বেশ কয়েকদিন ধরেই শিরোনামে টলিউডের 'ইন্ডাস্ট্রি' অর্থাৎ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যান পদ থেকে নাকি অপসাধরণ করা হবে তাঁকে। কারণ, হিসাবে উঠে আসছে মুকুল রায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এবং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মিটিং-এ গড়হাজির থাকা। এর পরই দুইয়ে দুইয়ে চার করতে শুরু করেছেন অনেকেই।
কিন্তু প্রসেনজিতের ঘনিষ্ঠ মহলে কান পাতলে উঠে আসছে অন্য কথা। সূত্রের খবর, তিনি বিজেপি-তে যোগদানের বিষয়ে মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, এমন তথ্য নাকি সম্পূর্ণ ভুল। সম্প্রতি একটি ব্যক্তিগত কাজে দিল্লি গিয়েছিলেন প্রসেনজিৎ। সে সময় বিমানে উঠে তিনি দেখেন মুকুল রায় তাঁর সহযাত্রী। এর পরের ঘটনা প্রসঙ্গে নায়কের ঘনিষ্ঠ মহলের বয়ান, 'পরিচিত মানুষের সঙ্গে কথা না বলা অভদ্রতা, তাই সৌজন্য বিনিময় করেছিলেন প্রসেনজিৎ'। তাঁদের আরও দাবি, উড়ান চলাকালীন নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তাঁরা। তবে সেদিনের আলোচনায় কোনওভাবেই রাজনৈতিক প্রসঙ্গ ছিল না। জানানো হয়েছে, ওই ফ্লাইটে আরও কয়েকজন ছিলেন এবং দিল্লি পৌঁছনোর পরে নেতা ও অভিনেতা উভয়েই নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে পা বাড়িয়েছিলেন। এরপর থেকে মুকুল রায়ের সঙ্গে প্রসেনজিতের আর দেখাও হয়নি বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন, মুকুল রায়ের বড় স্বস্তি, গ্রেফতারি পরোয়ানা খারিজ কলকাতা হাইকোর্টে
প্রসেনজিৎ ঘনিষ্ঠদের এমন দাবির আগে পর্যন্ত শোনা যাচ্ছিল, নায়ক নাকি মুকুলের সঙ্গে বৈঠক করতেই দিল্লি যাত্রা করেছিলেন। এমন কথাও বলা হচ্ছে যে মুকুল রায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে প্রসেনজিৎকে। কিন্তু, যদি তেমন কিছু হত তবে তো মুখ্যমন্ত্রী অথবা কমিটির পক্ষ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক চিঠি আসত প্রসেনজিতের কাছে। জানা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও চিঠি পাননি নায়ক। বরং কমিটির তিনটি বৈঠকে অনুপস্থিতির কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে, প্রথম ও দ্বিতীয় বৈঠকের দিন 'গুমনামী' ছবির শুটিংয়ে চলায় (প্রথমে উত্তরবঙ্গে ও পরে লখনউ-তে) আসতে পারেননি চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ। আর তৃতীয় মিটিংয়ের চিঠি এসে পৌঁছয় দেরিতে। ওইদিনই একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল নায়কের। পরে ফিরে এসে চিঠিটি দেখতে পেয়েছিলেন তিনি।
এ বিষয়ে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, ''এমন কিছু আমি শুনিনি। এ বিষয়ে আমার কোনও ধারনা নেই।''
আরও পড়ুন- ‘যদি বেঁচে থাকি কাল সব বলব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আমার সবথেকে বেশি ক্ষতি করেছেন’
সরকারি চিঠি আসেনি, মন্ত্রীও বলছেন 'আমি কিছু শুনিন', তাহলে প্রসেনজিৎ সম্পর্কে এমন জল্পনা সামনে আসছে কী করে? অভিনেতার ঘনিষ্ঠ বৃত্ত মনে করছে, কিছু মানুষ কয়েকটি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে অকারণে রাজনৈতিক রং দিতে চাইছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি রোজভ্যালিকাণ্ডে ইডি তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রসেনজিৎকে। এরপরই সামনে আসে মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের কথা।