Remembering Buddhadeb Dasgupta: বৃহস্পতিবার সকালে ফের এক দুঃসংবাদে ঘুম ভাঙল ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের। চিরঘুমের দেশে চলে গেলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত (Buddhadeb Dasgupta)। আর সেই সঙ্গেই অবসান হল চলচ্চিত্র জগতে এক সোনালি অধ্যায়ের। যিনি কিনা 'দূরত্ব', 'নিম অন্নপূর্ণা', 'গৃহযুদ্ধ', 'ফেরা', 'তাহাদের কথা', 'চরাচর', 'উত্তরা'র মতো বহু কালজয়ী চলচ্চিত্র দলিল উপহার দিয়ে গিয়েছেন। সেই জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক আর নেই। মন খারাপ সিনেদর্শকদের। বাংলা ছবিকে যিনি কিনা অনায়াসেই আন্তর্জাতিকমহলে তুলে ধরেছিলেন নিজস্ব ফ্রেমের মধ্য দিয়ে। তাঁর প্রয়াণেই শোকস্তব্ধ বাংলা সিনেমহল। আবেগপ্রবণ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee) বললেন, "আরও একজন মাস্টার চলে গেলেন।" ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর (Rituparna Sengupta) আফশোস, প্রিয় পরিচালক আঙ্কল নিজে থেকে ডেকে প্রস্তাব দিলেও 'উত্তরা' সিনেমায় কাজ করতে পারেননি তিনি। আর সেই মন খারাপ সারা জীবন বয়ে বেড়াবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
'স্বপ্নের দিন' এবং 'আমি, ইয়াসিন আর আমার মধুবালা' এই দুটো ছবিতে পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর সঙ্গে কাজ করেছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। সেই জন্য নিজেকে সৌভাগ্যবান বলেও মনে করেন অভিনেতা। প্রসেনজিৎ জানালেন, "বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার সারা জীবনের সঙ্গী। একদম অন্য ভাবে ভাবতেন তিনি। ওঁর ছবি দেখেই বড় হয়ে ওঠা। কতবার খ্যাতনামা সব আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বুদ্ধদেববাবুর সঙ্গে সিনেমা দেখেছি। সেই সময়েই খেয়েল করেছি, বিদেশের মাটিতে বাংলা ছবির কথা উঠলেই বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর নাম উচ্চারণ হয়। একেবারে শিক্ষক গোছের মানুষ ছিলেন তিনি। অনেক কিছু শিখেছি ওঁর কাছ থেকে। কবিও ছিলেন বটে। তবে সবথেকে উল্লেখযোগ্য, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর মতো খুব কম ভাল মানুষ দেখেছি।"
<আরও পড়ুন: ‘বিবাহিত নন! পার্লামেন্টে মিথ্যে শপথবাক্য পাঠ করেছিলেন Nusrat?’, কটাক্ষ BJP নেতা মালব্যর>
প্রয়াত পরিচালককে নিয়ে স্মৃতির সরণীতে হেঁটে গিয়েছেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তও। মনে করলেন তাঁর সঙ্গে 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান'-এ শ্যুটিং করার দিনগুলির কথা। বললেন, "আমার জনপ্রিয়তা দেখে বেজায় বিরক্ত হয়েছিলেন বুদ্ধদেব আঙ্কেল।" নেপথ্যের কারণটা অবশ্য অন্য, ভোররাতে শ্যুটিংয়ের কাজ শেষ করে যখন দিনের আলো ফুটত, তখন সেটের চারদিকে নায়িকা ঋতুপর্ণাকে দেখার জন্য ভীড় উপচে পড়ত। আর এত জনসমাগমে মনসংযোগ নষ্ট হত। আর তাতেই বেজায় বিরক্ত হয়ে বুদ্ধদেববাবু নাকি ঋতুপর্ণাকে বলেছিলেন, "তোমার এত জনপ্রিয়তা আমি জানতাম না। আমার শ্যুটিং করতে বেশ অসুবিধে হচ্ছে।" আসলে স্পষ্টবক্তা ছিলেন। তারকা নিয়ে কোনওদিন মাথা ঘামাননি। সিনেমার গল্প বলাই ছিল তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য।
ঋতুপর্ণা বললেন, "যখন 'উত্তরা' করছেন তখনও আমার ডাক এসেছিল। সে সময় এত অন্য ছবির চাপ ছিল, আমি কোনও ভাবেই সেই ছবিতে কাজ করতে পারলাম না। এই আফসোস আমার সারা জীবন থাকবে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন