Actress Tragic Death: শরীরে একাধিক ছুরিকাঘাত, অভিনেত্রী মেয়ে ও মাকে খুন করে গৃহকর্মীরাই! ১০দিন মর্গে বেওয়ারিশ লাশ...

তিনি মাত্র পাঁচ বা ছয় বছরের জন্য সিনে জগতে সক্রিয় ছিলেন। রানী পদ্মিনী অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। বিশেষত গ্ল্যামারাস ভূমিকায় তাঁকে খুব একটা দেখা যেত না। যাইহোক, অতীতের দিকে তাকালে

তিনি মাত্র পাঁচ বা ছয় বছরের জন্য সিনে জগতে সক্রিয় ছিলেন। রানী পদ্মিনী অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। বিশেষত গ্ল্যামারাস ভূমিকায় তাঁকে খুব একটা দেখা যেত না। যাইহোক, অতীতের দিকে তাকালে

author-image
IE Bangla Entertainment Desk
New Update
Ozzy Osbourne, the voice of metal rebellion and survival passed away at 76

এমন ভয়ঙ্কর রক্তাক্ত মৃত্যু...

 সিনেমার জগৎ বাইরে থেকে চকচকে এবং লোভনীয় মনে হলেও অনেকেই সেই গ্ল্যামারে ঝলসে গিয়েছেন। দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রী রানি পদ্মিনী, যিনি মূলত মালায়ালাম সিনেমায় তার কাজের জন্য পরিচিত, এমনই একজন তারকা ছিলেন যিনি ভোরের শিশিরের মতো অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলেন।

Advertisment

যদিও তিনি মাত্র পাঁচ বা ছয় বছরের জন্য সিনে জগতে সক্রিয় ছিলেন। রানী পদ্মিনী অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। বিশেষত গ্ল্যামারাস ভূমিকায় তাঁকে খুব একটা দেখা যেত না। যাইহোক, অতীতের দিকে তাকালে, নিশ্চিতভাবে বলা শক্ত যে তার জীবনে খ্যাতি কী কারণে এসেছিল, নেপথ্যে সফল ছবি ছিল নাকি তাঁর জীবনের রক্তাক্ত পরিণতি। 

Rani Padmini actress murder case

Advertisment

১৯৬২ সালে চেন্নাইয়ের আন্না নগরে চৌধুরী ও ইন্দিরা কুমারীর ঘরে জন্ম নেওয়া রানি পদ্মিনীর সিনেমার ভাগ্য তার জন্মের আগেই লেখা ছিল। চলচ্চিত্র তারকা হওয়ার এবং সেই স্বপ্নের অনুসরণে মাদ্রাজে (বর্তমানে চেন্নাই) স্থানান্তরিত হওয়ার নিজের আকাঙ্ক্ষা সত্ত্বেও, তাঁর মা ইন্দিরা কুমারী কখনই এটি অর্জন করতে সক্ষম হননি। ডাবিং শিল্পী হিসাবে কাজ করার সময়, তিনি চৌধুরীর সাথে ঘনিষ্ঠ হন এবং রানীর জন্ম দেন। রানির জন্ম ও বেড়ে ওঠা পুরোপুরি চেন্নাইয়ে। ইন্দিরা সিনেমায় প্রবেশের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। সুতরাং, তিনি চেয়েছিলেন তাঁর মেয়ে সেটা সম্পূর্ণ করুক যা তিনি পারেননি।

১৯৮১ থেকে ১৯৮৬ সালের মধ্যে রানী পদ্মিনী তামিল ও কন্নড় ভাষায় প্রায় ৬১টি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। জানা গেছে, ইন্দিরা যখন পরিচালকদের মধ্যে খবর ছড়িয়ে দিয়েছিলেন যে তার মেয়ে যে কোনও উপায়ে "নিজেকে সিনে দুনিয়ায় প্রকাশ করতে" ইচ্ছুক, তখন অনেক সুযোগ আসতে শুরু করে। তারা যথেষ্ট সম্পদ এবং খ্যাতি অর্জন করার পরে, মা-মেয়ে জুটি আন্না নগরের ১৮তম অ্যাভিনিউতে একটি বিলাসবহুল বাংলো ভাড়া নিয়ে সেখানে চলে যান। গৃহকর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তাঁরা। কিন্তু এটাই যে তাঁদের জীবন পাল্টে দেবে, এমনটা ভাবতেও পারেননি। 

Rani Padmini actress murder case

তারা শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রগুলিতে তিনজন গৃহকর্মী- চৌকিদার, রান্নার বাবুর্চি এবং ড্রাইভারের পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। প্রথম যোগ দেন জেবরাজ, যিনি তাদের ড্রাইভার ছিলেন। পরবর্তী দিনগুলিতে, দ্য হিন্দু অনুসারে, আরও দু'জন ব্যক্তি যোগ দিয়েছিলেন, লক্ষ্মী নরসিংহ এবং গণেশন, যারা যথাক্রমে চৌকিদার এবং রাঁধুনির দায়িত্বে ছিলেন।

১৯৮৬ সালের ১৯ অক্টোবর বিকেলে রানি পদ্মিনী ও ইন্দিরা কুমারীকে খুন করা হয়। দুঃখজনকভাবে, তাদের মৃতদেহগুলি অত্যন্ত পচে যাওয়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। খুন করা ছাড়াও মুম্বই থেকে রানির কেনা একটি নিশান গাড়িও গ্যারেজ থেকে খোয়া গিয়েছিল। গাড়ির চালক ও আরও এক গৃহকর্মীও উধাও ছিলেন। তিনি এবং তার মা যখন বাংলোটি কেনার জন্য চুক্তি চূড়ান্ত করতে যাচ্ছিলেন ঠিক তখনই ঘটনাটি ঘটেছিল। দুঃখজনকভাবে, ইন্দিরার ভাই না আসা পর্যন্ত তাদের দেহ ১০ দিন বেওয়ারিশ অবস্থায় জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ছিল।

তদন্তে নেমে পুলিশ এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিল যে, লক্ষ্মী নরসিমহান ও গণেশনের সঙ্গে জেবরাজ আর্থিক লাভের জন্য এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। অভিনেতা এবং তার মা কোনও যথাযথ ব্যাকগ্রাউন্ড চেক না করেই তাদের নিয়োগ করেছিলেন এবং জেবরাজ অনেক গাড়ি চুরির মামলার সাথে যুক্ত ছিলেন। তা ছাড়া, রানির সঙ্গে দুর্ব্যবহারের জন্য ইন্দিরা জেবরাজকে চড় মেরেছিলেন এবং তাঁকে আর কাজে আসতে নিষেধ করেছিলেন, যা শত্রুতা তৈরি করেছিল এবং তাকে অন্য দু'জনের সাথে ষড়যন্ত্র করতে বাধ্য করেছিল বলেই অভিযোগ।

Rani Padmini actress murder case

খুনের দিন রানি ও ইন্দিরা বাংলো কেনাবেচার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলেছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে তিন অভিযুক্ত তাদের খুন করে টাকা ও গয়না ভাগাভাগি করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানা গিয়েছিল। মনোরমা অনলাইনের খবরে বলা হয়, ইন্দিরা ও রানির মদ্যপান করার অভ্যাস ছিল এবং সেই দুর্ভাগ্যজনক রাতেও তারা ঘুমাতে যাওয়ার আগে পান করেছিলেন। পরদিন সকালে রাণীর ঘুম ভাঙে এবং তাঁর খিদে পাওয়াতে সে রান্নাঘরে যায়। সুযোগ বুঝে লুকিয়ে থাকা জেবরাজ ইন্দিরাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। মায়ের চিৎকারে রানী ছুটে এলেও সে দৃশ্য দেখে আঁতকে ওঠে। তিনি পালানোর চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু আর পারেননি। রানির শরীরে পেট, ঘাড় ও বুকে ১২টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। তার মায়ের ছিল ১৪টি।

অভিযুক্তরা প্রথমে পালিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত তাদের গ্রেফতার করা হয়। ১৯৮৯ সালের মার্চ মাসে জেলা দায়রা আদালত রানি পদ্মিনী ও তাঁর মাকে হত্যার দায়ে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়। পরে মাদ্রাজ হাইকোর্ট লক্ষ্মী নরসিমহান ও গণেশনকে বেকসুর খালাস দেয় এবং জেবরাজের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট শেষ পর্যন্ত হত্যার দায়ে লক্ষ্মী নরসিমহানের সাজা পুনর্বহাল করে,  তার সাজা যাবজ্জীবন করা হয়। হাইকোর্ট কর্তৃক বেকসুর খালাস পাওয়ার পরে গণেশন নিখোঁজ হন। লক্ষ্মী মুক্তি পেয়েছিলেন, কারণ ২০০৮ সালের মধ্যে তিনি সাত বছর কারাগারে কাটিয়েছিলেন। জেবরাজ কারাগারে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।

Entertainment News bollywood actress Entertainment News Today