'দ্য ওয়্যার' সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি সিদ্ধার্থ ভাটিয়ার সঙ্গে এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে বর্ষীয়ান অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট অথবা সিএএ) নিয়ে বলিউডের অবস্থান সহ নানা বিষয়ে নিজের মতামত জানান, এবং কালে কালে শিল্পের বিবর্তন নিয়েও মত প্রকাশ করেন।
Advertisment
ফিল্ম জগতের যেসব ব্যক্তিত্ব সিএএ'র বিরোধিতা করছেন, তাঁদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে নাসিরুদ্দিন বলেন, "এঁদের সাহস বেশি, হারানোর তেমন কিছু নেই। ইন্ডাস্ট্রিতে এঁদের চেয়ে বেশি প্রতিষ্ঠিত যাঁরা, তাঁরা কেন মুখ খুলছেন না তা বোঝাই যায়। কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে, ঠিক কতটা হারানোর ভয় এঁদের? প্রাণের ভয় আছে কি? দীপিকা পাড়ুকোনের মতো একটা মেয়ের সাহসের তারিফ করতেই হয়, যে কিনা শীর্ষে থেকেও এরকম পদক্ষেপ নিতে পারে।"
ইদানীং বলিউডে 'দেশাত্মবোধক ছবির' প্রাধান্য নিয়েও মন্তব্য করেন নাসিরুদ্দিন। "যাঁদের হাতে ক্ষমতা, তাঁদের কাছে বরাবরই মাথা নত করে যে কোনও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। তবে যেসব পরিচালক নতুন করে ইতিহাস লিখতে সাহায্য করছেন, তাঁদের নিজেদের বিশ্বাস কতটা, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।"
এছাড়াও সত্তরের দশকে তৈরি ছবির সঙ্গে আজকের ছবির তুলনা করেন নাসিরুদ্দিন শাহ। "মাসান, গল্লি বয়, বা অনুরাগ কশ্যপ যে ধরনের ছবি করেন, এসব কিছুই হতো না যদি না সত্তরের দশকের পরিচালকরা রাস্তা তৈরি করে না দিতেন। কারিগরি দক্ষতার দিক থেকে দেখলে আজকের দিনের কম বাজেটের ছবি সত্তরের দশকের ছবির তুলনায় অনেকটাই উন্নত। আমার আজকের অভিনেতাদের দেখলে হিংসে হয়। ওঁদের বয়সে আমি যদি এত ভালো হতাম...
"তবে রাজনৈতিক দিক থেকে বলতে গেলে 'অ্যালবার্ট পিন্টো'র (বা ওই ধরনের ছবির) কোনও উত্তরসূরি আসে নি। যদিও সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের কল্যাণে সারা দেশের মুক্তমনা মানুষ একজোট হয়েছেন, যেখান থেকে নিশ্চিতভাবে খুব উঁচুমানের শিল্প বেরোবে," বলেন নাসিরুদ্দিন।
তাঁর সতীর্থ অনুপম খের সম্পর্কেও নিজের মতামত দেন নাসিরুদ্দিন। সিএএ-বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন হিংসার ঘটনা সম্পর্কে বেশ কিছু অর্থপূর্ণ টুইট করেন অনুপম খের।
"অনুপম খেরকে সিরিয়াসলি নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। ও একটা ভাঁড়। এফটিআইআই (FTII, অর্থাৎ ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়া) বা এনএসডি (NSD, ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা)-তে ওর সমসাময়িক যে কোনও কাউকে জিজ্ঞেস করলেই জানতে পারবেন, ওর স্বভাবটাই চাটুকারের। ওর রক্তে রয়েছে, ওর কিছু করার নেই," বলেন নাসিরুদ্দিন।