Ramkamal Mukherjee: 'জীবনে প্রথম স্টার থিয়েটারেই নাটক দেখেছিলাম', শৈশব নিয়ে নস্ট্যালজিক 'বিনোদিনী'র পরিচালক রামকমল

Ramkamal Mukherjee's Noti Binodini: ‘বাংলা সাহিত্যের ভান্ডার এত বিপুল না, এটা কোনদিনও শেষ হবেনা। আমি যদি রবীন্দ্রনাথকে দেখছি বা বঙ্কিমচন্দ্রকে দেখি কিংবা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কথা বলি…’

Ramkamal Mukherjee's Noti Binodini: ‘বাংলা সাহিত্যের ভান্ডার এত বিপুল না, এটা কোনদিনও শেষ হবেনা। আমি যদি রবীন্দ্রনাথকে দেখছি বা বঙ্কিমচন্দ্রকে দেখি কিংবা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কথা বলি…’

author-image
Anurupa Chakraborty
আপডেট করা হয়েছে
New Update
 ace director ramkamal mukherjee on noti binodini

Ramakal Mukherjee-Binodini: বিনোদিনী- একটি নটীর উপাখ্যান প্রসঙ্গে রামকমল মুখোপাধ্যায়...

এমন একজন নারী চরিত্র তাঁকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা খুব সহজে সম্ভব না। কিন্তু জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায় নিজের কাজটা করলেন, এবং যাকে নিয়ে করলেন সেই রুক্মিণী মৈত্র 'নটী বিনোদিনী' হিসেবে ফুল মার্কস পেলেন কি তাঁর কাছে? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি।

Advertisment

১. নটী বিনোদিনীকে নিয়ে কাজ কেন?

অনেকদিন ধরে কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হয়ে ওঠেনি। এতটা সহজ না এখানে পিরিয়ডিক ছবি নিয়ে কাজ করা। কারণ, অনেকটা প্রস্তুতি লাগে। এতেই সময় চলে গিয়েছে। আর নটী বিনোদিনীর জীবনটা এতটাই বিস্তারিত যে সেটাকে কী করে ২ ঘণ্টার মধ্যে ফুটিয়ে তোলা যাবে সেটা নিয়ে একটু ভাবনা ছিল। ঠিকমতো টিম একত্রে আনা। তাই, হয়তো আমার একটু সময় লেগেছে। কিন্তু বাংলাতে করব বলে যে কিছু কিছু বিষয় আমার খুব পছন্দের, এটা একটা।

২. এর আগে তো দিনেন গুপ্ত দেবশ্রী রায়কে নিয়ে  নটী বিনোদিনী চলচ্চিত্র বানিয়েছিলেন, এবার আপনি ঠিক কীভাবে রুক্মিণীকে বানিয়ে তুললেন বিনোদিনী?

Advertisment

দিনেন গুপ্ত বহুবছর আগে বানিয়েছিলেন নটী বিনোদিনী। সেটায় দেবশ্রী রায় এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন। কিন্তু সেটা একদম অন্যধরনের। উনি সিনেমাটা অনেকটাই বীনা দাশগুপ্তর যে নাটকটা ছিল নটী বিনোদিনী সেটার ওপর ভিত্তি করে, সেটার অনুপ্রেরণায় করা হয়েছিল। আমার ছবির সঙ্গে তাঁর কোনো মিল নেই। এই ছবিতে যে ধরনের প্রেজেন্টেশন আমরা তুলে ধরেছি, সেটা সম্পূর্ন আলাদা। যারা দেখবেন ছবিটা, তাঁরা বুঝতে পারবেন।

৩. রুক্মিণীর থেকে যতটা চেয়েছিলেন ততটাই পেয়েছেন?

রুক্মিণীর থেকে যতটা চেয়েছিলাম, তাঁর থেকে অনেকটা বেশীই পেয়েছি। কারণ, ২০১৯ সালে যখন আমি এটা নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করলাম, রুক্মিণীকে তখনও বড়পর্দায় দেখা যায়নি। ও তখন ওর প্রথম ছবির শুটিং করছে, বোধহয় সেটা 'চ্যাম্প'। তখন রুক্মিণীর সঙ্গে আমার আলাপ হয়নি। আমি দেবের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম, অন্য একটি কারণে। তখনো আমার সঙ্গে রুক্মিণীর আলাপ করিয়ে দিল। তখন আমার কোথাও গিয়ে মনে হয়েছিল যে, রুক্মিণীর মধ্যে অন্যরকম একটা ব্যাপার আছে। ও যেভাবে সিনেমাকে দেখে যেভাবে সিনেমাকে বোঝে, সেটা অন্যরকম। তারপরে ওর সঙ্গে আমার কথোপকথন চলতেই থাকতো। কারণ আমি বম্বে নিবাসী আর ও বোম্বের মেয়ে। আমি ওকে ছোট্ট একটি ছবিতে রোল করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু তখনও আরেকটি বাংলা ছবি করছিল বলে সেটা সম্ভব হয়নি। তারপর যখন আমরা ভাবলাম যে নটী বিনোদিনী করব, চিত্রনাট্য লেখা শুরু হল। তখন আমার মনে হয়েছিল যে আমি রুক্মিণীকে করার কথা বলব। ও ভীষণ অবাক হয়ে গেছিল এই কথাটা শুনে যখন আমি ওকে বলেছিলাম যে নটী বিনোদিনীর জন্য আমি তোমার কথা ভাবছি। আমি ওর কাছ থেকে সময় এবং চরিত্রটার প্রতি ডেডিকেশন, যতটা পেয়েছি একজন পরিচালকের এর থেকে আর কিছু বেশি পাওয়ার নেই। যখন একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রী তার একটি নির্দিষ্ট চরিত্র অভিনয় করার জন্য সর্বস্ব দিয়ে দেয়, কখনো প্রশ্ন করে না যেটা কবে হবে কি করে হবে, আর অন্যান্য কারা কারা আছে এটাও জানতে চায়নি। শুধু ওকে যেমন- যেমন বলতাম ও তেমন তেমন করতো। এটা প্র্যাকটিস করতে হবে ওটা প্র্যাকটিস করতে হবে এটা দেখতে হবে এই নিয়েও ব্যস্ত থাকতো। 

৪. সত্যিই কি অভিনয় বিক্রি হয়? পরিচালকের কী মতামত?

অভিনয়টা সত্যিই বিক্রি হয়। কারণ আমরা যে সিনেমাটা দেখি বা অভিনয়টা দেখি সেটা টিকিট কেটে দেখি। অভিনয়টা কিন্তু একটা প্রোডাক্ট। কারন আমরা যারা টিকিট কেটে অভিনয় দেখি এবং তারপরে তাকে ভালো-মন্দ বলি, কাউকে আপ্রিসিয়েট করতে গেলে কিন্তু আমাদেরকে পয়সা দিয়ে অভিনয়টা দেখতে হবে। এটা শুধু অভিনয় না খেলাও তাই। সে মাঠে গিয়ে খেলা দেখুক, কিংবা বাড়িতে বৈদ্যুতিন মাধ্যমে। পয়সা কিন্তু দিতেই হয়। আমরা আমাদের পয়সা দিয়ে সেটা দেখছি এবার আমাদের ওপর যে আমরা সেটাকে ভালো-মন্দ বলব কি বলবো না। অভিনয়টা বিক্রি করার জিনিস। আমরা যদি টিকিট কেটে না দেখি তবে ভালো অভিনয় আমরা দেখতে পাবো না।

৫. ছবির ক্যাপ্টেন অফ দ্যা শিপ হিসেবে নিজেকে কত নম্বর দেবেন এই ছবির ডিরেকশন দেওয়ার পর?

ক্যাপ্টেন অফ দ্য শিপ মানে সে তো সবই করবে। আমিও তাই করেছি, অত্যন্ত নিষ্ঠা দিয়ে করেছি। আমি নিজেকে কোনদিনও ক্যাপ্টেন অফ দা শিপ ভাবি নি। যে আমি শুধু আমার ছবি নিয়ে বসে থাকবো বাকিরা সবাই সব কাজ করবে। প্রত্যেকটা সহকর্মীর সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে, পায়ে পা মিলিয়ে এই কাজটা করেছি। এবং আমার মনে হয় প্রত্যেকটা সদস্য যারাই ছবির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এখনো পর্যন্ত ইমোশনালি ভীষণভাবে অ্যাটাচড। কারণ সিনেমার শুটিং অনেকদিন আগে শেষ হয়ে গিয়েছে। আসন্ন মুক্তি। সিনেমাটাকে নিয়ে যে ধরনের মেমোরিজ তৈরি হয়েছে না, যখনই সকলে কথা বলে এই নিয়ে তখন মানুষের চোখে জল চলে আসে। তাই আমার মনে হয, অন্তত আমার ছবির ক্ষেত্রে, ক্যাপ্টেন অফ দা শিপ তো পরিচালক বটেই, কিন্তু তাঁর থেকেও আমি এটুকুই বলবো, সকলে আমায় খুব ভালোবাসে, আমার সঙ্গে পরবর্তীতে কাজ করতে চায়। তাই আমার মনে হয় তাদের জিজ্ঞাসা করা উচিত যে আমি কত নম্বর পাওয়ার যোগ্য।

৬. বাংলা সাহিত্যের কোনও দৃঢ় নারী চরিত্র, যাকে নিয়ে ছবি হয়নি কিন্তু আপনার ইচ্ছে আছে?

বাংলা সাহিত্যের ভান্ডার এত বিপুল না, এটা কোনদিনও শেষ হবেনা। আমি যদি রবীন্দ্রনাথকে দেখছি বা বঙ্কিমচন্দ্রকে দেখি কিংবা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কথা বলি, বিভুতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা বলছি, বা সুচিত্রা ভট্টাচার্যকে দেখি, আমাদের এত চরিত্র রয়েছে পুরুষ এবং নারী মিলিয়ে কিংবা শিশু, যা নিয়ে প্রচুর কাজ করা যেতে পারে। এবং বাংলার পরিচালকরা সেটা করছেন। সাহিত্যভিত্তিক ছবি করতে গেলে আমার মনের প্রযোজকের তরফে খুব সাহায্য চাই। কারণ এগুলো করতে গেলে একটা বাজেট লাগে একটা পিরিয়ডই ক্রিয়েট করা নেহাতই সহজ নয়। সেটা সঠিকভাবে তুলে ধরতে গেলে সাধারন ছবির থেকে একটু বেশি বাজেট লাগে। এবং তার সঙ্গে সঙ্গে ভাল অভিনেতা অভিনেত্রী লাগে। আপাতত আমি নটী বিনোদিনী করেছি, দ্রৌপদীর কাজ চলছে, কর্মযজ্ঞ একটা ব্যাপার। বেশ কিছু চরিত্র বা সাহিত্য রয়েছে যে নিয়ে আমি কাজ করতে চাই কিন্তু এখনই আমি সেটা নাম নিতে চাইছি না। কিন্তু সাহিত্য নির্ভর ছবি করতে আমি আগ্রহী। শুধু বাংলা সাহিত্য নয়, যেকোনো সাহিত্য।

৭. বাংলার পরিচালকদের কি গল্প নিয়ে আরও বেশি রিসার্চ করা উচিত?

বাংলার পরিচালকদের সবকিছু নিয়ে রিসার্চ করা দরকার। শুধু কাহিনী বা চিত্রনাট্য কেন? এই যে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের 'বহুরূপী' সিনেমাটি এতটা ভালো চলল, এবং বাঙালি সেটি হলে গিয়ে দেখছে কারণ, শিবু প্রতিবার গল্পটা অসাধারণ ভাবে বলতে পারে। এবং সেটা আমার মনে হয় কৌশিক গাঙ্গুলী দারুন ভাবে করছে। 'অর্ধাঙ্গিনী' দেখুন বা 'অযোগ্য', সেগুলো মানুষ পছন্দ করছেন। আর যদি প্রশ্ন করা হয় যে পরিচালকদের রেজাল্ট করা উচিত কি উচিত নয়, তাহলে আমি এটুকুই বলবো যে বাঙালি কিন্তু এখনো গল্প দেখতেই হলে বা থিয়েটারে যায়। তাদের যদি গল্পটা ভালো লাগে তাহলেই কিন্তু, তাঁরা সিনেমাটিকে সাকসেসফুল করে। যখনই বাংলা-দর্শক ভালো গল্প পেয়েছেন, তখনই তারা হলমুখি হয়েছে। 

৮. জাতীয় পুরস্কার কি আপনার আরও দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে?

জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর একটাই দায়িত্বটা বেড়ে যায়, যে মানুষের এক্সপেকটেশন বজায় রাখা। আমি যে ধরনের ছবি এতদিন বানিয়ে এসেছি, অর্থাৎ নায়িকা কেন্দ্রিক বা সামাজিক সামাজিক প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে, তো সেই ধরনের কোন ছাপ আমার ছবিতে থাকবে। এই দাবিটা মানুষের আমার ছবিতে রয়েছে। এবং তাদের মনের আশাটা পূরণ করাটা আমার দায়িত্ব। অবচেতন মনে ঘুরতে থাকে তারা সেই গন্ধটা যেন আমার ছবিতে পায়। তবে সেই ফোকাসটা কিন্তু আমি রাখি না। আমার মতো করেই করি। বিনোদিনী যখন ফ্লোরে বা আমরা যখন শুট করছি, আমার মাথায় কিন্তু এটা চলছে না যে এত পুরস্কার পেয়েছি বলে আমাকে আরো বেশি ভালো করে কাজটা করতে হবে। আমার প্রত্যেকটা ছবিতে যে জোর আমি দি, সেটাই করেছি। ইফোর্ট কিন্তু আমার একই ছিল। আর জাতীয় পুরস্কারটা কিন্তু একটা বিশেষ সম্মান। যেটা খুব বাছাই করা পরিচালকরা পেয়ে থাকেন। এবং আমার মনে হয় যে শেষ বছর এক দুয়ার জন্য যে জাতীয় পুরস্কার আমি পেয়েছি সেটি আমার কাছে বিশাল পাওয়া। পরিচালক হিসেবে আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৯ এ। ২০২৩ এর মধ্যে আমি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছি। এটা আমার কাছে খুব গর্বের ব্যাপার।

৯. বিনোদিনী দাসীর সঙ্গে স্টার থিয়েটারের গভীর সম্পর্ক, পরিচালক রামকমল এর কোনও প্রিয় থিয়েটার হাউজ বা সিনেমা হল আছে?

এ প্রশ্নটা খুব সুন্দর। বিনোদিনী দাসীর কাছে স্টার থিয়েটার শুধু একটা থিয়েটার নয় এটা তাঁর অস্তিত্বের পরিচয়। আমার মনে আছে, আমার বাবা মা আমাকে ছোটবেলায় হাত ধরে হাতিবাগানে স্টার থিয়েটারে নিয়ে গিয়েছিলেন। 'আনন্দমঠ' দেখতে গিয়েছিলাম। যেখানে অভিনয় করেছিলে সুপ্রিয়া দেবী। আমার ছোটবেলার অভিজ্ঞতা কিন্তু স্টার থিয়েটারই প্রথম থিয়েটার দেখা। এখন যখন পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছবি করছি সেটাও স্টার নিয়েই। আর সিনেমা হল বলতে গেলে আমার কাছে ছবিঘর, এবং নন্দন একটি বিশেষ জায়গা রাখে। অনেক ভালো ভালো ছবি দেখেছি ছবিঘরে। আমার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা সেন্ট্রাল ক্যালকাটা অর্থাৎ মধ্য কলকাতায়। ছবিঘরের নাম এজন্য উল্লেখ করলাম কারন সেইখানে, তরুন মজুমদারের ছবি, মৃণাল সেনের ছবি, সত্যজিৎ রায়ের ছবি, ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবি এগুলো সব ছবিঘরে আসত। কেন আসতো কি জন্য আসতো সেটা আমি বলতে পারব না। আর অরুণা এবং পূরবীতে বেশি আসতো কমার্শিয়াল হিন্দি ছবি। অমিতাভ বচ্চন, মিঠুন চক্রবর্তী এদের ছবি। ছবিঘরে আমার সুন্দর ছবি দেখার অভিজ্ঞতা আছে। ছবিঘর তখন AC হল। এরপর, নন্দন বাবা মা নিয়ে গিয়েছিলেন প্রথম। নন্দনে দেখা আমার প্রথম ছবি 'তিতাস একটি নদীর নাম', ঋত্বিক ঘটকের। তারপর যখন আমি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি, সম্ভবত ১৯৯৭-৯৮ সাল, চলচ্চিত্র উৎসবের যে বুলেটিনটা বের হতো ওটা দিয়েই আমার সাংবাদিকতার হাতে খড়ি। সে দুটো বছর নন্দন আমার বাড়ির মত হয়ে উঠেছিল। সেখানে বসে কাজ করা সিনেমা দেখা। মানে বাড়ি থেকে বের হতাম তারপর নন্দনে সময় কাটিয়ে দিতাম। 

১০. অভিনেত্রীদের পান থেকে চুন খসলে এখন অনেক কথা শুনতে হয়। সেযুগেও নিশ্চই ছিল। কিন্তু, পরিচালকের বাইরে একজন দর্শক হিসেবে আপনার কাছে কি এগুলো যুক্তিযুক্ত?

না বিষয়টা হচ্ছে পান থেকে চুন খসলে কথা তখনো শুনতে হতো এখনো শুনতে হয়। তখন একরকম ভাবে শুনতে হতো এখন অন্যরকমভাবে শুনতে হয়। তখন চিত্র সমালোচকরা অভিনেতা অভিনেত্রী পরিচালক সংগীত পরিচালক সকলের উদ্দেশ্যে, কিছু ভালো লাগলেও তারা লিখতেন, আবার কিছু ভাল না লাগলে সমালোচনাও করতেন। কিন্তু সেটা ছবি রিলিজের এক সপ্তাহ পরে। বা কখনো দু তিন দিন চার দিন পরে। এখন বিষয়টা অন্য হয়ে গেছে। পরিচালক হিসেবে এখন আমাদের বলার আর জায়গা নেই। আমাদের মতামত টা অনেক পরে। মানুষ এখন নিজে সমালোচক। কেউ প্রথম ১০ মিনিট ছবিটা দেখে রিভিউ করে দিচ্ছে। কেউ টিজার দেখে অপিনিয়ন দিচ্ছে, কেউ ট্রেলার দেখে অপিনিয়ন দিচ্ছে। শুরুতেই ছবি নিয়ে নানা রকম বক্তব্য রাখছে। কিন্তু দুঃখের কথা কোথায় জানো, যারা এই কাণ্ডগুলো করছে তাদের ম্যাক্সিমাম কিন্তু সিনেমা নিয়ে পড়াশোনা করেছে বলে আমার সন্দেহ আছে। তারা যে কথাগুলো বলে, সেই শব্দভাণ্ডার শুনলেই সেটা বোঝা যায়। যারা সমালোচনা করছেন, তাদের কিন্তু বলার ধরন দেখলে বোঝা যায়। সেরকমই গুটিকয়েক, যখন না জেনে বুঝে উল্লেখ করে, বা জেনে বুঝেও উল্লেখ করে আমরা বোঝার চেষ্টা করি এই আরকি।

Ramkamal Mukherjee tollywood tollywood news Rukmini Moitra