পল্লবী দে’র রহসমৃত্যু নিয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে। ক্রমশই ঘনীভূত হচ্ছে টেলিপাড়ার অভিনেত্রীর মৃত্যুরহস্য। পল্লবীর পরিবারের তরফে দায়ের করা এফআইআর-এর ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন সাগ্নিক চক্রবর্তী। এদিন গড়ফা থানা থেকে আলিপুর আদালতে তোলা হয় তাঁকে। সেখানেই কোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সাগ্নিক চক্রবর্তীকে আগামী ২৬ এপ্রিল অবধি পুলিশ হেফাজতে রাখার। সাগ্নিকের আইনজীবী জামিনে আবেদন করেছেন। তবে পল্লবীর আইনজীবীর কথায়, অভিনেত্রীর মৃত্যুর দিন ঘটনাস্থলে আর কেউ উপস্থিত ছিলেন কিনা, তা খতিয়ে না দেখা পর্যন্ত তাঁকে জামিন দেওয়া উচিত নয়।
তবে এসবের মাঝে সাগ্নিক চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এল আরও এক বিস্ফোরক তথ্য। ৮ বছর আগে হাওড়া জগাছা এলাকারই আরও এক তরুণীর আত্মহত্যার জন্য পল্লবীর সহবাস সঙ্গীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন আরেক মেয়ে-হারা বাবা।
জগাছার অজয় মণ্ডলের অভিযোগ, সাগ্নিকের জন্যই ২০১৪ সালের মার্চ মাসে তাঁর মেয়ে সৌমী মণ্ডল আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন। কী ঘটেছিল সেইসময়ে? জানালেন সৌমীর বাবা। সৌমী তখন জগাছা কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীতে পড়েন। সাগ্নিক ওই স্কুলেরই পড়ুয়া ছিলেন। তবে এক ক্লাস সিনিয়র সৌমীর থেকে। নবম শ্রেণীতে পড়তেন। সেই সময় থেকেই তাঁদের মধ্যে ভাব-ভালবাসা গড়ে উঠেছিল। এরপর সৌমী-সাগ্নিক দুজনেই ভর্তি হন ফোর্ট উইলিয়ম কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে। একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরই ১৮ মার্চ বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় সৌমী মণ্ডলের ঝুলন্ত দেহ।
<আরও পড়ুন: মৃত্যুর দিন সকালে কী নিয়ে অশান্তি হয়েছিল পল্লবী-সাগ্নিকের? চাঞ্চল্যকর তথ্য>
মৃতার বাবার অভিযোগ, সাগ্নিক চক্রবর্তীর জন্যই ওঁর মেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিল। সৌমীর সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীন তাঁদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল সাগ্নিকের। তবে সৌমীর বাবার মোটেই পছন্দ ছিল না তাঁকে। তাই মেয়েকে বারবার বারণ করে দিয়েছিলেন যে সাগ্নিকের সঙ্গে যেন কোনওরকম মেলামেশা না করেন। অজয় আরও জানান যে, সৌমীর সঙ্গে নাকি দুর্ব্যবহার করতেন সাগ্নিক। সেটা রাস্তাঘাটেও। এমনকী অন্য ছেলে দিয়ে বিরক্ত করাতেন। পুলিশের কাছে সেই বিষয়টি জানিয়েও লাভ হয়নি তখন। তবে পল্লবীর মা-বাবা সাগ্নিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করায় পুরনো মেয়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি জানান, "এতদিনে মেয়ে বিচার পেয়েছে।"
পাশাপাশি, অজয় মণ্ডল এও জানান যে, "আত্মহত্যার আগে অবশ্য সাগ্নিক চক্রবর্তীর জন্যই সৌমী অন্য এক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হন সৌমী।" মৃতার মা, অভিযোগ পল্লবীর বান্ধবী ঐন্দ্রিলার বিরুদ্ধেও বিস্ফোরক। তিনি জানান, "ঐন্দ্রিলা মিথ্যে কথা বলে কী করে যে ও সাগ্নিককে ভাল করে চেনে না? সৌমীর মৃত্যুর পরদিনও ঐন্দ্রিলা-সাগ্নিক একসঙ্গে আমাদের বাড়িতে এসেছিল। আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য সাগ্নিক চক্রবর্তী যে দায়ী একথা বলাই যায়। ও আমাদের বাড়িতে আগে দু বেলা আসত। টিউশনও ঠিক করে দিয়েছিল সৌমীর জন্য। আজ ৮ বছর হয়ে গেল, আমাদের মেয়েটা আর নেই।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন