দিন কয়েক ধরেই জল্পনা রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh) বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। দলবদলের জোয়ারে অসূয়া ঝরে পড়ছিল তাঁর কণ্ঠেও। রাজ্যের শাসক দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে, সহকর্মীদের গো-মাংস রান্না ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্য করে ক্রমশই পদ্ম শিবিরের দিকে ঝুঁকছিলেন তিনি। সেই অভিলাষেই শনিবার এক নতুন 'পথের দাবি'তে দিল্লিতে উড়ে যেতে চেয়েছিলেন অভিনেতা। রাজীব-বৈশালীদের সঙ্গেই রাজধানীতে উড়ে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। দিল্লি পাড়ি দেওয়ার আগে বিমানবন্দরে তাঁদের সঙ্গে সেলফি তুলতেও দেখাও যায় উচ্ছ্বসিত অভিনেতাকে।
কিন্তু কোথায় কী, সেই চার্টার্ড ফ্লাইটে জায়গাই হল না রুদ্রনীল ঘোষের! এমনটাই বলছে ঘনিষ্ঠ সূত্র। আর সেকথা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলের অন্দরে জোর শোরগোল শুরু হয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা তো এও বলতে শুরু করেছেন- "যে অভিলাষে এই নতুন যাত্রা, তা পূরণ হবে তো?"
অন্যদিকে, দিল্লি পৌঁছে রাতে অমিত শাহের বাড়ির বৈঠকেও দেখা গেল না রুদ্রনীল ঘোষকে। সেখানে মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়রাও উপস্থিত ছিলেন। শাহের বাড়িতে প্রবীর, বৈশালী সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকের দ্বারাই যে পদ্ম শিবিরে যোগদানের আরও একধাপ এগোলেন তাঁরা, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু এতসবের মাঝে দেখা গেল না রুদ্রনীল ঘোষকে। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই কেন্দ্রীয় সরকার দলের বিরোধী শিবিরে জোর জল্পনা যে, "তাহলে কি যোগদানের আগেই অভিনেতার সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ বিজেপির!"
উল্লেখ্য, অমিত শাহের কাছে 'স্পেশ্যাল' রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ফোনেই প্রাক্তন তৃণমূল নেতাকে সেকথা জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খোদ। তাই বঙ্গসফর বাতিল হওয়ার পর তড়িঘড়ি তাঁকে দিল্লিতে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ বিমানের ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন শাহ। সেই চার্টার্ড প্ল্যানেই রাজধানীর উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন বৈশালী ডালমিয়া, প্রবীর, রথীনরা। কিন্তু সেখানে জায়গা হল না টলিউড অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের! অতঃপর পরে অন্য বিমানে করেই দিল্লিতে উড়ে যেতে হল তাঁকে। সূত্রের খবর, এদিন দিল্লি যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন রুদ্রনীল নিজেই। কিন্তু পূর্বনির্ধারিত চার্টার্ড প্লেনে তাঁর জায়গা না হওয়ায় অন্য বিমানের টিকিট কেটে দেওয়া হয় অভিনেতাকে।
কথা ছিল, ৩১ জানুয়ারি হাওড়ায় শাহী সফরেই পদ্ম পতাকা হাতে নেওয়ার কথা ছিল রুদ্রনীল ঘোষের। নিজের জায়গা। কিন্তু পরিকল্পনা পণ্ড হয় দিল্লি বিস্ফোরণের কারণে। এবার অন্য বিমানে অভিনেতাকে নিয়ে আসা এবং শাহের বাড়ির বৈঠকে অভিনেতাকে 'অনুপস্থিত' দেখে জোর শোরগোল শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ইচ্ছেপূরণ স্থগিত না পদ্ম শিবিরে যোগদানে আশাহত অভিনেতা? রবিবার ডুমুরজেলায় শাহের ভার্চুয়াল সভাতেই তা পরিষ্কার হবে বলে অনুমান।