২০২০ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে ঘোষিত হল এবছরের নাগরিক সম্মানের তালিকা। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীকে পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত করার এই ঘোষণা হয়েছে ২৫ জানুয়ারি। বাংলার মানুষ এই সংবাদে নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গর্বিত। ২০১১ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়। দ্বিতীয়বার দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত হতে চলেছেন বাংলার শাস্ত্রীয় সঙ্গীত মায়েস্ত্রো।
পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী এর আগে জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হন ১৯৮৯ সালে আর এদেশের সঙ্গীত জগতের সর্বোচ্চ সম্মান, 'সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি' পুরস্কারে ভূষিত হন ২০০০ সালে। এছাড়া ২০১২ সালে তাঁকে 'বঙ্গবিভূষণ' উপাধিতে সম্মান জানায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
আরও পড়ুন: কঙ্গনা-একতা-করণ ছাড়াও পদ্মশ্রী পেলেন দুই গায়ক
পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী পাতিয়ালা ঘরানার সমসময়ের সবচেয়ে বড় সঙ্গীতজ্ঞদের একজন। তিনি হলেন প্রথম ভারতীয় সঙ্গীতজ্ঞ যাঁকে পাকিস্তান ও চিন সরকারের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সঙ্গীতশিক্ষার সূত্রপাত তাঁর বাবার কাছে। এর পরে তিনি সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ করেন কিংবদন্তি সঙ্গীতগুরু জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, পান্নালাল সামন্ত এবং কানাইদাস বাইগরির কাছে। শুধুমাত্র হিন্দুস্থানি সঙ্গীত নয়, কর্ণাটকী সঙ্গীতেও তিনি তালিম গ্রহণ করেন এম বালামুরলিকৃষ্ণনের কাছে।
রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে সুবর্ণপদকপ্রাপ্ত ছাত্র তিনি। তাই সঙ্গীতের সমস্ত ধারায় তাঁর অপরিসীম দক্ষতা ও জ্ঞানের কথা সর্বজনবিদিত। মার্কিন দেশের নিউ অরলিন্সে, জ্যাজ মিউজিকের জন্মস্থলে তাঁর অবিস্মরণীয় পারফরম্যান্সের পরে তাঁকে ওই শহরের সাম্মানিক নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন: সঙ্গীত নিয়ে কোনও প্রতিযোগিতা হওয়া উচিত না: মধুবন্তী
কিন্তু বাংলার মানুষের কাছে এবং তাঁর অগণিত ছাত্রছাত্রীদের কাছে তিনি অত্যন্ত প্রিয় গুরুজি। তাঁর সঙ্গীতশিক্ষার প্রতিষ্ঠান 'শ্রুতিনন্দন'-এর অনেক আগে, আশির দশকে তিনি এরাজ্যের শিশু-কিশোরদের মধ্যে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রতি ভালবাসা তৈরি করেছিলেন দূরদর্শনে তাঁর অসাধারণ একটি সঙ্গীত শিক্ষার আসরের মাধ্যমে।
বাংলায় এই মুহূর্তে দুটি প্রজন্মের সঙ্গীতশিল্পীদের গুরু তিনি। তাই তাঁর এই সম্মানে আরও একবার গর্বিত বাংলার মানুষ।