ছবি: পরিণীতা
পরিচালনা: রাজ চক্রবর্তী
অভিনয়: ঋত্বিক, শুভশ্রী,গৌরব, আদৃত
রেটিং: ৩/৫
প্রেম আর যুক্তি- শব্দ দু'টো বেশিরভাগ সময়েই পাশাপাশি স্থান পায়না। রাজ চক্রবর্তীর ছবির ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছে। বিশেষ করে যখন স্কুলগার্লের প্রথম প্রেমের অনুভূতি তখন যুক্তি তো নৈব নৈব চ। বরং প্রেম বিফলে গেলে রাগ, অভিমানের জোর অনেক বেশি। আবেগ নিয়ে এত কথা হচ্ছে কারণটা 'পরিণীতা'। প্রেম নামক জোড়ালো অনুভূতি নির্ভর এই ছবি।
উত্তর কলকাতার পাড়ায় বড় হওয়া মেহুল বোস (শুভশ্রী) এবং তার বাবাই দা। আপাত এই প্রেমের চিত্রনাট্যের বাবাইদার প্রতি অনুভূতি থেকে কোনওদিন বেরোতে পারেনি মেহুল। বলেও উঠতে পারেনি, কেবল অভিমান দেখিয়ে গিয়েছে। বাবাইদার মেহুলের প্রতি স্নেহ, বয়ঃসন্ধির মেয়েটার কাছে অনুরাগ। কিন্তু ডায়েরির পাতায় বাবাইদার লেখার সঙ্গে তাঁর কল্পনা মেলেনি বলে সেই যে রাগ আঁকড়ে তিনটে মাস পার করল মেয়েটা, একবারের জন্যও উত্তর কলকাতার বাবাইদা, তাঁর মা ও বাড়িটার বাইরের ছেলেটার জীবন সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়নি। অবশ্য মেহুলের বয়সে সেই পরিণত মানসিকতা আসা বাস্তবও নয়। এই মান-অভিমানের জটের মধ্যেই আত্মহত্যা করে বসে বাবাইদা। কিন্তু কেন?
আরও পড়ুন, রাজ নিজের স্ত্রীকে নয়, একজন অভিনেত্রীকে কাস্ট করেছে: শুভশ্রী
একটু অন্যরকম ট্রিটমেন্টে ছবিটা তৈরি করতে চেয়েছেন পরিচালক, সেখানে তিনি সফলও। তবে গল্পের ফাঁক চিত্রনাট্যের পেলব বাঁধন আঁটোসাটো করতে অক্ষম থাকল। রহস্যের যে জাল ছবির প্রথমার্ধে পরিচালক তৈরি করেছিলেন দ্বিতীয়ার্ধে সেটাই কোথায় মজবুত করতে পারলেন না। তিন মাস সময়ে ঋত্বিকের জীবনে যে ঝড় উঠেছিল তা ঠাওর করতে পারেনি পাশের বাড়ির মানুষও, বিশেষ করে যখন পুলিশ আসে বাড়িতে। এটা অবিশ্বাস্য। চারবছর সময়ে কোন মন্ত্রবলে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা একটা মেয়ে এত ভাল চাকরি করে সমস্ত দায়িত্ব পালন করতে পারে সেটাও বোধগম্য হয়না।
বাস্তবিক যে লুপহোলগুলো তৈরি হয়েছে ছবিতে তার জন্য পরিচালকের আর একটু রিসার্চের প্রয়োজন ছিল বোধহয়। বিশেষ করে শ্লীলতাহানির মতো গুরুতর অভিযোগ যেখানে থাকে। তবে পরিণীতার প্রাপ্তি অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি প্রমাণ করলেন শুধু নায়িকার চোখে তাঁকে না দেখলেও হবে। ঋত্বিক ছবিতে স্বমেজাজে আসীন। ছোট ছোট চরিত্রে ভাল গৌরব চক্রবর্তী এবং আদৃত।
আরও পড়ুন, ছিছোরে রিভিউ: নস্ট্যালজিয়া ব্যতীত আর কোন প্রাপ্তি নেই
ছবির গান মানানসই, ভাল সম্পাদনা। মেহুলের না বলতে পারা কষ্টের বহিঃপ্রকাশে জলের দৃশ্যায়নও দৃষ্টি কাড়বে। সবশেষে বলা যায়, প্রেমের গল্পের অন্য প্রতিচ্ছবি পরিণীতা।