরং জুনিয়র এনটিআর, আল্লু অর্জুন, নানি, দক্ষিণের প্রচুর তারকা সামান্থা এবং চৈতন্যের বিচ্ছেদ নিয়ে করা ভয়ংকর মন্তব্যের ধিক্কার জানিয়েছেন।