“ধর্ষণের হুমকি আমিও পাই। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা, সেখানকার মেয়েরা ধর্ষণের হুমকিকে ভয় পায় না। সাহস থাকলে আমাদের ধর্ষণ করুক! ঝাঁটা-বঁটি নিয়ে তেড়ে যাব…”, সোমবার মেট্রো চ্যানেলের প্রতিবাদী সভায় হুংকার তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের। বাংলার মাটিতে যাতে কোনও মেয়ের অসম্মান না হয়, তার অঙ্গীকার নিলেন তিনি।
দিন কয়েক ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় টলিউড তারকাদের খুন ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিশেষত ‘গো-মাংস রান্না’ এবং ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানের বিরোধিতা করে দেবলীনা দত্ত (Debolina Dutta) এবং অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ (Sayani Ghosh) বর্তমানে গেরুয়া শিবিরের রোষানলে। ইতিমধ্যেই গেরুয়া শিবিরের তরফে এই দুই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে FIR দায়ের করা হয়েছে। তার প্রতিবাদেই ফুঁসে উঠেছেন বাংলার বিদ্বজনরা। কেন বাকস্বাধীনতাকে গলা টিপে কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে? একমঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন তুললেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির বিশিষ্টজনেরা। সেই মঞ্চেই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে দেখা গেল রাজ্যের শাসক দলের সাংসদ নুসরত জাহানকে। না রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে নয়, নুসরত আজকের এই প্রতিবাদী মঞ্চে হাজির ছিলেন সহকর্মীদের উদ্দেশে উড়ে আসা খুন-ধর্ষণের হুমকির প্রতিবাদ করতে। নারীদের প্রতি হওয়া অন্যায়-অবিচার নিয়ে সরব হলেন নুসরত জাহান।
নাম না করেই বিজেপিকে বিঁধলেন বাক্যবাণে। সাংসদ-অভিনেত্রীর কথায়, “ধর্ষণের হুমকি আমার কাছেও আসে। কিন্তু আমি বা এই মঞ্চে উপস্থিত কোনও মহিলা এই ধরনের হুমকিকে ভয় পায় না। সাহস থাকলে আমাদের ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করে দেখাক। বাংলার বাড়িতে-বাড়িতে ঝাঁটা আছে, বঁটি আছে। কেউ আমাদের ভয় দেখালে তাঁদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করা হবে। আজ সায়নী-দেবলীনার সঙ্গে যা হয়েছে তা যাতে আর কোনও মেয়েদের সঙ্গে না হয়, সেই জন্যই এই মঞ্চে উপস্থিত হয়েছি আমি।”
তৃণমূল সাংসদ নুসরতের গলায় তীব্র ধিক্কার, “তোমরা বাংলার সংস্কৃতি বোঝো? বোঝো না বলেই মেয়েদের অপমান করো। কিন্তু জেনে রাখো, বাংলার মেয়েদের সম্মান তাঁদের হাতেই। তাই তোমরা কেড়ে নিতে পারবে না।”
এর পাশাপাশি ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি নিয়েও গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ করতে ভোলেননি তিনি। সেই প্রতিবাদী মঞ্চেই জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলে একসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দেন তিনি। বলেন, “যে দল মানুষের পাশে নেই, তার জায়গা হবে না বাংলার মাটিতে।”