১৩ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। কুর্দিস্তান থেকে তেহেরানে আসার পথে ইরানি তরুণী মাহেশা আমিনিকে আটকেছিল সেই দেশের নীতিপুলিশেরা। ইরানের রাজধানীতে মাহেশাকে ঘিরে ধরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল থানায়। হিজাব না পরার অপরাধে সেখানে অকথ্য অত্যাচার করা হয় তরুণীর বিরুদ্ধে। যার জেরে দিন তিনেকের মাথায় হাসপাতালে মৃত্যু হয় মাহেশা আমিনির। শুধুমাত্র হিজাব ছাড়া ঘোরার জন্য কোনও মহিলার যে এমন নির্মম পরিণতি হতে পারে, সেই প্রেক্ষিতেই এবার পুরুষতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।
Advertisment
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ইরানের বাসিন্দারা প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন। রাস্তায় নেমে আসেন বহু মহিলা। কোথাও হিজাব পোড়ানো হয়, আবার কোথাও বা মহিলারা নিজেদের চুল কেটে প্রতিবাদে শামিল হন। সেইসমস্ত আন্দোলনকারী নারীদের পাশে দাঁড়িয়েই কণ্ঠ ছাড়লেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।
নিজের ইনস্টাগ্রামে এক দীর্ঘ পোস্ট করেছেন অভিনেত্রী। সেখানে মাহেশার হিজাব ছাড়া খোলা চুলে হাজার হাজার মহিলার আর্তনাদের ছবি ফুটে উঠেছে। প্রিয়াঙ্কার কথায়, "মাহেশা আমিনির জন্য গোটা ইরান তথা বিশ্বের মহিলারা প্রতিবাদী কণ্ঠ তুলেছে। প্রকাশ্যেই নিজেদের চুল কাটা কিংবা অন্যান্য উপায়ে প্রতিবাদ করছেন। যথাযথবাবে হিজাব না পরার জন্য নির্মমভাবে তরুণীর জীবন কেড়ে নিয়েছে ইরানি নীতিপুলিশেরা। যুগ যুগ ধরে জোর খাটিয়ে কণ্ঠ দমিয়ে রাখার পর এবার আগ্নেয়গিরির মতো ফেটে পড়বে। আর এই আওয়াজ থামানে উচিত নয়।"
এখানেই অবশ্য থামেননি প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপুঞ্জের শুভেচ্ছাদূত এও উল্লেখ করেন যে, "আপনাদের সাহসিকতা এবং অভীষ্ট লক্ষ্যে আমি হতবাক। স্বাতন্ত্র অধিকারের জন্য জীবনের ঝুঁকি নেওয়া কিংবা পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে চ্যালেঞ্জ ছোঁড়া সহজ কথা নয়। আমাদের সকলের এই প্রতিবাদে কণ্ঠ মেলানো উচিত। অন্যদেরও উৎসাহ দেওয়া উচিত। কারণ, আন্দোলনকারীদের সংখ্যার গুরুত্ব রয়েছে।"
বিশ্ববাসীকে এই আন্দোলনে শামিল হওয়ার আবেদন জানান প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। পোস্টের শেষে কুর্দিশ ভাষায় অভিনেত্রী বলেন, "জিন, জিয়াঁ, আজাদি.." যার অর্থ নারী, জীবন, স্বাধীনতা।