/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/13/vijay-2025-08-13-20-40-35.jpg)
কে এই অভিনেত্রী?
কিছু অভিনেতা সিনে-জগতে প্রবেশ করে শুধু অভিনয়ের মাধ্যমে নয়, বরং নানা বাধঁ ভেঙেও সুপারস্টার হওয়ার সংজ্ঞা নতুনভাবে লিখে রেখে যান। তেমনই একজন আইকন এই অভিনেত্রী। যিনি তরুণ ভরতনাট্যম নৃত্যশিল্পী হিসেবে, তামিল সিনেমায় কেরিয়ার শুরু করে, পরবর্তীতে হিন্দি চলচ্চিত্রে নিজের জায়গা পোক্ত করেছিলেন।
চেন্নাইয়ের এক গোঁড়া তামিল ব্রাহ্মণ আয়েঙ্গার পরিবারে জন্ম নিয়েও বৈজয়ন্তীমালা শক্তিশালী ও বিশ্বাসযোগ্য অভিনয়ের মাধ্যমে হিন্দি সিনেমায় নিজের পরিচিতি তৈরি করেন। ৫০ ও ৬০-এর দশকে তিনি মীনা কুমারী, মধুবালা, নার্গিস, সুচিত্রা সেন, ওয়াহিদা রেহমানসহ সমসাময়িক শীর্ষ অভিনেত্রীদের সমকক্ষ হয়ে উঠেছিলেন।
পথচলা ও চ্যালেঞ্জ
মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯৪৯ সালের তামিল ছবি 'ভাজকাই' দিয়ে অভিনয়ে অভিষেক হয় তাঁর। তারকা হয়ে ওঠার পথ সহজ ছিল না। এক সময় হিন্দি ছবি নাগিন-এর পরিচালক নন্দলাল যশবন্তলাল তাঁকে "ইডলি" বলে অপমান করেছিলেন, কারণ তাঁর মতে, বৈজয়ন্তীমালা- 'খুব মোটা' এবং 'চর্বিযুক্ত' ছিলেন। স্মৃতিকথা Bonding-এ অভিনেত্রী সেই অপমানের কথা জানিয়ে বলেছিলেন, কীভাবে পরিচালক পুরো ইউনিটের সামনে তাঁকে কটাক্ষ করতেন।
যদিও গঙ্গা যমুনা, আম্রপালি ও সঙ্গম-এ তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল, তবুও তাঁকে প্রায়শই "নাচের পুতুল" হিসেবে দেখানো হতো। কিন্তু ১৯৫৫ সালের ছবি দেবদাস-এ দিলীপ কুমারের বিপরীতে তাঁর অভিনয় সেই ধারণা বদলে দেয়। মুক্তির পর সমালোচকদের প্রশংসা তাঁকে মূলধারায় দৃঢ় জায়গা এনে দেয়।
এরপর তিনি দিলীপ কুমারের সঙ্গে নয়া দৌড় (১৯৫৭), মধুমতী (১৯৫৮), পয়গাম (১৯৫৯), গুঙ্গা জুমনা (১৯৬১), লিডার (১৯৬৪) ও সুনঘুর্শ (১৯৬৮) সহ একাধিক হিট ছবিতে অভিনয় করেন। তাঁদের অন-স্ক্রিন রসায়ন ঘিরে অফ-স্ক্রিন রোম্যান্সের গুজব ছড়ালেও দু’জনেই তা অস্বীকার করেছিলেন। তবে রাম অউর শ্যাম-এ বৈজয়ন্তীমালার বদলে ওয়াহিদা রেহমানকে নেওয়ায় তাঁদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
রাজ কাপুর অধ্যায়
বৈজয়ন্তীমালার কেরিয়ার তাঁর ঠাকুমা যদুগিরি দেবীর হাতে পরিচালিত হলেও, রাজ কাপুরের সঙ্গে তাঁর নাম জড়ানো এক ঐতিহাসিক অধ্যায়। বইয়ে তিনি এই সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে একে রাজ কাপুরের "পাবলিসিটি স্টান্ট" আখ্যা দেন। কিন্তু ঋষি কাপুর তাঁর আত্মজীবনী -খুল্লামখুল্লা'-তে বিপরীত দাবি করেন, এমনকি সেই সময় তাঁর মা কৃষ্ণা কাপুরও রাগের চোটে বাড়ি ছেড়ে গিয়েছিলেন। রাজ কাপুর ও বৈজয়ন্তীমালা কেবল নজরানা (১৯৬১) এবং সঙ্গম (১৯৬৪)-এ একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন।
শীর্ষে থেকেই বিদায়
১৯৬৮ সালে কেরিয়ারের সেরা সময়ে কাপুর পরিবারের চিকিৎসক ড. চমনলাল বালিকে বিয়ে করে বৈজয়ন্তীমালা সকলকে অবাক করেন। এরপর তিনি সিনেমা ছেড়ে ব্যক্তিগত জীবনে মনোনিবেশ করেন, যদিও নৃত্যের প্রতি ভালোবাসা বাঁচিয়ে রাখতে লাইভ শোতে পারফর্ম করে গেছেন। নিজের বইয়ে তিনি লিখেছেন, "আমি জীবনের সবচেয়ে বুদ্ধিমানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সঠিক সময়ে সিনেমা ছেড়েছি। কোনো আফসোস নেই, কারণ আমি সেরাদের সঙ্গে কাজ করেছি।"