'মান্টো' ছবির জন্য তিনি ১ টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন। স্টিরিওটাইপ তকমা ভেঙেছেন হেলায়। প্রমাণ করেছেন, শিরোনামে টিকে থাকতে হিরো হওয়ার প্রয়োজন নেই তাঁর। আর সর্বোপরি তাঁর চোখের গভীরতা, সেই কারণে আজ পরিচালক নন্দিতা দাসের অভিনেতা তিনি। স্বীকার করেছেন নন্দিতা নিজেই। তিনি নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। 'মান্টো' মুক্তি পাওয়ার আগে কলকাতায় এসেছিলেন ছবির প্রচারে।
মান্টো-র চরিত্রটা পেয়ে অনুভূতি কী ছিল?
মান্টোর সঙ্গে আমি নিজের অনেক মিল খুঁজে পেয়েছি। ছবিটা করতে গিয়ে মনে হয়েছে, আরে! এই কথাগুলোই তো আমি বলতে চেয়েছিলাম। ওঁর দর্শনের সঙ্গে সাদৃশ্য পেয়েছি। কিন্তু আমরা ভীতু, জীবনে অনেক আপোষ করে ফেলেছি।
মান্টো চরিত্রটা পর্দায় তুলে ধরার প্রস্তুতিতা...
কঠিন ছিল। চরিত্রটার প্রতি সৎ থাকতে হয়েছে আগাগোড়া। একটুও অসৎ হলে মুশকিল ছিল। আর এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।
পরিচালক কতটা পাশে ছিলেন?
আহ! আসলে নন্দিতা পাঁচ-ছয় বছর ধরে মান্টোকে নিয়ে রিসার্চ করছে। এতটাই জেনে ফেলেছিল যে সেটে তো লেডি মান্টো ঘুরে বেড়াচ্ছে মনে হত! আর চার-পাঁচদিনের ওয়ার্কশপেও বিষয়টা সহজ হয়ে গিয়েছিল। সবটা নন্দিতা জেনে এসেছিল, মান্টোর মেয়েদের সঙ্গে দেখা করে এসেছিল, ফলে আমায় চরিত্রটা জানতে বেশি বেগ পেতে হয়নি। চরিত্রটা পোর্ট্রে করতে পরিচালক ভীষণই সাহায্য করেছে।
কলকাতায় মান্টোর প্রচারে নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। ছবি: সুস্মিতা শীল
আপনার কেরিয়ারে বিভিন্ন ধরনের চরিত্র রয়েছে, কারণ?
বিগত ষাট বছর ধরে যে টিপিকাল বলিউড হিরোর ধারণা আমাদের মাথায় বসে আছে, সেই চরিত্র ছাড়া আর সব ধরনের চরিত্র করেছি। আর ওটা করিনি বলেই আমাকে শিলমোহর দেওয়ার মতো করে বলা হয়, একে ক্যাটাগোরাইজ করে দাও।
যেমন, একসময়ে বাংলা ছবি দেখে বড় হয়েছি। বাংলা ছবির অভিনেতাদের দেখে কাজ শিখেছি। তখন বাংলা ছবি বিশ্বের রিচ ছবির ঘরানায় পড়ত। আজ যখন বাংলা ছবি দেখি, চারিদিকে বলিউডের দ্বারা প্রভাবিত হিরোদের দেখি। হাত ছড়িয়ে গান গাইছেন। এই স্টিরিওটাইপ থেকেই বোরোতে চেয়েছি। আমার চরিত্রগুলোর মধ্যে যেন বলিউড হিরোর ছাপ না থাকে, আর যা খুশি থাক।
পরিচালক নন্দিতা দাস, না অভিনেত্রী?
কেন, দুজনকেই একসঙ্গে ভাল লাগতে পারে না? এর আগে ফিরাকেও একসঙ্গে কাজ করেছি আমরা। অনেকদিন ধরে দুজনেই বলছিলাম, এবার একসঙ্গে অভিনয় করা যাক। ভুটানে গিয়ে যদি... (কথা কেটে নন্দিতা বললেন, "লোকেশনও বলে দিলে?") পুরো ছবিতে দুজন চরিত্র থাকবে - এই রে, প্লটটাও বলে ফেলছিলাম।