লালকেল্লা অভিযানের অভি'নেতা' দীপ সিধুর সঙ্গে মোদি-শাহের ছবি! কৃষক আন্দোলন দমন করার নেপথ্যে বড়সড় ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে কেন্দ্রের বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরগুলি। অভিযোগের তীর বিজেপির দিকে। যে পাঞ্জাবী গায়ক তথা অভিনেতার ভিডিওয় এখন ছয়লাপ সোশ্যাল দুনিয়া, সেই দীপ সিধুই গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি সাংসদ-অভিনেতা সানি দেওলের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন। আর সেখান থেকেই যড়ষন্ত্রের অভিযোগ উঠছে। কৃষকরাও ক্ষুব্ধ, হতবাক দীপ সিধুর (Deep Sidhu) এমন কর্মকাণ্ডে। ভাইরাল ভিডিওয় স্পষ্ট, আন্দোলনকারী কৃষকদের একাংশ অভিনেতাকে রীতিমতো মারধর করার জন্য উদ্যত হয়ে উঠেছেন। তাঁকে নিয়ে দেশজোড়া বিতর্কের মাঝেই, ঠিক এমন পরিস্থিতিতে মুখ খুলতে বাধ্য হলেন দীপ সিধু।
দীপ সিধুকে নিয়ে বিতর্কের জল এতদূর গড়িয়েছে, যে পাঞ্জাবের গুরদাসপুরের সাংসদ তথা অভিনেতা সানি দেওল খোদ তাঁর সঙ্গে রাতারাতি দূরত্ব তৈরি করে নিয়েছেন।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে তাঁর প্রশ্ন, "একজনের পক্ষে কি লক্ষ লক্ষ কৃষককে উত্তেজিত করা সম্ভব? আমি আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম মাত্র। আমরা সরকারি সম্পত্তি নষ্ট না করে দিল্লিতে শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছি। প্রত্যেকের তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার অনুশীলন করার অনুমতি রয়েছে।" তাঁর কথায়, সাধারণ মানুষের অধিকার যখন লঙ্ঘিত হয়, দিনের পর দিন প্রশাসন কাজের নামে ঘোরাতে থাকে, তখন এমন রাগ তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। যার পরিণতি এই আন্দোলন।
একটি ভিডিও পোস্ট করে দীপের মন্তব্য, "লালকেল্লায় যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা ছিল না। যৌথ সিদ্ধান্তেই সেখানে যাওয়া হয়েছে। ভারতীয় পতাকা নামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেটিও ভুয়ো। ওখানে ভারতীয় পতাকার নীচে নিশান সাহিব উড়িয়ে দিয়েছিলেন কৃষকরা। এতে জাতীয় মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়নি।"
দীপ সিধুকে নিয়ে বিতর্কের জল এতদূর গড়িয়েছে, যে পাঞ্জাবের গুরদাসপুরের সাংসদ তথা অভিনেতা সানি দেওল (Sunny Deol) খোদ তাঁর সঙ্গে রাতারাতি দূরত্ব তৈরি করে নিয়েছেন। টুইট করে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, "দেওল পরিবারের কারও সঙ্গেই দীপ সাধুর কোনও সম্পর্ক নেই। নির্বাচনের সময় আমার এজেন্ট ছিলেন ঠিকই, কিন্তু এখন ওঁর নিজস্ব অ্যাজেন্ডা রয়েছে। তাই ওঁর কার্যকলাপ নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যাথা নেই!"
একটা মাত্র 'ভুল' মাসখানেৈকের আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। কৃষক আন্দোলনের সূত্র ধরে এদিনের ট্রাক্টর মিছিল, বিক্ষোভকারী কৃষকের মৃত্যু, লালকেল্লা দখল করে নিশান ওড়ানো, জলকামান-টিয়ার গ্যাস, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ...প্রজাতন্ত্র দিবসে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় দেশের রাজধানী। স্বাভাবিকবশতই সর্বস্তরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, লালকেল্লার মতো ঐতিহাসিক সৌধে প্রতিবাদের নামে 'দখল' নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত? দেশজুড়ে সেই বিতর্ক যখন তুঙ্গে তখন লালকেল্লায় বিদ্রোহীদের 'ঝাণ্ডা ওড়ানো'র অভিযোগের তীর একজন বিজেপি ঘনিষ্ঠ অভিনেতার দিকে। তিনি দীপ সিধু। বিরোধী শিবিরগুলি কিন্তু মোটেই এই বিষয়টিকে ভাল নজরে দেখছেন না!