১৭-১৮ বছর বয়সে মডেলিং থেকেই অভিনয়ের প্রতি আকর্ষণ। টলিউডে ছোটখাট বেশ কয়েকটা কাজের পর নায়িকা হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তবে যে প্রযোজকের জন্য টলিউড নায়িকা হন, পরবর্তীতে তাঁর সঙ্গেই চরম মনোমালিন্য! এমনকী সেই প্রযোজকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে সম্পর্কেও ইতি টানেন। কে সেই টলিউড প্রযোজক, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আরম্ভ হলেই যাঁকে কিনা ছেটে ফেলেন অর্পিতা নিজের জীবন থেকে?
প্রসঙ্গত, বাংলার স্কুল সার্ভিস কমিশনে দুর্নীতির দায়ে জেলবন্দি অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Model Actress Arpita Mukherjee)। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হওয়ার-ই কি মূল্য চোকাতে হচ্ছে এখন অভিনেত্রীকে? এই প্রশ্ন সর্বত্র। তবে গোড়ার দিনগুলো তো এরকম ছিল না নায়িকার। সেই ডানলপ থেকে ট্যাক্সি চেপে স্টুডিওপাড়ায় আসতেন। ছিল ভাল কাজের খিদেও। অভিনেত্রী হিসেবে খুব একটা আহামরী না হলেও সেরকম খামতি ছিল না অর্পিতার অ্যাক্টিং স্কিলে। উচ্চাকাঙ্ক্ষী সেই নায়িকার আজ এমন পরিণতি দেখে হতবাক সেই টলিউড প্রযোজক।
উল্লেখ্য, জিৎ-স্বস্তিকার 'পার্টনার', প্রসেনজিৎ-এর 'মামা ভাগ্নে'র মতো একাধিক সিনেমায় কখনও নায়কের বোনের চরিত্রে, আবার কখনও বা নায়িকার বান্ধবীর ভূমিকায় অভিনয় করেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছিল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। কিন্তু সুন্দরী সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে তখন নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। ঠিক সেইসময়েই অর্পিতার সঙ্গে আলাপ হয় এক টলিউড প্রযোজকের। তিনি গৌতম সাহা। যাঁর সুবাদেই অর্পিতা মুখোপাধ্যায় টলিউডে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
২০১২ সালে 'হৃদয়ে লেখ নাম' সিনেমায় নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। কারণ সেই ছবির জন্য গৌতমবাবু তখন নতুন মুখের সন্ধান করছিলেন। কিন্তু ওই একটি ছবিতেই। তারপর ইন্ডাস্ট্রি থেকে সরে আসতে থাকেন অর্পিতা? কিন্তু কেন? প্রযোজকের আক্ষেপ, অর্পিতার মধ্যে নায়িকাসুলভ একটা ভাব ছিল। লম্বা, ফর্সা, অভিনয়ও খুব একটা খারাপ নয়। সেরকম দাবিদাওয়াও ছিল না। পয়লা সিনেমায় নায়িকা হিসেবে হোটেল, খাওয়া-দাওয়া সব খরচ মিলিয়ে মাত্র ৫ লক্ষ টাকাতেই সন্তুষ্ট হয়েছিলেন। আর সেই অভিনেত্রীকেই কিনা আজ জেলে দিন কাটাতে হচ্ছে!
কেন প্রযোজক গৌতম সাহার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করলেন পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা? প্রযোজকের কথায়, 'হৃদয়ে লেখ নাম' সিনেমা মুক্তির পর থেকেই নায়িকার পরিচিতি বাড়তে থাকে। তখন থেকেই সমাজের নানা স্তরের লোকজনদের সঙ্গে ওঠাবসা। প্রতিনিয়ত সোশ্যালাইজিং শুরু করেন। এমনকী, একদিন গৌতম সাহাকে ফোন করে ক্ষোভও উগরে দেন অর্পিতা। তাঁর দাবি ছিল, ওই সিনেমাতে নাকি নায়িকা হিসেবে তাঁকে সেভাবে গুরুত্ব-ই দেওয়া হয়নি। পরিবর্তে মণিকা বেদির ওপর বেশি ফোকাস করা হয়েছিল। ইডি সূত্রের খবর অনুযায়ী সময়কাল মিলিয়ে দেখলে, ঠিক তখন থেকেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে অভিনেত্রী অর্পিতার।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন