ছেলে এখন ১১ মাসের। তাঁর জন্মদিন উদযাপন হয় প্রতি মাসেই। পরী মণির সংসারে এখন শুধুই, ছেলে রাজ্য। তাঁকে নিয়েই সব জানা অজানা। আর সেই হৃদয়ের টুকরো যখন অসুস্থ হয়, একলা মায়ের ওপর দিয়ে যে কি যায় সে বোধহয় মা ছাড়া কারওর জানা সম্ভব না।
Advertisment
ছেলের শরীর খুব খারাপ। প্রয়োজনে ব্লাড টেস্ট করা হয়েছে তাঁর। ওইটুকু হাতে চ্যানেল করে ব্লাড নেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিক, মায়ের যে কষ্ট হবে। পরী যেন ভাবতেও পারছেন না এটুকু রাজ্যকে এভাবে সবকিছু সামলাতে হবে। কিন্তু, সবকিছুর মাঝেও বারবার তাঁর মনে হচ্ছে আজ তিনি একা। পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। কারওর সামনে যে কেঁদে ভাসাবেন সেই সুযোগ নেই।
স্বামী শরিফুল একসময় ছিলেন। তখন, রাজ্যের মাস দেড়েক বয়স। প্রথম ভ্যাকসিনের সময় ছেলের কষ্ট হবে ভেবেই মা পরী কেঁদে কেটে একাকার। সামলেছিলেন রাজ। কিন্তু, আজ একা। ছেলেকে সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে তাঁকে একাই বড় করতে হবে। তাই তো তাঁর আদরের পদ্মর জন্য তিনি লিখলেন...
"আমার পদ্মফুল, মনে পড়ে তোমার প্রথম ভ্যাকসিন দেয়ার দিনে আমি ভয়ে,কষ্টে,কান্নায় বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলাম। তখন আমাকে সামলানোর কেউ ছিলো বলেই হয়তো কাঁদতেও সহজ লেগেছিলো আমার। আজ প্রথমবার তোমার ক্যানলা করা হলো তোমার প্রথম ব্লাড টেস্টের জন্যে ! আমি একা …তোমাকে বুকে ধরে সাহস জোগাই সামনের এমন আরো কঠিন দিনের জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করি। অনেক কঠিনেরে মোকাবেলা করবো বলে।"
ছেলে, ছোট থেকেই বাবা মাকে একসঙ্গে পেয়েছে খুব অল্প সময়ের জন্য। তারপর থেকেই শুধু মা। পরী তাঁর কাছে মা এবং বাবা দুইই। কিন্তু, ছেলের কষ্টে যেন প্রচণ্ড মন খারাপ অভিনেত্রীর। এতসবের জন্য তিনি প্রস্তুত ছিলেন না। ছেলের কাছে আম্বা হয়েই থাকতে চান। রাজ্য, আসলেই তাঁকে আম্বা বলেই ডাকে। অর্থাৎ, আম্মা এবং আব্বা একইসঙ্গে।