/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/01/featured-image-copy-2025-09-01-18-07-29.jpg)
কেমন ছিল পরাণের পুজোর দিনগুলো?
মা দুর্গা মর্তে আসতে হাতে গুনে আর কদিন। চারিপাশে পুজোর আমেজ। এবং এই পুজো নিয়ে কিন্তু বহু মানুষের নানা আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। ছোটবেলার পুজোর সঙ্গে বড়বেলার পুজোর এক অদ্ভুত মেলবন্ধন থাকে। কিন্তু, কারওর কাছে পুজো বেশ আক্ষেপের। পুজো হতাশার। পুজো মনে করিয়ে দেয় জীবনের চরম কিছু অধ্যায়ের কথা। পুজো যেন বার বার শাসন করে। পুজোয় মনের অতল গভীরে লুকিয়ে থাকা এমন কিছু ঘটনা বার বার ঘুরে ফিরে আসে, যা অনেকেই জানেন না।
বর্ষীয়ান অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক যেন তাই। এমনকি, খেয়াল করলে দেখা যাবে তিনি কিন্তু দেশভাগের আগেও দেখেছেন পুজো। কলকাতায় এসেছিলেন ১৯৪৪ সালে। এবং, সেসময়ের পুজো তাঁর মনে নেই। কারণ, একেই বয়সে ছোট তাঁর সঙ্গে দেশ স্বাধীনের পিপাসা তখন ভারত মায়ের সন্তানদের জাগিয়ে রেখেছে। অভিনেতা এই প্রসঙ্গে বললেন... "সেই পুজো আমি মনে রাখতে চাই না। চারিদিকে দাঙ্গা হাঙ্গামা। কিন্তু পুজো আমার কাছে সবসময় অন্য রকম। বর্তমানে পুজোয় অন্তরঙ্গতা কমে গিয়েছে। বেড়ে গিয়েছে দেখনদারি। থিমের পুজো হয় সর্বত্র।"
পুজো মনে করিয়ে দেয় 'সেই অধ্যায়'
আমার দাদামশাইয়ের বাড়িতে পুজো হত। আমার বাবার মামার বাড়ির দিকে। সেখানেই যেতাম। একটু বড় হয়ে পুজোটা বুঝতে পারতাম। তবে, আমার কৈশোরে, দমদমে যে পাড়ায় থাকতাম, সেই পুজোটা আমায় শাসন করে। কিছু বিষয় বোঝায়। আসলে, দুঃখ-দুর্দশা, অভাব-অনটন এগুলো কাউকে বলা যায় না। তখন আর্থিক সচ্ছলতা ছিল না। আমার আশেপাশে অনেক মানুষ তাঁরা ভাল পোশাক পড়ছে, আমি ছেঁড়া ফাটা জামা- এই যে একটা মন তৈরি হয়ে গেল না, সেটা একদম স্ক্র্যাচ কেটে চলে গেল। ক্ষতগুলো শুকিয়ে গিয়েছে, কিন্তু ব্যাথা রয়ে গিয়েছে। কৈশোর থেকে এই ঘটনা আমি ভুলি নি।
পুজোয় নতুন জামা-প্যান্ট
আমার আত্মীয়স্বজনরা সব জামা কিনে দিত। কিন্তু ঐ চারটে দিন পড়া হত না। কেমন যেন হত মনের ভিতর। পরের দিকে যখন রোজগার করতে শুরু করলাম। অনেক সময় ইন্ডাস্ট্রির সুত্রে প্রচুর উপহার পেয়েছি, কিন্তু সেই অভিমান আমি ভুলিনি। এটা আমি মেনে চলি। আজও আমি পুজোর কটা দিন, মহালয়া থেকে বিসর্জনের ৩-৪ দিন, আমি নতুন জামাকাপড় পরি না। মনে অদ্ভুত একটা কষ্ট হয়।
পুজোর প্রেম
(হাসি )... আমাদের সময় পুজোর প্রেম হত। কিন্তু, ঐ বাইরে বেরিয়ে ঘুরে বেড়ানো কিংবা ফুচকা খাওয়া এসব হত না। যা হত, সেটা মণ্ডপের সামনেই হত।
এখন কেমন কাটে?
আমি কোনদিন পুজো দেখতে যাই না। বন্ধুদের সঙ্গে একবার হোল নাইট পুজো দেখেছিলাম। আর কোনদিন বেরই না। বারান্দায় বসে থাকি। ছোট ছোট সব প্রজাপতি দেখি... ( হাসি )! মানে ছোট ছেলেমেয়েগুলো। নতুন জামাকাপড় পড়ে ঘোরে। বৃষ্টি দেখলেই ওদের মুখ চোখ কালো হয়ে যায়।